[You must be registered and logged in to see this image.]
হরিদ্বার, উত্তরাখণ্ডসপ্তপুরীর অন্যতম এই হরিদ্বারের পূর্ব নাম ছিল কপিলাস্থান। হর ও হরির সহাবস্থান ঘটেছে উত্তরাঞ্চল রাজ্যের সাহারানপুর জেলায় শিবালিক পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ২৯২ মিটার উঁচুতে। আর হরির দ্বার নাম থেকেই আজ হরিদ্বার। আবার সারা গাড়োয়াল হিমালয়ে হর অর্থাৎ মহাদেবের মহিমার অন্ত নেই। সে কারনে হরিদ্বারকে অনেকে হর-কি-দুয়ারও বলেন। পূর্ব দিকে চন্ডী পাহাড়, পশ্চিমে মনসাপাহাড়- এরই মাঝে হরি-কি-পাউরিকে কেন্দ্রমণি করে শহরও গড়ে উঠেছে গঙ্গার পশ্চিমে দেবভূমি হরিদ্বার।গঙ্গা হল এখানকার মূল আকর্ষণ।পাহাড় থেকে হরিদ্বারের হরি-কি-পাউরি ঘাটে গঙ্গা নেমেছে সমতলে। এখানে মূল গঙ্গার প্রবাহেরও বদল হয়েছে। শহরের উত্তরে ভীমগোদায় বাঁধ দিয়ে কৃত্তিম স্রোত তৈরি হয়েছে। এখানেই গঙ্গা মাতার মন্দির। এছাড়াও শতসহস্র দেবদেবীর মন্দির। আরও আছে মনসা দেবীর মূর্তি। সন্ধ্যাকালে ঘাট সেজে ওঠে মাঙ্গলিক আলোক মালায়। সূর্যাস্তে হরি-কি-পাউরি ঘাটে ৬ জন পুরোহিতের একসঙ্গে ১০০৮টি প্রদীপের গঙ্গারতি, সেই সঙ্গে ভজন- ‘জয় জয় গঙ্গা মাতা...’। বহু পূণার্থীর মত সন্ধ্যাপ্রদীপ দেয়া হয় মা গঙ্গাকে। দুলকি চালে গঙ্গায় ভেসে চলা হাজারও সন্ধ্যাপ্রদীপের আলোকমালায় যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। শহরের দক্ষিণ-পূর্বে শীর্ণকায় মূল গঙ্গার অপর পাড়ে ৫ কিমি পূর্বে নীল পর্বতের চূড়োয় চন্ডীমন্দির। নীল পাহাড় থেকে লালদিওয়ালা ড্যামটির দৃশ্যও অপরূপ। পরে হরিদ্বার শহর থেকে ৫ কিমি দক্ষিণের কনখলে দুর্গা মন্দির, দক্ষ প্রজাপতি মন্দিরে দশ অবতার মূর্তি, শ্রী জগতগুরুর আশ্রমে কালী, রাধামাধব, রাজ-রাজেশ্বরী, মৃত্যুঞ্জয় মন্দিরে ১৫১ কেজি পারদে তৈরি লিঙ্গরূপী শিব, মানব কল্যাণে অর্ধনারীশ্বর সহ আরও বেশ কিছু মন্দির রয়েছে এখানে। হরিদ্বার গাড়োয়াল হিমালয়ের প্রবেশদ্বার। হরিদ্বারে প্রতি ১২ বছর অন্তর পূর্ণ কুম্ভমেলা আয়োজিত হয়। গঙ্গা আরতি হয় প্রতিদিন সন্ধ্যে সারে ৬টার সময় হরকি পৌড়ি ঘাটে। প্রদিপের ডালা, ফুল গঙ্গায় ভাসান হয় এখানে। এখানে রোপওয়ের উপর থেকে সন্ধ্যের সময় হরিদ্বারের আলোকসজ্জা দেখতে অপুর্ব লাগে। অনেকে ভেলায় ফুল প্রদীপ দিয়ে গঙ্গা পূজো দিয়ে সেই ভেলা গঙ্গার বুকে ভাসিয়ে দেন। তখন এই আলোকময় গঙ্গার রূপকে আরও অপরূপ করে তোলে।
এখানে আরও রয়েছে মনসা মন্দীর, চণ্ডী মন্দীর, নীলধারা পক্ষীবিহার, বৈষ্ণাদেবী মন্দীর, পবনধাম, অঞ্জনীদেবী মন্দীর, ভারতমাতা মন্দীর, সপ্তর্ষী আশ্রম...মতিচূড় স্যাংচুয়ারি, রাজাজি স্যাংচুয়ারি ওচিল্লা স্যাংচুয়ারি মিলে তৈরি হওয়া রাজাজি ন্যাশনাল পার্ক। বানপ্রস্হ আশ্রম, বিড়ালা টাওয়ার, পবনধাম, গুরুকুল কাংড়ী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেদমন্দির মিউজিযাম ইত্যাদি।
ভারতের এই প্রাচীন শহরটি হিন্দুদের সাতটি পবিত্রতম স্থানের মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রমন্থনের পর যে চারটি স্থানে অমৃত ছলকে পড়েছিল হরিদ্বার তার মধ্যে একটি। এ শহর মুহূর্তেই আপনাকে আপন করে নেবে। মনে হবে বহু জন্ম ধরে আপনি এ পথেই হেঁটে চলেছেন। আর সন্ধ্যার গঙ্গা আরতিতে অংশ নেবার সৌভাগ্য যদি আপনার হয়ে থাকে তবে সেই স্মৃতি আজীবন থেকে যাবে এটা নিশ্চিত...
Haridwar, Uttrakhand.....
(Sweet Memories... October '2018)
হরিদ্বার, উত্তরাখণ্ডসপ্তপুরীর অন্যতম এই হরিদ্বারের পূর্ব নাম ছিল কপিলাস্থান। হর ও হরির সহাবস্থান ঘটেছে উত্তরাঞ্চল রাজ্যের সাহারানপুর জেলায় শিবালিক পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ২৯২ মিটার উঁচুতে। আর হরির দ্বার নাম থেকেই আজ হরিদ্বার। আবার সারা গাড়োয়াল হিমালয়ে হর অর্থাৎ মহাদেবের মহিমার অন্ত নেই। সে কারনে হরিদ্বারকে অনেকে হর-কি-দুয়ারও বলেন। পূর্ব দিকে চন্ডী পাহাড়, পশ্চিমে মনসাপাহাড়- এরই মাঝে হরি-কি-পাউরিকে কেন্দ্রমণি করে শহরও গড়ে উঠেছে গঙ্গার পশ্চিমে দেবভূমি হরিদ্বার।গঙ্গা হল এখানকার মূল আকর্ষণ।পাহাড় থেকে হরিদ্বারের হরি-কি-পাউরি ঘাটে গঙ্গা নেমেছে সমতলে। এখানে মূল গঙ্গার প্রবাহেরও বদল হয়েছে। শহরের উত্তরে ভীমগোদায় বাঁধ দিয়ে কৃত্তিম স্রোত তৈরি হয়েছে। এখানেই গঙ্গা মাতার মন্দির। এছাড়াও শতসহস্র দেবদেবীর মন্দির। আরও আছে মনসা দেবীর মূর্তি। সন্ধ্যাকালে ঘাট সেজে ওঠে মাঙ্গলিক আলোক মালায়। সূর্যাস্তে হরি-কি-পাউরি ঘাটে ৬ জন পুরোহিতের একসঙ্গে ১০০৮টি প্রদীপের গঙ্গারতি, সেই সঙ্গে ভজন- ‘জয় জয় গঙ্গা মাতা...’। বহু পূণার্থীর মত সন্ধ্যাপ্রদীপ দেয়া হয় মা গঙ্গাকে। দুলকি চালে গঙ্গায় ভেসে চলা হাজারও সন্ধ্যাপ্রদীপের আলোকমালায় যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। শহরের দক্ষিণ-পূর্বে শীর্ণকায় মূল গঙ্গার অপর পাড়ে ৫ কিমি পূর্বে নীল পর্বতের চূড়োয় চন্ডীমন্দির। নীল পাহাড় থেকে লালদিওয়ালা ড্যামটির দৃশ্যও অপরূপ। পরে হরিদ্বার শহর থেকে ৫ কিমি দক্ষিণের কনখলে দুর্গা মন্দির, দক্ষ প্রজাপতি মন্দিরে দশ অবতার মূর্তি, শ্রী জগতগুরুর আশ্রমে কালী, রাধামাধব, রাজ-রাজেশ্বরী, মৃত্যুঞ্জয় মন্দিরে ১৫১ কেজি পারদে তৈরি লিঙ্গরূপী শিব, মানব কল্যাণে অর্ধনারীশ্বর সহ আরও বেশ কিছু মন্দির রয়েছে এখানে। হরিদ্বার গাড়োয়াল হিমালয়ের প্রবেশদ্বার। হরিদ্বারে প্রতি ১২ বছর অন্তর পূর্ণ কুম্ভমেলা আয়োজিত হয়। গঙ্গা আরতি হয় প্রতিদিন সন্ধ্যে সারে ৬টার সময় হরকি পৌড়ি ঘাটে। প্রদিপের ডালা, ফুল গঙ্গায় ভাসান হয় এখানে। এখানে রোপওয়ের উপর থেকে সন্ধ্যের সময় হরিদ্বারের আলোকসজ্জা দেখতে অপুর্ব লাগে। অনেকে ভেলায় ফুল প্রদীপ দিয়ে গঙ্গা পূজো দিয়ে সেই ভেলা গঙ্গার বুকে ভাসিয়ে দেন। তখন এই আলোকময় গঙ্গার রূপকে আরও অপরূপ করে তোলে।
এখানে আরও রয়েছে মনসা মন্দীর, চণ্ডী মন্দীর, নীলধারা পক্ষীবিহার, বৈষ্ণাদেবী মন্দীর, পবনধাম, অঞ্জনীদেবী মন্দীর, ভারতমাতা মন্দীর, সপ্তর্ষী আশ্রম...মতিচূড় স্যাংচুয়ারি, রাজাজি স্যাংচুয়ারি ওচিল্লা স্যাংচুয়ারি মিলে তৈরি হওয়া রাজাজি ন্যাশনাল পার্ক। বানপ্রস্হ আশ্রম, বিড়ালা টাওয়ার, পবনধাম, গুরুকুল কাংড়ী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেদমন্দির মিউজিযাম ইত্যাদি।
ভারতের এই প্রাচীন শহরটি হিন্দুদের সাতটি পবিত্রতম স্থানের মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রমন্থনের পর যে চারটি স্থানে অমৃত ছলকে পড়েছিল হরিদ্বার তার মধ্যে একটি। এ শহর মুহূর্তেই আপনাকে আপন করে নেবে। মনে হবে বহু জন্ম ধরে আপনি এ পথেই হেঁটে চলেছেন। আর সন্ধ্যার গঙ্গা আরতিতে অংশ নেবার সৌভাগ্য যদি আপনার হয়ে থাকে তবে সেই স্মৃতি আজীবন থেকে যাবে এটা নিশ্চিত...
Haridwar, Uttrakhand.....
(Sweet Memories... October '2018)