নিজের শহর নিয়ে কথা বলতে কার না ভালো লাগে ?

বর্ধমান রামনাবাগান ডিয়ার পার্ক  Fb_img27
বর্ধমান রামনাবাগান ডিয়ার পার্ক  Fb_img28

এই রাস্তাটি আমার শহরবাসীর মানে বর্ধমানবাসীর খুবই চেনা । রমনাবাগান ওরফে ডিয়ার পার্ক এর পাশ দিয়ে চলে গিয়ে উঠছে ইউনিভার্সিটির গেটের সামনে । সবথেকে মজার কথা হলো ঐ রাস্তাটির কাছাকাছি তাপমাত্রা শহর এর থেকে ১ডিগ্রী কম থাকে । এর একমাত্র কারন গাছের প্রাচুর্য্য । ইউনিভার্সিটি তে পড়ার সময় প্রায়ই ঢুঁ মারতাম । হরিন , পাখি , ময়ূর , ভালুক,  বাঁদর , কুমীর এদের সাথে সময় কাটাতে । তবে সে সময় ছবির রাস্তাটা লাল মাটির ছিল । আরো সুন্দর লাগতো । ভাগ্য ভালো থাকলে ওই রাস্তা থেকেই দেখা মিলতে পারে বাঁদর এর । লম্বা গাছে এদিক ওদিক করে বেড়ায় । অনেকে এটাকে মিনি জু ও বলে । গোলাপবাগ এর প্রায় কেন্দ্রবিন্দু ঐ রমনাবাগান । তবে বুধবার বন্ধ । বাকি যে কোনদিন আসতেই পারেন মিনি জু এর আনন্দ নিতে । টিকিট মাত্র ১০ টাকার মধ্যেই । পার্কিং আছে ।
এত গেল শুধু রমনাবাগান । উপরি পাওনা হিসেবে , পেয়ে যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস । যা এককালে বর্ধমান রাজার সময় কাটানোর উপযুক্ত স্থান ছিল । ওখানে হাওয়া মহল আপনাকে মানে আপনার হৃদয় কে দোলা দেবেই । বেরিয়ে আপনি ওখানে পেয়ে যাচ্ছেন দিপ্স রেস্তোরাঁ । লান্চ করুন । পাশেই সাইন্স সেন্টার । ঘন্টা খানেক বিজ্ঞান এর জিনিষপত্র নেড়েচেড়ে দেখে নিন । বাচ্ছা দের ভালো লাগবেই । মেঘনাদ সাহা প্লানেটরিইয়াম এ দেখে আসতে পারেন মহাকাশের কারুকার্য্য । এটা এশিয়ার সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি নির্মিত । সুখ্যাত । বিকেলের দিকে কৃষ্ণসায়র পার্ক । সুবৃহৎ ঐ পার্ক আপনার বিকেলের পাচারি কে অন্য মাত্রা এনে দেবে । আরেকটু সময় থাকলে ১০৮ মন্দির । পুজো দিয়ে দিন । চলে যান  রাজবাড়ী , বর্ধমান মহারাজা র হভেলী । যেমন দৃঢ় তার গঠন , তেমন উচ্চ সে প্রাসাদ । বর্তমানে এটি ইউনিভার্সিটির অফিস । বেরিয়ে বি সি  রোড ধরে নাক বরাবর এগিয়ে ডানদিকে রাজঘড়ি পেয়ে যাবেন । আরো খানিক এগিয়ে দুদিকে হাজারো দোকান পাট দেখতে দেখতে হটাৎ দেখতে পাবেন কার্জন গেট আপনাকে ওয়েলকাম করছে । লর্ড কার্জন কে সম্মান জানানোর জন্য এই সুবৃহৎ তোরণ নির্মান করেছিলেন মহারাজ । এর বাংলা নাম বিজয় তোরণ ।
এত শুধু গোলাপবাগ নিয়ে বললাম । আরেকদিন বর্ধমান এর বিশ্বমান নিয়ে গল্প বলব ।
সবশেষে যদি স্টেশন আসেন , পেয়ে যাবেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত রেল সেতু ।
বর্ধমান এক ঐতিহাসিক শহর । এর আনাচে কানাচে শের আফগান উঁকি দেয় । এর রাস্তায় রাস্তায় মেহেরুন্নেসা ঘুঁঘুর এর শব্দ পাওয়া যায় ।
আপনারা আমার শহরে আসুন । আমার শহর আপনাদের খালি হাতে ফেরাবে না ।


#বর্ধমান #burdwan #deer #park