দেউরিয়া তাল এপ্রিল ২০১৯
12 এপ্রিল সকাল ৮ টা হরিদ্বার থেকে একটা গাড়ি বুক করে চললাম সারি গ্রামের পথে।। পাহাড়ের পথ তাই হাতে সময় নিয়ে বেরোনো।। দেবপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, শ্রীনগর হয়ে উখিমঠ পেরিয়ে সারি গ্রামে পৌছতে বিকেল ৪ টে। সামনেই চারধাম যাত্রা, তাই পুরোদমে কাজ চলছে রাস্তায়। রাস্তা আরো চওড়া হচ্ছে। তাই সময় লাগলো একটু বেশি।
উখিমঠ থেকে চোপতা যাওয়ার রাস্তা ধরে বেশ কিছুটা গিয়ে বাম দিকে খাড়াই পথ উঠে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিমি দূরে সারি গ্রাম। দেউরিয়া তালের প্রবেশ পথ এই সারি গ্রাম।। হিমালয়ের কোলে নির্ভেজাল এক সুন্দর গ্রাম সারি।। রুদ্রপ্রয়াগ জেলার উখিমঠের কাছে 6554 ফুট উচ্চতায় সারি গ্রামের অবস্থান।। ৩০০ পরিবারের বাস এখানে।। এখান থেকে শুরু হয় দেউরিয়া তালের যাত্রা পথ।। দেউরিয়া তালের উচ্চতা ৭৮০০ ফুট।। এই সারি গ্রামকে বেস করে চোপতার পথে চলে যাওয়া যায় তুঙ্গনাথ।। সারি থেকে চোপতার দূরত্ব ও খুব বেশি না। সবুজে মোড়া অরণ্য আর তার তার মাঝ দিয়ে চলে গেছে চোপতার রাস্তা। মাঝে মাঝে উকি মারে বরফে মোড়া পাহাড় চূড়া। এক রোমান্টিক পথ।।
সারি গ্রামে এসে উঠেছি রুদ্র হলি কটেজে।। জয়দীপ সিং এই কটেজের মালিক। কটেজে বসেই দেখা যায় হিমালয়ের অপার সৌন্দর্য আর সারি গ্রামের ব্যস্ততা।। নিখুঁত পরিপাটি একটা গ্রাম। শহরের ভিড় ভাট্টা থেকে একটু অক্সিজেন নিতে কিছু দিন কাটিয়ে আসতে পারেন এই সারি গ্রামে।
বিকেলটা কাটিয়ে দিলাম সারি গ্রামের এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে। ফিরে এসে তাড়াতাড়ি ডিনার করে শুয়ে পড়লাম। এখানে খুব তাড়াতাড়ি লোকে শুয়ে পড়ে, তাই কিছু করার থাকেনা।
পরের দিন সকালে চা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম দেউরিয়া তালের পথে। কিছুটা গিয়ে ডান হাতে একটা তোরণদ্বার।। পাথর বিছানো পথ ভেঙে উঠতে হবে পাহাড়ের মাথায়।। ২.৫ কিমির পথ পুরোটাই চড়াই।। পাহাড়ের মাথায় সেই অভিষ্ট লক্ষ্য, দেবতাদের হ্রদ দেউরিয়া তাল।। হালকা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে আঁকা বাঁকা পথ উঠে গেছে উপরে।। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়, তাই বসন্তের ছোঁয়ায় গোটা পাহাড় লালে লাল।। রোডডেনড্রনে ছেয়ে আছে গোটা পাহাড়।। আর তার টানে এসে হাজির হয়েছে নানান রকমের পাখি।। তাদের কল কাকলিতে মুখরিত চলার পথ।। পথ কষ্ট অনেকটা ভুলিয়ে দেয় ওদের গলার স্বর।। অনেকটা উঠে পাহাড়ের ধারে একটা সমতল মত জায়গায় একটা মন্দির।। শীব নারায়ণ মন্দির।। মন্দিরের সামনে বসে থাকলাম কিছুক্ষন।। নীচে দেখা যাচ্ছে ছবির মত সারি গ্রাম।। পাহাড় কেটে ঝুম চাষ কোথাও বা ফসল বোনার জন্য জমি তৈরি করা হয়েছে।। যত পাহাড়ের মাথায় উঠছিলাম তত পথ খাঁড়া হচ্ছিল।। পথের মাঝে মধ্যেই পসরা সাজিয়ে বসে আছে দোকানিরা।। সেখানে মাঝে মাঝে জিরিয়ে নেওয়া তারপর আবার পথ চলা।। একটা রিজের উপর উঠে আসার পর চোখের সামনে খুলে গেল নতুন দিগন্ত।। পৌছে গেলাম দেউরিয়া তাল।। নীল আকাশের বুক চিরে উঁকি দিচ্ছে চৌখাম্বা, কেদার নাথ, মান্দানি, মেরু, সুমেরু, কেদার ডোম আরো কত নাম না জানা শৃঙ্গ।। পাহাড়ের মাথায় একটা সবুজ ঢেউ খেলানো বুগিয়াল, তার মাঝে একটা পান্না সবুজ হ্রদ।। চারিদিকে নিখাত সৌন্দর্য।। কিছুক্ষন সেই নিস্তব্ধ নিসর্গের মাঝে কাটিয়ে ফেরার পথ ধরলাম।। যে পথে এসেছিলাম সেই পথেই আবার ফিরে চললাম।।
নোট: দেউরিয়া তালের এন্ট্রি ফি মাথা পিছু ১৫০ টাকা।।
যদি তাবুতে থাকতে চান প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে।।
রূদ্র হলি কটেজের নম্বর:- +91 97207 83731 joydeep negi sari village
কালিকমলী ধর্মশালা হরিদ্বার : 01334 227 149
12 এপ্রিল সকাল ৮ টা হরিদ্বার থেকে একটা গাড়ি বুক করে চললাম সারি গ্রামের পথে।। পাহাড়ের পথ তাই হাতে সময় নিয়ে বেরোনো।। দেবপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, শ্রীনগর হয়ে উখিমঠ পেরিয়ে সারি গ্রামে পৌছতে বিকেল ৪ টে। সামনেই চারধাম যাত্রা, তাই পুরোদমে কাজ চলছে রাস্তায়। রাস্তা আরো চওড়া হচ্ছে। তাই সময় লাগলো একটু বেশি।
উখিমঠ থেকে চোপতা যাওয়ার রাস্তা ধরে বেশ কিছুটা গিয়ে বাম দিকে খাড়াই পথ উঠে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিমি দূরে সারি গ্রাম। দেউরিয়া তালের প্রবেশ পথ এই সারি গ্রাম।। হিমালয়ের কোলে নির্ভেজাল এক সুন্দর গ্রাম সারি।। রুদ্রপ্রয়াগ জেলার উখিমঠের কাছে 6554 ফুট উচ্চতায় সারি গ্রামের অবস্থান।। ৩০০ পরিবারের বাস এখানে।। এখান থেকে শুরু হয় দেউরিয়া তালের যাত্রা পথ।। দেউরিয়া তালের উচ্চতা ৭৮০০ ফুট।। এই সারি গ্রামকে বেস করে চোপতার পথে চলে যাওয়া যায় তুঙ্গনাথ।। সারি থেকে চোপতার দূরত্ব ও খুব বেশি না। সবুজে মোড়া অরণ্য আর তার তার মাঝ দিয়ে চলে গেছে চোপতার রাস্তা। মাঝে মাঝে উকি মারে বরফে মোড়া পাহাড় চূড়া। এক রোমান্টিক পথ।।
সারি গ্রামে এসে উঠেছি রুদ্র হলি কটেজে।। জয়দীপ সিং এই কটেজের মালিক। কটেজে বসেই দেখা যায় হিমালয়ের অপার সৌন্দর্য আর সারি গ্রামের ব্যস্ততা।। নিখুঁত পরিপাটি একটা গ্রাম। শহরের ভিড় ভাট্টা থেকে একটু অক্সিজেন নিতে কিছু দিন কাটিয়ে আসতে পারেন এই সারি গ্রামে।
বিকেলটা কাটিয়ে দিলাম সারি গ্রামের এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে। ফিরে এসে তাড়াতাড়ি ডিনার করে শুয়ে পড়লাম। এখানে খুব তাড়াতাড়ি লোকে শুয়ে পড়ে, তাই কিছু করার থাকেনা।
পরের দিন সকালে চা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম দেউরিয়া তালের পথে। কিছুটা গিয়ে ডান হাতে একটা তোরণদ্বার।। পাথর বিছানো পথ ভেঙে উঠতে হবে পাহাড়ের মাথায়।। ২.৫ কিমির পথ পুরোটাই চড়াই।। পাহাড়ের মাথায় সেই অভিষ্ট লক্ষ্য, দেবতাদের হ্রদ দেউরিয়া তাল।। হালকা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে আঁকা বাঁকা পথ উঠে গেছে উপরে।। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়, তাই বসন্তের ছোঁয়ায় গোটা পাহাড় লালে লাল।। রোডডেনড্রনে ছেয়ে আছে গোটা পাহাড়।। আর তার টানে এসে হাজির হয়েছে নানান রকমের পাখি।। তাদের কল কাকলিতে মুখরিত চলার পথ।। পথ কষ্ট অনেকটা ভুলিয়ে দেয় ওদের গলার স্বর।। অনেকটা উঠে পাহাড়ের ধারে একটা সমতল মত জায়গায় একটা মন্দির।। শীব নারায়ণ মন্দির।। মন্দিরের সামনে বসে থাকলাম কিছুক্ষন।। নীচে দেখা যাচ্ছে ছবির মত সারি গ্রাম।। পাহাড় কেটে ঝুম চাষ কোথাও বা ফসল বোনার জন্য জমি তৈরি করা হয়েছে।। যত পাহাড়ের মাথায় উঠছিলাম তত পথ খাঁড়া হচ্ছিল।। পথের মাঝে মধ্যেই পসরা সাজিয়ে বসে আছে দোকানিরা।। সেখানে মাঝে মাঝে জিরিয়ে নেওয়া তারপর আবার পথ চলা।। একটা রিজের উপর উঠে আসার পর চোখের সামনে খুলে গেল নতুন দিগন্ত।। পৌছে গেলাম দেউরিয়া তাল।। নীল আকাশের বুক চিরে উঁকি দিচ্ছে চৌখাম্বা, কেদার নাথ, মান্দানি, মেরু, সুমেরু, কেদার ডোম আরো কত নাম না জানা শৃঙ্গ।। পাহাড়ের মাথায় একটা সবুজ ঢেউ খেলানো বুগিয়াল, তার মাঝে একটা পান্না সবুজ হ্রদ।। চারিদিকে নিখাত সৌন্দর্য।। কিছুক্ষন সেই নিস্তব্ধ নিসর্গের মাঝে কাটিয়ে ফেরার পথ ধরলাম।। যে পথে এসেছিলাম সেই পথেই আবার ফিরে চললাম।।
নোট: দেউরিয়া তালের এন্ট্রি ফি মাথা পিছু ১৫০ টাকা।।
যদি তাবুতে থাকতে চান প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে।।
রূদ্র হলি কটেজের নম্বর:- +91 97207 83731 joydeep negi sari village
কালিকমলী ধর্মশালা হরিদ্বার : 01334 227 149