ইন্দ্রদ্যুম্ন নামে সূর্যবংশীয় এক পরম বিষ্ণুভক্ত রাজা মালবদেশের অবন্তী-নগরে রাজত্ব করতেন। সরাসরি আগত বংশ পরম্পরায় ইন্দ্রদ্যুম্ন ছিলেন ব্রহ্মার পঁচিশতম পুত্র। তিনি শ্রীভগবানের সাক্ষাৎকার লাভ করার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়েছিলেন। একদিন ভগবান্ কর্তৃক প্রেরিত একজন ভগবৎ ভক্ত তাঁর রাজসভায় উপস্থিত হয়ে কথাপ্রসঙ্গে নীলমাধবের কথা রাজাকে অবহিত করলেন। রাজা এই সংবাদ পেয়ে আনন্দিত হয়ে তাঁর রাজ্যের বিভিন্ন ব্রাহ্মণকে নীলমাধবের অনুসন্ধানে বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করলেন। কিন্তু একমাত্র রাজপুরোহিত বিদ্যানিধি বাদে আর সকলেই নিরাশ হয়ে রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলেন। বিদ্যাপতি বহুস্থান ভ্রমণ করতে করতে পরিশেষে ‘শবর’ নামক এক অনার্য পল্লীতে উপস্থিত হয়ে ‘বিশ্বাবসু’ নামক এক শবরের গৃহে আশ্রয় নিতে আসেন, কিন্তু, ঐসময় গৃহে গৃহস্বামী অনুপস্থিত থাকায় তাঁর কুমারী কন্যা ললিতা তাঁকে আশ্রয় দিতে ইতঃস্তত করছিল। কিছুক্ষণ পরে তাঁর পিতা গৃহে প্রত্যাবর্তন করলেন। বিশ্বাবসু আগুন্তুকের পরিচয় জানতে চাইলে বিদ্যাপতি বললেন, “আমি মালবরাজ ইন্দ্রদ্যুম্নের রাজ পুরোহিত বিদ্যাপতি। রাজার এক মহান আদেশ পালনের জন্য আমি এখানে এসেছি। রাজা উপবাস করছেন, আমি আমার আরব্ধ কাজ সম্পন্ন করে রাজদরবারে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর উপবাস অব্যাহত রাখবেন।” বিশ্বাবসু বিদ্যাপতির পরিচয় জেনে এবং তাঁর অকত্রিম রাজভক্তি দেখে সন্তুষ্ট হয়ে নিজ কন্যাকে কন্যাকে ব্রাহ্মণসেবা করতে আদেশ করলেন। ব্রাহ্মণ বিদ্যাপতি ললিতার সেবা-যত্নে পরম সন্তুষ্টি লাভ করেন। পরে শবরের বিশেষ অনুরোধে বিদ্যাপতি বিশ্বাবসুর কন্যার পাণিগ্রহণ করে সেখানে বসবাস করতে থাকেন।
বিদ্যাপতি একদিন দেখতে পেলেন যে তাঁর শ্বশুড় প্রত্যহ রাত্রিতে কোথায় যেন বেরিয়ে যান এবং পরদিবস গৃহে ফিরে আসেন। গৃহে ফিরে এলে তাঁর দেহ হতে দিব্য চন্দনাদির গন্ধ পাওয়া যেত। বিদ্যাপতি তাঁর পত্নী ললিতার কাছে এর কারণ জানতে চাইলে, তিনি স্বামীকে জানান যে তাঁর পিতা প্রতি রাত্রে নীলমাধবের পূজা করতে গভীর অরণ্যে গমন করেন।
এতদিন পরে নীলমাধবের সন্ধান পেয়ে বিদ্যাপতির আনন্দ আর ধরে না। তিনি নীলমাধবকে দর্শন করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। কন্যার প্রার্থনায় বিশ্বাবসু বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের সন্নিধানে নিয়ে যেতে সম্মত হলেন। কিন্তু নীলমাধবের মন্দিরের খোঁজ যাতে সে সহজে না করতে পারে সেইজন্য তাঁর চোখ বেঁধে বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের কাছে নিয়ে গেলেন। ললিতা কৌশলে স্বামীর বস্ত্রাঞ্চলে কিছু সর্ষপ বীজ বেঁধে দিয়েছিলেন যেগুলো তিনি তাঁর যাত্রাপথে নিক্ষেপ করে চললেন যাতে পরবর্তীতে ওগুলোর চারা গজালে অতি সহজেই ঐ অজানা গুপ্ত স্থানে পৌঁছার উপায় হয়। নীলমাধবের সন্নিকটে পৌঁছালে শবর বিদ্যাপতির চক্ষুর বন্ধন উন্মোচন করে দিলেন। বিদ্যাপতি নীলমাধবের অপূর্ব সুন্দর মূর্তি দর্শন করে আনন্দে পুলকিত হয়ে নৃত্য ও স্তব করতে লাগলেন। শবর নীলমাধবের কাছে বিদ্যাপতিকে রেখে পূজার উপকরণ সংগ্রহ করার জন্য গভীর বনমধ্যে গমন করলেন। এমন সময় বিদ্যাপতি লক্ষ্য করলেন, বৃক্ষ ডালে বসা একটি ঘুমন্ত কাক নিকটস্থ একটি কুণ্ডে পতিত হওয়ামাত্র প্রাণত্যাগ করে চতুর্ভুজমূর্তি ধারণ করে সারূপ্যমুক্তি লাভ করে বৈকুণ্ঠের উদ্দেশ্যে ঊর্ধ্বে গমন করল। এই দৃশ্য অবলোকন করে বিদ্যাপতিও ঐ কুণ্ডে পতিত হয়ে প্রাণ বিসর্জন দিতে তৈরী হলেন। এই সময় হঠাৎ দৈববাণী হল,- “হে ব্রাহ্মণ! তুমি তোমার নীলমাধবের দর্শনের কথা আগে রাজাকে না জানিয়ে তো মুক্তি পেতে পার না। কাজেই তুমি রাজার কাছে গিয়ে নীলমাধবের সংবাদ প্রদান করে তাঁর উপবাস ভঙ্গ কর।”
এদিকে শবর পূজা-উপকরণ সংগ্রহ করে নীলমাধবের পূজা করতে শুরু করলে নীলমাধব শবরকে কৃপাদৃষ্টিতে দর্শন দিয়ে বললেন,- “আমি এতদিন তোমার সযত্ন সেবা গ্রহণ করে পরিতুষ্ট হয়েছিলাম, এবার আমার পরম ভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন মহারাজের সেবা-পূজা গ্রহণের অভিলাষ হয়েছে, আমি সেখানে না যেয়ে পারছি না।” শ্রীনীলমাধবের পূজা হতে বঞ্চিত হবার আশঙ্কায় শবর বিদ্যাপতির প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাঁকে নিজ গৃহে আবদ্ধ করে রাখলেন। পরে নিজ দুহিতার পুনঃ পুনঃ প্রার্থনায় ব্রাহ্মণকে মুক্তি দিয়ে নিজদেশে যেতে অনুমতি দেন। বিদ্যাপতি রাজদরবারে উপস্থিত হয়ে নীলমাধবের আবিষ্কার বার্তা জ্ঞাপন করলেন। রাজা পরমানন্দে নীলমাধবকে রাজ সন্নিধানে আনয়ন করার জন্য অভিযানে নামলেন। এতদিনে বিদ্যাপতি নিক্ষিপ্ত সর্ষপ বীজ হতে চারা গজিয়ে উঠেছিল; এতে রাজা ও তাঁর সহযোগীরা পথ চিনে ঐ গুপ্ত স্থানে পৌঁছে নীলমাধব বিগ্রহ দেখতে না পেয়ে শবর পল্লী অবরোধ করে শবরকে বন্দী করলেন। তখন রাজার প্রতি দৈববাণী হল,- “শবরের কোন দোষ নেই, ওকে ছেড়ে দাও। তুমি পরম বৈষ্ণব, তোমার আশা অপূর্ণ থাকবে না। আমি তোমাকে দর্শন দেব, তবে নীলমাধবরূপে তুমি আমার দর্শন পাবে না। তুমি নীলাদ্রির উপর একটি মন্দির নির্মাণ কর; তথায় দারুব্রহ্মরূপে আমার দর্শন পাবে।”
রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ‘বউলমালা’ নামক স্থান হতে প্রস্তর আনয়ন করে শঙ্খনাভিমণ্ডলে একটি মন্দির নির্মাণ করালেন এবং তথায় রামকৃষ্ণপুর নামক একটি গ্রাম স্থাপন করলেন। শ্রীমন্দিরটি ৬০ হাত মাটির নিচে এবং ১২০ হাত মাটির উপরে প্রলম্বিত করা হল। মন্দিরের চূড়ায় একটি কলস ও তার উপর একটি চক্র স্থাপিত করে শ্রীমন্দিরকে সুবর্ণমণ্ডিত করা হল। রাজা ব্রহ্মাকে দিয়ে শ্রীমন্দির প্রতিষ্ঠা করার অভিলাষ করে ব্রহ্মলোকে গিয়ে বহুদিন ব্রহ্মার অপেক্ষায় সময় কাটালেন। এই সময়ের মধ্যে ইন্দ্রদ্যুম্ন নির্মিত মন্দির সমুদ্রের বালুকা দ্বারা আবৃত হয়ে গেল। তখন ‘সুরদেব’ ও ‘গালমাধব’ নামে কয়েকজন রাজা পর পর রাজত্ব করছিলেন। রাজা গালমাধব বালুকাভ্যন্তর হতে মন্দিরটি উদ্ধার করে উহা তাঁর নির্মিত বলে দাবী করেন। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ব্রহ্মলোক হতে ফিরে এসে শ্রীমন্দিরটি নিজের বলে দাবী করলেন, কিন্তু রাজা গালমাধব তা অস্বীকার করলেন। মন্দিরের সন্নিকটবর্তী কল্পবটস্থিত ‘ভূষণ্ডি’ কাক যুগান্তর ধরে শ্রীরামনাম কীর্তন করতে করতে তথায় সমস্ত ব্যাপার দর্শন করছিলেন, তিনিই মন্দির নির্মাণে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পক্ষে স্বাক্ষ্য প্রদান করলে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি হয়। রাজা ব্রহ্মাকে এই পরম পবিত্র মুক্তিপ্রদায়ক ক্ষেত্র ও শ্রীমন্দির প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রার্থনা জ্ঞাপন করলে ব্রহ্মা বললেন,- “শ্রীভগবানের স্বরূপ শক্তিদ্বারা প্রকাশিত এই শ্রীক্ষেত্র ও স্বপ্রকাশ শ্রীভগবানকে প্রতিষ্ঠা করবার শক্তি আমার নেই। শ্রীজগন্নাথ ও তাঁর শ্রীধাম প্রপঞ্চে তদীয় কৃপায় নিত্য অবস্থিত। তবে আমি এই মন্দিরের চূড়ায় একটি ধ্বজা বন্ধন করে দিচ্ছি, যা দূর হতে দর্শন করে দণ্ডবৎ প্রণাম করলে যে কেউ অনায়াসে ভববন্ধন হতে মুক্তি লাভ করতে পারবেন।”
বিদ্যাপতি একদিন দেখতে পেলেন যে তাঁর শ্বশুড় প্রত্যহ রাত্রিতে কোথায় যেন বেরিয়ে যান এবং পরদিবস গৃহে ফিরে আসেন। গৃহে ফিরে এলে তাঁর দেহ হতে দিব্য চন্দনাদির গন্ধ পাওয়া যেত। বিদ্যাপতি তাঁর পত্নী ললিতার কাছে এর কারণ জানতে চাইলে, তিনি স্বামীকে জানান যে তাঁর পিতা প্রতি রাত্রে নীলমাধবের পূজা করতে গভীর অরণ্যে গমন করেন।
এতদিন পরে নীলমাধবের সন্ধান পেয়ে বিদ্যাপতির আনন্দ আর ধরে না। তিনি নীলমাধবকে দর্শন করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। কন্যার প্রার্থনায় বিশ্বাবসু বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের সন্নিধানে নিয়ে যেতে সম্মত হলেন। কিন্তু নীলমাধবের মন্দিরের খোঁজ যাতে সে সহজে না করতে পারে সেইজন্য তাঁর চোখ বেঁধে বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের কাছে নিয়ে গেলেন। ললিতা কৌশলে স্বামীর বস্ত্রাঞ্চলে কিছু সর্ষপ বীজ বেঁধে দিয়েছিলেন যেগুলো তিনি তাঁর যাত্রাপথে নিক্ষেপ করে চললেন যাতে পরবর্তীতে ওগুলোর চারা গজালে অতি সহজেই ঐ অজানা গুপ্ত স্থানে পৌঁছার উপায় হয়। নীলমাধবের সন্নিকটে পৌঁছালে শবর বিদ্যাপতির চক্ষুর বন্ধন উন্মোচন করে দিলেন। বিদ্যাপতি নীলমাধবের অপূর্ব সুন্দর মূর্তি দর্শন করে আনন্দে পুলকিত হয়ে নৃত্য ও স্তব করতে লাগলেন। শবর নীলমাধবের কাছে বিদ্যাপতিকে রেখে পূজার উপকরণ সংগ্রহ করার জন্য গভীর বনমধ্যে গমন করলেন। এমন সময় বিদ্যাপতি লক্ষ্য করলেন, বৃক্ষ ডালে বসা একটি ঘুমন্ত কাক নিকটস্থ একটি কুণ্ডে পতিত হওয়ামাত্র প্রাণত্যাগ করে চতুর্ভুজমূর্তি ধারণ করে সারূপ্যমুক্তি লাভ করে বৈকুণ্ঠের উদ্দেশ্যে ঊর্ধ্বে গমন করল। এই দৃশ্য অবলোকন করে বিদ্যাপতিও ঐ কুণ্ডে পতিত হয়ে প্রাণ বিসর্জন দিতে তৈরী হলেন। এই সময় হঠাৎ দৈববাণী হল,- “হে ব্রাহ্মণ! তুমি তোমার নীলমাধবের দর্শনের কথা আগে রাজাকে না জানিয়ে তো মুক্তি পেতে পার না। কাজেই তুমি রাজার কাছে গিয়ে নীলমাধবের সংবাদ প্রদান করে তাঁর উপবাস ভঙ্গ কর।”
এদিকে শবর পূজা-উপকরণ সংগ্রহ করে নীলমাধবের পূজা করতে শুরু করলে নীলমাধব শবরকে কৃপাদৃষ্টিতে দর্শন দিয়ে বললেন,- “আমি এতদিন তোমার সযত্ন সেবা গ্রহণ করে পরিতুষ্ট হয়েছিলাম, এবার আমার পরম ভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন মহারাজের সেবা-পূজা গ্রহণের অভিলাষ হয়েছে, আমি সেখানে না যেয়ে পারছি না।” শ্রীনীলমাধবের পূজা হতে বঞ্চিত হবার আশঙ্কায় শবর বিদ্যাপতির প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাঁকে নিজ গৃহে আবদ্ধ করে রাখলেন। পরে নিজ দুহিতার পুনঃ পুনঃ প্রার্থনায় ব্রাহ্মণকে মুক্তি দিয়ে নিজদেশে যেতে অনুমতি দেন। বিদ্যাপতি রাজদরবারে উপস্থিত হয়ে নীলমাধবের আবিষ্কার বার্তা জ্ঞাপন করলেন। রাজা পরমানন্দে নীলমাধবকে রাজ সন্নিধানে আনয়ন করার জন্য অভিযানে নামলেন। এতদিনে বিদ্যাপতি নিক্ষিপ্ত সর্ষপ বীজ হতে চারা গজিয়ে উঠেছিল; এতে রাজা ও তাঁর সহযোগীরা পথ চিনে ঐ গুপ্ত স্থানে পৌঁছে নীলমাধব বিগ্রহ দেখতে না পেয়ে শবর পল্লী অবরোধ করে শবরকে বন্দী করলেন। তখন রাজার প্রতি দৈববাণী হল,- “শবরের কোন দোষ নেই, ওকে ছেড়ে দাও। তুমি পরম বৈষ্ণব, তোমার আশা অপূর্ণ থাকবে না। আমি তোমাকে দর্শন দেব, তবে নীলমাধবরূপে তুমি আমার দর্শন পাবে না। তুমি নীলাদ্রির উপর একটি মন্দির নির্মাণ কর; তথায় দারুব্রহ্মরূপে আমার দর্শন পাবে।”
রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ‘বউলমালা’ নামক স্থান হতে প্রস্তর আনয়ন করে শঙ্খনাভিমণ্ডলে একটি মন্দির নির্মাণ করালেন এবং তথায় রামকৃষ্ণপুর নামক একটি গ্রাম স্থাপন করলেন। শ্রীমন্দিরটি ৬০ হাত মাটির নিচে এবং ১২০ হাত মাটির উপরে প্রলম্বিত করা হল। মন্দিরের চূড়ায় একটি কলস ও তার উপর একটি চক্র স্থাপিত করে শ্রীমন্দিরকে সুবর্ণমণ্ডিত করা হল। রাজা ব্রহ্মাকে দিয়ে শ্রীমন্দির প্রতিষ্ঠা করার অভিলাষ করে ব্রহ্মলোকে গিয়ে বহুদিন ব্রহ্মার অপেক্ষায় সময় কাটালেন। এই সময়ের মধ্যে ইন্দ্রদ্যুম্ন নির্মিত মন্দির সমুদ্রের বালুকা দ্বারা আবৃত হয়ে গেল। তখন ‘সুরদেব’ ও ‘গালমাধব’ নামে কয়েকজন রাজা পর পর রাজত্ব করছিলেন। রাজা গালমাধব বালুকাভ্যন্তর হতে মন্দিরটি উদ্ধার করে উহা তাঁর নির্মিত বলে দাবী করেন। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ব্রহ্মলোক হতে ফিরে এসে শ্রীমন্দিরটি নিজের বলে দাবী করলেন, কিন্তু রাজা গালমাধব তা অস্বীকার করলেন। মন্দিরের সন্নিকটবর্তী কল্পবটস্থিত ‘ভূষণ্ডি’ কাক যুগান্তর ধরে শ্রীরামনাম কীর্তন করতে করতে তথায় সমস্ত ব্যাপার দর্শন করছিলেন, তিনিই মন্দির নির্মাণে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পক্ষে স্বাক্ষ্য প্রদান করলে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি হয়। রাজা ব্রহ্মাকে এই পরম পবিত্র মুক্তিপ্রদায়ক ক্ষেত্র ও শ্রীমন্দির প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রার্থনা জ্ঞাপন করলে ব্রহ্মা বললেন,- “শ্রীভগবানের স্বরূপ শক্তিদ্বারা প্রকাশিত এই শ্রীক্ষেত্র ও স্বপ্রকাশ শ্রীভগবানকে প্রতিষ্ঠা করবার শক্তি আমার নেই। শ্রীজগন্নাথ ও তাঁর শ্রীধাম প্রপঞ্চে তদীয় কৃপায় নিত্য অবস্থিত। তবে আমি এই মন্দিরের চূড়ায় একটি ধ্বজা বন্ধন করে দিচ্ছি, যা দূর হতে দর্শন করে দণ্ডবৎ প্রণাম করলে যে কেউ অনায়াসে ভববন্ধন হতে মুক্তি লাভ করতে পারবেন।”