Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.


Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.

Churn : Universal Friendship
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Churn : Universal Friendship Log in

PEACE , LOVE and UNITY


descriptionদল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  Emptyদল বেঁধে দলমা পাহাড়ে

more_horiz
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  20171210
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  Dsc00510
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  Dsc00511
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  20171211

‘চল দলমা যাবি।’ হঠাৎই প্রস্তাব সুব্রতর। নতুন বছর শুরুর চারদিন আগে।

কোথায় যাবি, কীভাবে যাবি, আর কে কে যাবি? আমার হাজারো প্রশ্ন। তার আগে দলমার নাম শুনেছি মাত্র। শুনেছি মানে পড়েছি। খবরের কাগজে প্রতি বছরই তো খবর হয়, দলমার দামালেরা ঢুকে পড়ে বাঁকুড়া, মেদিনীপুরে। হাতি…হাতি!

তবে দলমার হাতি দেখার উত্তেজনার থেকে বেশি চিন্তা হচ্ছিল সুব্রতর শরীরের অবস্থা নিয়ে! প্রায় দেড় বছর হল ওর ডায়ালিসিস চলছে। দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। উপযুক্ত ডোনারের অভাবে প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে না। ছেলেটার মনের জোর দেখে অবাক হয়ে যাই। জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তুই পারবি এই অবস্থায় পাহাড়ে উঠতে?’ আমাকে এক প্রকার তুড়ি মেরে উড়িয়েই দিল। বলল, ‘তুই না গেলে কি আমি যাব না? আর পুরো রাস্তা গাড়িতে যাব হাঁটার কোনও ব্যাপার নেই।’ দীপকদা কথায় কথায় আমাকে গোঁয়ার বলে থাকে। সেই আমিও সুব্রতর কাছে ফেল। এমন প্রাণশক্তির কাছে হেরেও সুখ

৩০ রাতে আমাদের সফর শুরু হল। গাড়িতে উঠেই তো মেজাজ গেল বিগড়ে। সেভেন সিটের গাড়িতে ন’জন। ড্রাইভারকে ধরলে দশজন। কথা ছিল টাটা সুমোয় আমরা মোট আটজন (ড্রাইভারকে ধরে) যাব। জানা গেল, আমাদের ড্রাইভার রাজার টাটাসুমো ব্রেকডাউন করাতেই ছোট গাড়ি আনতে হয়েছ। কী আর করা! যেতে তো হবেই। ফেভিকলের অ্যাডের সেই বিখ্যাত গাড়ির মতো আমরা একে অপরের গায়ের সঙ্গে সেঁটে বসলাম। গেট বন্ধ করতে শিলু মানে আমাদের শিলাদিত্যকে মিন্টুদার কোলে উঠতে হল। ট্রাভেরা নড়ে উঠল শুরু হল যাত্রা।

কিন্তু পথে যে অপেক্ষা করছে বিপত্তি। গাড়ির ভিতরে ঘন হয়ে বসে থাকা যাত্রী। গাড়ির বাইরে ঘন কুয়াশা। এতটাই ঘন যে মাঝে মাঝে এক হাত দূরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। ধীরে, কখনও অতি ধীরে প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা পর ন্যাশন্যাল হাইওয়ে ১১৬ এ উঠলাম। ড্রাইভার চোখ বড় বড় করে রাস্তা দেখছি ।

এতক্ষণে কুয়াশা থেকে মুক্তি। রাত ১.৪৫। কোলাঘাট। খাওয়াদাওয়া সারা হল সেখানেই। কোলাঘাট থেকে গাড়ি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হল একে অপরের পেছনে লাগা। তপনদা অসিতদাকে খোঁচা মেরে বলল, ‘একটু সরে বস না, তুই তো সব জায়গা নিয়ে বসে আছিস।’ আমি কোনওরকমে ঘাড় ঘুরিয়ে ওদের অবস্থানটা দেখলাম। অসিতদার পাশে গৌতমদা উঠে থেকেই আলুর বস্তার মতো লাট খেয়ে পড়ে আছে। আর সাধন সিট থেকে এগিয়ে গেটে সেঁটে বসে আছে। তা সত্ত্বেও অসিতদা সাধনকে বলে চলেছে, ‘সাধন তুই একটু সর না! তোর কেন বেশি জায়গা লাগবে?’ ওদের মধ্যে সাধনই একটু যা রোগা। ওরা থামতেই মিন্টুদা শুরু করল, ‘বাবা শিলা, তোমার কোনও অসুবিধা হলে তুমি আমার দিকে সরে আসবে ইন্দ্রর যেন না কোন কষ্ট হয়।’ পিছন থেকে আওয়াজ এল, ‘বাবা শিলা নাকি মা শিলা?’ মিন্টুদার পাশে দুলালদা। সুব্রত সামনে। বেলদা, খড়্গপুর, ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে আমরা ঝাড়খণ্ডে ঢুকলাম।

এখান থেকে শুরু হল ডাইভারশন। পুরনো রাস্তা ভেঙে নতুন ওয়ান ওয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। গাড়ি তো চলল হেলতে দুলতে। মাঝে বেশকয়েক জায়গায় থামতে হল বেঁকে যাওয়া কলকব্জা সোজা করার জন্য। ঘাটশিলা, জামশেদপুর পেরিয়ে দলমা যখন পৌঁছলাম তখন বাজে সাড়ে ৭টা। নেমেই বড় ধাক্কা আমাদের অনভ্যস্ত চোখে। দেখলাম, এক জায়গায় ছাগল কাটা হচ্ছে। সবাই তো যারপরনাই আনন্দে, মাংস নেওয়া হবে। কিন্তু কাছে গিয়ে মাংস কাটা দেখে সকলেরই খাওয়ার ইচ্ছেটা উবে গেল। এখানে ছাগল কাটার পদ্ধতিটাই আলাদা। হাওড়া-কলকাতায় ছাগলের ছাল ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। তারপর মাংস বিক্রি হয়। এখানে ছাল ছাড়ানোর কোনও বালাই নেই। শুধু গলাটা কাটা হয়েছে। ছাল থেকে শুধু লোম চেঁছে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা যে ভাবে সেলুনে দাড়ি কাটি সেই ভাবে। এমন কী রক্তটা একটা বাটিতে ধরে রাখা আছে। শুনলাম, জমাট বেঁধে গেলে ওটাও বিক্রি হবে।

আসার সময় লক্ষ্য করেছি, জায়গাটা পুরো আদিবাসী অধ্যুষিত। খুবই গরিব এলাকা। সুব্রত বলল, ‘কী করবে এরা? এতই গরিব যে মাংসের কিছুই ফেলে না।’ আমার মনে পড়ছিল ডিসকভারি চ্যানেলে দেখা আফ্রিকার মরুভূমিতে বসবাসকারী বুশম্যানদের জীবন। একটা হরিণ শিকার করলে তার কিছুই ফেলে না ওরা। রক্ত গায়ে মাখে। খায়। বাদ দেওয়াটা যে বিলাসিতা সেটা চোখের সামনে দেখতে পেলাম।

কিন্তু আমাদের মাংস খাওয়ার কী হবে? আমাদের মঙ্গলবারের আড্ডায় ফিস্ট করে মুরগির ছাঁট খেয়েছি। ছাল-নাড়িভুঁড়ি, পা, সব। কিন্তু ছাল সমেত ছাগলের মাংসে একটু চাপ লাগছিল। স্থানীয় একজনের কথায় জানতে পারলাম, সামনেই একটা বাজার আছে। প্রত্যেক রবিবার দুপুর ২টো থেকে ওখানে হাট বসে। কিন্তু হাটে গিয়েও বিশেষ লাভ হল না। ১২টার আগে মুরগি কাটা হবে না। শুধু ডিম কেনা যেতে পারে। ডিমই সই।…

দলমা পাহাড় ৩০৬০ ফুট উচ্চতার। পাহাড়ে যাওয়ার পথে একটা গেট তৈরি হচ্ছে। দলমার শুরু সেখান থেকেই। পাহাড় চুড়ো পর্যন্ত মোট উনিশ কিলোমিটার রাস্তা। রাস্তা কিছু জায়গায় ঢালাই হচ্ছে। কিছু জায়গায় পাহাড়ের নুড়ি-পাথর ফেলা। চললে মোরামের মতো অনুভূতি। হাতি, চিতাবাঘ, হরিণ ছাড়াও বেশ কিছু প্রাণী রয়েছে এই পাহাড়ের জঙ্গলে। ভীষণ নির্জন। পর্যটকদের খুব একটা ভিড় হয় না। এঁকেবেঁকে উঠে গেছে পাহাড়ি রাস্তা। চারিদিক ঘন গাছগাছালিতে ভর্তি। অসম্ভব শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। লোকালয় ছাড়িয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন পাখির আওয়াজ ছাড়া কিছুই শোনা যায় না। আমরা চেক পোস্টে ১৫০ টাকা দিয়ে পাস নিয়ে এগিয়ে চললাম।
যত উপরে উঠছি জঙ্গল ততই ঘন হচ্ছে। ঘন গাছপালার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো উঁকিঝুঁকি দিয়ে প্রবেশ করছে। ঘন জঙ্গলে কিছুটা উঠেছি হঠাৎ দেখি, একটি হরিণ নাচতে নাচতে বেরিয়ে যাচ্ছে। নিমেষের মধ্যে উধাও। ক্যামেরা বের করা তো দূরের কথা। চোখের পলক ফেলার আগে অদৃশ্য। সঙ্গে সঙ্গে হুড়মুড়িয়ে নেমে পড়লাম। যদি বাকি দলটা দেখা যায়। কিন্তু কোনও চিহ্ন নেই। ওই ব্যাটা বোধহয় লেট লতিফ ছিল।

মনোরম প্রকৃতি উপভোগ করতে করতে আমরা পাহাড়ের মাথায় পৌঁছলাম। রান্না চাপানো হল। সবচেয়ে অবাক হলাম, এত উঁচুতেও জলের পাতকুয়ো দেখে। কী সুস্বাদু জল। খাওয়াদাওয়ার পালা শেষ করে বিকেল ৪টের মধ্যেই আমরা ওখান থেকে রওনা দিলাম। যদিও দলমায় রাত কাটানোর পরিকল্পনা করেই গিয়েছিলাম। কিন্তু জায়গা মেলেনি। বন বিভাগের দু’টো বাংলো আছে। কিন্তু সেগুলো রাঁচির ডিএফও অফিস থেকে বুক করতে হয়। স্পষ্ট বুকিং হয় না।


ফেরার সময় দেখলাম, সাঁওতাল রমণীরা কাঠের বোঝা নিয়ে ফিরছে। নামার সময় কয়েক জায়গায় থামতে হল। এতই মনোরম দেখাচ্ছিল উপর থেকে নীচে এবং আশেপাশের ঘন সবুজ ঘেরা পাহাড়। বড় রাস্তায় নামতে দেখি, ময়ূর চড়ে বেড়াচ্ছে। ভাবলাম, জঙ্গলের ময়ূর। কিন্তু হঠাৎ দেখি, সে হাঁটা লাগাল। গিয়ে দাঁড়াল মালকিনের কাছে। ময়ূর নয়, আসলে সেটা ময়ূরী। তার আগে অবশ্য বেশ কিছু হরিণ দর্শন হয়ে গিয়েছে। তবে সবই হরিণ প্রজনন কেন্দ্রের। ঘেরাটোপের হরিণ। ডাকলে হাতের নাগালে এসে আদর খেয়ে যায়।
হরিণ প্রজনন কেন্দ্র।

ফটোসেশন চালাতে চালাতে চললাম আদিবাসীদের হাট দেখতে।

#Jharkhand #dalma #rock #mountain #jungle #pahar #waterfall #hat #adibasi #deer #park #santal #KOLKATA #elephant
#ঝাড়খন্ড #দলমা #পাহাড় #জঙ্গল #জলপ্রপাত #হাট #আদিবাসী #সাঁওতাল #হরিণ #পার্ক #কলকাতা # #hati #হাতি

descriptionদল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  EmptyRe: দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে

more_horiz


দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে — বুরুডি


দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  26815410

হাটে ঢুকে তো সকলেই অবাক! এটা হাট?

আলু, পিঁয়াজ থেকে শুরু করে মনোহারি দ্রব্য, শাড়ি চুড়িদার থেকে শীতের পোশাক, জুতো পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। মাছ, মাংস তো ছিলই। হাটে আসা মানুষজন দেখেই মালুম হচ্ছিল তাঁদের ক্রয় ক্ষমতার কথা। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জিনিস পত্রও সবই সস্তা।

তবে চাকচিক্যের বড়ই অভাব। শহুরে লোকেরা হত দরিদ্রের ছাপই খুঁজে পাবেন। এক জায়গায় দেখলাম মহুয়া আর হাঁড়িয়া বিক্রি হচ্ছে। মহিলা, পুরুষ গোল হয়ে তার চারপাশে বসে। এরা যে কত অল্পে বেঁচে থাকে বা বলা ভাল বেঁচে আছে সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছিল। আমি তো একজনও রমণী কে দেখলাম না যাকে নিয়ে কাব্যি করা যায়। লেখক-কবিরা কোথা থেকে যে পান সাঁওতাল রমণীর কমনীয় রূপ! আমরা যখন দুমকা থেকে রামপুরহাট ফিরছিলাম তখন সারসডাঙ্গালের হাট দেখে ছিলাম। সেখানেও একই চিত্র। কোনওভাবেই মেলাতে পারছিলাম না আমার দেখা ছোট বেলার হাটের সঙ্গে।


আমি পেঁড়োর হাটের কথা বলছি। হাওড়া জেলায়। এখানেই কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের বাড়ি। ছোটবেলায় দাদুর সঙ্গে যেতাম। নিজেদের কয়েক বিঘে জমিতে চাষ তো হতোই, সেই সঙ্গে ভাগের কয়েক বিঘে জমিতে চাষ করতেন। আলু, কপি লাউ, কুমড়ো বিভিন্ন শাক ছাড়াও তরমুজের চাষ হতো। দাদু বড় চাষি। আশেপাশের ১২-১৩টা গ্রামের মোড়লও ছিলেন। আমি ৮৫-৮৮ সালের কথা বলছি। ৬৮ বছর বয়েসেও অনায়াসে একমনি বোঝা নিয়ে দেড় দু’কিলোমিটার হেঁটে হাটে আসতেন। মঙ্গল, শুক্র আর রবিবার হাট বসত। হাটকে আমার রঙিন জগত মনে হত। সবুজ সাদা বেগুনি লাল যত রকমের ফসল তত রকমের রং। আর ছিল আশেপাশের গ্রামের পুকুরের পেল্লাই সাইজের সব রুই, কাতলা মৃগেল মাছ। ভোর ৫টা থেকেই বিকিকিনি শুরু হয়ে যেত। চাষিরা আসত আরও ভোরে। আমি মনের আনন্দে এক প্রান্ত থেকে আর একপ্রান্তে ঘুরে বেড়াতাম। হারিয়ে যাওয়ার কোনও ভয়ই ছিল না। দাদুর নাম বললেই হল। পৌঁছে দেবে। সেই হাটের জৌলুসের কাছে এই হাট তেমন কিছু মনে হল না। রাজধানীর কাছাকাছি হাওড়া জেলা। কাছাকাছি জেলার রূপে যে খোলতাই সে ঔজ্জ্বল্য দেখা যায় না প্রান্তিক জেলাগুলোতে। হাটের ক্ষেত্রেও কি তাই? পেঁড়োর সেই হাটের এখন রূবদল ঘটেছে। হাট বাজারে বদলেছে।

আমরা হাট দেখা শেষ করে গাড়িতে লোড হলাম। ঘাটশিলার উদ্দেশে। পরেরদিন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম বুরুডি ড্যামে। আজ সারাদিন ওখানেই থাকব এবং ফিস্ট করব।। পথ যত এগোতে থাকল আশেপাশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। একজায়গায় তো সবাই গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম শালুক ফুলে ভর্তি পুকুর দেখে। সুব্রত তো জলেই নেমে পড়ল ফুল তুলতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর গল্প গুজবে এতই মশগুল ছিলাম যে কারওই মনে ছিল না আমাদের সঙ্গে কোনও রসদ নেই।


তখন প্রায় আট কিলোমিটার চলে গেছি। আদিবাসী গ্রাম শুরু হয়ে গেছে। তখন রাজাই বলল, ‘আজ যে রান্না হবে আমরা যে কিছুই নিইনি। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেল বাজার করতে হলে আমাদের আবার ঘাটশিলা যেতে হবে। আশেপাশের গ্রামে চেষ্টা করলাম যদি দেশি মুরগি পাওয়া যায়। কিন্তু কেউই বিক্রি করতে রাজি হল না। গরু ছাগল মুরগি এদের কাছে সম্পদের চেয়ে কিছু কম নয় মনে হল। বাজারে মাংস নেব শুনেই তো দুলালদা আর শিলা বলে দিল আমাদের জন্য অন্য কিছু নিও। সেই ছাল-সহ মাংসের ভয়। না, এখানে ছাল ছাড়ানো মাংসই পেয়েছিলাম। আরও প্রায় এক দেড় ঘণ্টা পর বাজার করে ড্যাম পৌঁছলাম।

দূর থেকেই ড্যামের আশেপাশের সৌন্দর্য মালুম হচ্ছিল। যত এগোচ্ছি ততই সবুজ গাছগাছালিতে মোড়া সুউচ্চ পাহাড়ের রূপ ছিল দেখার মতোই। একেকটা বাঁক পেরোচ্ছি আর মনে হচ্ছে কোন জাদুকর তার জাদুর ঝাঁপি থেকে রংবেরঙয়ের ফুলের তোড়া আমাদের সামনে মেলে ধরছে। পৌঁছেই তো রাজা মানে আমাদের ড্রাইভার কাম কুককে রান্নার ব্যবস্থা করে দিলাম। বাকিটা রাজা সামলে নেবে। ও একাই একশ এই ব্যাপারে। আগের দিন রাত্রেই বলে দিয়েছিল, এখানে রান্না ওই করবে।

রাজা রান্নার ব্যবস্থা করল। আমরা ড্যামের দিকে গেলাম। চারপাশটাই সবুজ পাহাড়ে ঘেরা একটা ছোট্ট লেক। রোদের তারতম্যে নীল থেকে ঘন নীল আবার কখনও সবুজ হয়ে যাচ্ছে। অপূর্ব সে দৃশ্য। বিদেশে হলে বিখ্যাত হয়ে যেত। ভারতে বলেই এই রকম অনাদরে পড়ে আছে। পর্যটকদের মানসিকতাও বেশ ‘সুন্দর’। খাওয়াদাওয়া, হাবিজাবি সব এখানেই ফেলে গিয়েছে। বিকাল ৪টের পর থেকেই ঠান্ডা বাড়তে শুরু করেছে সেটা বোঝা যাচ্ছিল।

তার কিছু পর থেকেই অবশ্য ওখানকার স্বেচ্ছাসেবকেরা ঘোষণা করছিল, পর্যটকরা যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে রওনা দেন। সন্ধে নামার সঙ্গেই এখানে ঠান্ডার প্রকোপ প্রচণ্ড বেড়ে যাবে। ঠান্ডা একটা কারণ তো ছিলই, এবং সেটা বেশ মালুমও হচ্ছিল। এই ঘোষণার আসল কারণ অবশ্য আমাদের আগেই জানা হয়ে গিয়েছিল। আমাদের বাড়তি খাবার স্থানীয় কয়েকজন মহিলাকে দিয়েছিলাম। তারাই বলেছিল “বাবু সন্ধের আগেই এখান থেকে চলে যাবেন। খুব চুরি ছিনতাই হয়। ৫টার কিছু পরেই আমরা গাড়ি ছাড়লাম। তখন একদিকে সূর্য তো ছিলই আর এক দিকে চাঁদ দেখা দিয়েছে।

ঝাড়গ্রামের আগে ফেকোঘাট ব্রিজ ডুলুং নদীর উপর। ব্রিজে উঠতেই সামনের চাকা গেল ফুস হয়ে। সবাই নেমে পড়লাম। নেমেই সকলে দোষারোপ করতে শুরু করল আমাকে। দোষের মধ্যে আমি যে সামনে বসেছিলাম! যেদিকে বসেছিলাম সেদিকের চাকাটাই পাংচার হয়েছে। সুব্রত বলল, ‘তোকে তখনই বলেছিলাম বেশি মাংস খাস না। হল তো! তোর আর কত ওজন নেবে বেচারা চাকাটা।’ আমাদের ‘যথা ইচ্ছা তথা যা’ গ্রুপের সাপ্তাহিক মঙ্গলবারের আড্ডায় যদি চারদিন ফিস্ট হয় তো সাড়ে তিনদিনই মাংস থাকে। মাংস দেখলে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তা বলে চাকা ফেটে যাবে!
অপরূপ বুরুডি।

চাকা পাল্টে আবার রওনা দিলাম। রাত ৩টের সময় যখন বাড়ি ঢুকলাম তখনও বুরুডি ড্যামের স্মৃতি স্পষ্ট।

(সমাপ্ত)

descriptionদল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  EmptyRe: দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে

more_horiz
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  20180110
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  Dsc00610
দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  20180111

descriptionদল বেঁধে দলমা পাহাড়ে  EmptyRe: দল বেঁধে দলমা পাহাড়ে

more_horiz
privacy_tip Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum
power_settings_newLogin to reply