Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.


Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.

Churn : Universal Friendship
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Churn : Universal Friendship Log in

PEACE , LOVE and UNITY


descriptionসাদা পাহাড় দেখব  Emptyসাদা পাহাড় দেখব

more_horiz


এই পথ যদি না শেষ হয় ......
ছোটবেলা থেকে পাহাড় অনেক দেখেছি । আমার মামাবাড়ী যেতে গেলে পাহাড় পেরোতে হয় । কলেজের শিক্ষামূলক ভ্রমণে হিমাচল ঘুরেছি । বিয়ের পর গত এপ্রিলে উত্তরবঙ্গের একটা অংশ ঘুরলাম । এছাড়া দক্ষিণ ভারতের অন্যতম দুই হিল স্টেশন অনন্তগিরি আর শ্রীশৈলমও ঘোরা । পাহাড় এর দুটো রং আমার চেনা । কাছে এলে সবুজ আর ভোরের নরম আলোয় দূর থেকে নীলাভ । তাই এবার কর্তামশাইকে বলেই রেখেছিলাম সাদা পাহাড় দেখাতে হবে আমায় । গন্তব্য এ দেশের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য সিকিম । সময়টা নভেম্বরের শেষাশেষি । তাই কিঞ্চিত চিন্তিত ছিলাম আদৌ সাদা পাহাড় দেখতে পাবো কিনা । ফেবুর গ্রুপে অনেকের কাছে ইতিবাচক উত্তর শুনে আশায় বুক বাঁধলাম । এন জি পি থেকে হোটেলের ঠিক করা গাড়ীতে চড়ে বসলাম । আগেরবার বাসে এসেছিলাম আর এবার ট্রেনে । প্রথমবার এদিকে এলাম তাই চারিদিকে চেয়ে চেয়ে সব দেখতে লাগলাম । যদিও মা এর মুখে শুনে শুনে অনেক কিছুই আমার চেনা । গাড়ী আরো এগিয়ে শিলিগুড়ি শহরে ঢুকতেই আমার পরিচিত এলাকার শুরু হল । বেঙ্গল সাফারী এর পাশ দিয়ে পিচঢালা মাখনের মত মসৃণ রাস্তা দিয়ে যাবার সময় সোয়েটারটা আলতো করে কানের পাশে জড়িয়ে নিলাম । পাহাড়িয়া সুর আপনা থেকেই মনের ভিতর বেজে উঠল সেই ঠান্ডার সাথে সঙ্গত করতে । শহর ছাড়িয়ে পেট্রোল পাম্প এর জায়গাটার জন্য জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে রইলাম । ওখান থেকেই যে পাহাড়গুলো আমায় হাতছানি দেয় । পান্না রঙা তিস্তা সুন্দরী আমদের সঙ্গ দেয়া শুরু করেছে । সারা পথ সে আমার পাশে পাশেই ছিল অবশ্য । জিরো অবধি । জ্ঞান হওয়া ইস্তক মা এর কাছে তার কলেজ জীবনের সময়কার সেবক ব্রিজ এর গল্প শুনে মুখস্থ হয়ে গেছে । কিন্তু সত্যিই আমার ধারণার বাইরে ছিল জায়গাটার সৌন্দর্য্য । তিস্তা আর সেবক আমার জীবনে লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট । সেই গোপন প্রেমিকার সাথে দ্বিতীয়বার দেখা হবার জন্য আমি উদগ্রীব । দেখা হল , তবে প্রথমবারের মত সোহাগ করার সুযোগ আর পেলাম কই । চোখের দৃষ্টি দিয়েই স্পর্শসুখ মেটাতে হল । গাড়ী যে এগিয়ে চলল । কিছুটা কষ্ট মিটলো তিস্তা ব্রিজে দাড়িয়ে । তবে প্রেমিকা প্রেমিকাই , বৌ কি আর সেই জায়গা নিতে পারে কখনও ? এরপর ঠান্ডা হাওয়ায় সবুজ নেশা ধরা চোখে ঘুম জড়িয়ে আসে । আমি প্রাণপণে চেষ্টা চালাই দুচোখ খুলে রাখবার । ঘুম আবারও আসবে কিন্তু এই জায়গা আর সময়টা তো ফিরবে না । তিস্তা যে তার রূপের মোহে আমায় আচ্ছন্ন করে রাখে । ও চোখের আড়ালে গেলে আমি যে বড্ড কষ্ট পাই । বেশ কয়েকঘণ্টা পর গাড়ী থামল তারখোলাতে । এমন সুস্বাদু মোমো আমি আর খাইনি । এরপর গাড়ী শহরে ঢুকতে শুরু করল । রাস্তার পাশে হাল্কা গোলাপী রং এর ফুল গুলো দেখে আমি আনন্দে চিৎকার করে উঠলাম । চেরী ফুল যে দেখতে পাবো সেটা আমি ভাবতেই পারিনি । হোটেলে এসে পৌঁছালাম । এর পরের দিনগুলো কেটে গেল সিকিমের সব জায়গা ঘুরতে ঘুরতে । স্থানগুলির বর্ণনা দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয় । অনেকেরই এই জায়গাগুলো ঘোরা । আমি শুধু পথের গল্প করব । ৯০ শতাংশ ভ্রমণ গাড়ীতেই হয়ে যায় কিনা । ছাঙ্গু আর বাবা মন্দির যাবার পথে পাহাড়ের আরেক রং দেখলাম । ধূসর লালচে রং এর পাহাড় । দূর থেকে পথের দুধারে বানানো পাথরের গার্ড দেখে আমি কিছুক্ষণের জন্য বিভ্রান্ত হলাম । এখানে চীনের প্রাচীর এল কোথা থেকে । একফোঁটা বাড়িয়ে বলছি না । যে কারুর ভ্রম হতে বাধ্য । গ্যাংটক থেকে উত্তর সিকিম যাবার সময় থেকে শুরু হল ঝরণা দেখা । আমি এর আগে একটাও ঝরণা দেখিনি । সে শখ পূরণ তো হলই , পরে এমন অবস্থা হল যে প্রায় পঞ্চাশের উপর ঝরণা দেখে চোখ পচে গেল । বাঙাল ভাষায় যাকে বলে কিনা 'ভ্যাটা ভ্যাটা' হয়ে যাওয়া । সৌম্য মাঝে মাঝেই চেঁচিয়ে উঠত আমার থেকে শেখা নতুন শব্দটি শুনে , ঐ দেখো ভ্যাটা ভ্যাটা ওয়াটার ফলস । গুরুদোংমার লেকে যাবার সময় ভোর চারটেয় গাড়ীতে উঠে একটু যেতেই চমকে উঠলাম , পথ কই ? এবড়ো খেবড়ো ছোট বড় পাথরের উপর দিয়ে গাড়ী লাফিয়ে লাফিয়ে চলেছে । ফেরার সময় দিনের আলোয় বুঝেছিলাম সে পথ কী ভয়ঙ্কর । ভোরবেলা এই পথেই গাড়ীর জানলা দিয়ে আমার শ্বশুর খেয়াল করল বরফঢাকা পাহাড়চূড়া । থাঙ্গুর রাস্তায় দাড়িয়ে সূর্যদয় দেখলাম । আর পায়ের নীচে পথের উপর বরফও । পথের পাশের টয়লেটের বালতির জল তখন চাঙ্গড় । আরো এগোতেই পাহাড় গুলো কেমন যেন কালো বর্ণ ধারণ করল । জানতে পারলাম জায়গার নাম কালাপাথর । ফেরার সময় এই পথেই অবশ্য শ্বেতশুভ্র শৃঙ্গ দর্শন , বরফ খেলা হল । কালাপাথড় থেকে আরো এগোতেই পাহাড় এবার ধূসর । চারিদিকে সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই । পথের পাশের ঝরণার জল নামতে নামতে ঠান্ডায় জমে বরফ হয়ে ঝুলছে । বেশ কয়েকঘণ্টা পর মিলিটারী এলাকায় এসে পিচ ঢালা মসৃণ রাস্তা শুরু হল । দুপাশে হলুদ বা ধূসর পাহাড় আর পথের বাঁকে সাদা শৃঙ্গ । বুনো চমরী গাই এর দল গাড়ীর সামনে দিয়ে হুড়মুড়িয়ে পার হল । সিকিমের পথেই যে লাদাখ দর্শন হবে সেটাও ভাবিনি । গুরুদোংমার লেক দেখে পরদিন বেরোলাম ইয়ুমথাং ভ্যালীর পথে । এ পথ আরো সুন্দর । ভয়ঙ্কর সুন্দর । আঁতকে উঠলাম , গাড়ী যাবার পথ বন্ধ । ধ্বস নেমে রাস্তা শেষ । ভগবান আর ড্রাইভার জীবন দাজুই জানেন প্রাণ হাতে অত বড় বড় পাথরের উপর দিয়ে গাড়ী কীভাবে পার হল । মেঘ মেখে পাথর আর পাহাড় মিলে মিশে এক অদ্ভূত মায়াবী জগৎ বানিয়ে রেখেছে । মনে হচ্ছিল কৈলাশ । আর এখনি শিব ঠাকুর বাঘছাল গায়ে ত্রিশূল হাতে সামনে এসে উপস্থিত হবেন । হলেও আশ্চর্য্যজনক কিছু ছিল না । এমন অদ্ভূত পাহাড় আর মেঘের মায়াজাল । কিছুটা এগিয়ে পথ পুরো মেঘে ঢাকা , কী ব্যাপার ? না বরফ পরে পুরো সিম্বা গাছের স্যানচুয়ারী কে সবুজের উপর সাদার প্রলেপ দিয়েছে । গাড়ী থামিয়ে জোর করেই রাস্তায় নেমে পড়লাম । পথের পাশে সাদাবরফ কুচি । বেশ খানিকটা এগিয়ে দেখলাম নাম না জানা পাহাড়ী ফুল ফুটে পাহাড় , রাস্তা লাল করে রেখেছে । মেলায় দেখেছি কাগজ আর কাঠ দিয়ে সুন্দর করে এই ফুল বানিয়ে বিক্রি করতে । তখন ভেবেছিলাম এ বুঝি শিল্পীর কল্পনা । পাহাড়ে দেখে বুঝলাম এটা আসলে সর্বশক্তিমানের সৃষ্টি । ভাগ্য আমার অতি সুপ্রসন্ন । গাড়ী খারাপ হল এখানেই । বরফ পাহাড় , সবুজ পাহাড় , লাল পাহাড় , ধূসর পাহাড় সব মিলে মিশে লীন । শুনেছিলাম বিদেশের মতই নাকি এ পথ সুন্দর । আমার মতে বিদেশকেও হার মানায় এর সৌন্দর্য্য । ইয়ুমথাং ভ্যালীতে বরফ পরে আছে দেখলাম । জিরো থেকে ফেরবার পথে দেখলাম একটি দল বাইক নিয়ে আসছে । অসমান ভাঙ্গা খাড়াই রাস্তা ধরে যখন ঐ দলের সাথে দুটি মেয়ে বাইক নিয়ে এল তখন বেশ গর্ব বোধ করলাম । পেলিং এর রাস্তাটি আবার সম্পূর্ণ আলাদা । পুরো পথ ছায়া সুনিবিড় । ভীষণ শান্ত , সবুজে মোড়া । ভূত পেত্নীর বেশ উপদ্রব আছে । আমাদের ড্রাইভার নাগেশ্বর ভাই অন্ধকার রাতে পেলিং ঢোকার সময় তার ভূত এর ভয় পাবার অভিজ্ঞতা জানালেন । পেলিং এর পথের মধ্যে সিংশোর ব্রিজটির উপর দিয়ে হাঁটতে বেশ ভয় করছিল আমার । যদি ভেঙ্গে পরে । এক নববিবাহিত দম্পতি তো আবার রেস শুরু করেছিল । খেচুপেরি লেকে যাবার পথটি তো খুব শান্ত । পাখির শিস ছাড়া আর কোনো আওয়াজ নেই । পথের পাশের বিশালাকৃতির ধূপদানির ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে ভগবান বুদ্ধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে । কাঠের পাটাতনের পথ পেরিয়ে লেকের পাশে প্রবেশ করলাম । পেলিং এর রাবডানসি প্রাসাদে যাবার রাস্তাটিতে ট্রেক করবার মজাই আলাদা । মাঝে মাঝে ভয় হচ্ছিল কোনো জন্তু না বেরিয়ে আসে । বেশ ঘন জঙ্গল আর ভীষণ নির্জন । বেলাশেষের পড়ন্ত আলোয় ছমছমে লাগে পুরো পথটা । অবশ্য উপরে উঠে বহু মানুষের দেখা পেয়েছিলাম । ছেলে ছোকরার দল প্রেম করতে এসেছে ।

ছবিগুলো বেশীরভাগই চলন্ত গাড়ী থেকে তোলা । ফটো তোলবার জন্য ড্রাইভার খুব কমই দাড়িয়েছে । পথের রূপে ভুলে গিয়ে আমিই গাড়ীর কাঁচ নামিয়ে ঠান্ডা কনকনে বাতাস উপেক্ষা করে শরীর অর্ধেক বের করে জানলা দিয়ে ফটোগুলো তুলেছি । আবার গাড়ী থেকে নেমেছি আর গাড়ী আমায় ভয় দেখাবার জন্য ছেড়ে গিয়ে কিছুটা দূরে চলে গেছে । শ্বশুর শাশুড়ী বর এর কাছে অনেক বকা খেয়েছি ফটো গুলো তুলতে গিয়ে । এখন কিন্তু কলকাতায় বসে প্রাণটা জুড়ায় আমার কষ্টের ফলগুলোকে মুঠোফোনের মধ্যে দেখে ।

descriptionসাদা পাহাড় দেখব  EmptyRe: সাদা পাহাড় দেখব

more_horiz
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im127
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im128
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im129
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im130
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im131

descriptionসাদা পাহাড় দেখব  EmptyRe: সাদা পাহাড় দেখব

more_horiz
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im132
সাদা পাহাড় দেখব  Fb_im133

descriptionসাদা পাহাড় দেখব  EmptyRe: সাদা পাহাড় দেখব

more_horiz
#সিকিম #chhangu #ছাঙ্গু #sikkim #peling #পেলিং #waterfall #জলপ্রপাত #hill পাহাড় #পর্বত #বরফ #হিমালয়
#mountain #Himalaya #ice #Cheri #momo #rhododendron #মোমো

descriptionসাদা পাহাড় দেখব  EmptyRe: সাদা পাহাড় দেখব

more_horiz
privacy_tip Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum
power_settings_newLogin to reply