● হরিদ্বার সম্পূর্ণ ভ্রমন গাইড
[You must be registered and logged in to see this image.]
●Haridwar Complete Tour Guide
▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪

■ হৃদয়ের দ্বার :: হরিদ্বার।।
   ••••••••••••••••••••••••••••••

ভারতবর্ষের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান হরিদ্বার। পতিতপাবনী গঙ্গা নদী এখান থেকেই দক্ষিণবাহী। ভারতবর্ষের বিখ্যাত চারধাম যাত্রার (কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী,যমুনেত্রী) শুরু হয় এই হরিদ্বার থেকেই। প্রতি ১২ বছর অন্তর পূর্ণকুম্ভ এবং ৬ বছর অন্তর অর্ধকুম্ভের মেলা হয়, এই হরিদ্বারকে কেন্দ্র করেই। হরিদ্বার আরেকটি কারণে বিখ্যাত, সেটা হল প্যাড়া, রাবরি। জাস্ট ফাটাফাটি।

## দেখাশোনা :: সাইট সীইং ( sight seeing )
   *************
হরিদ্বারের মূল আকর্ষণ গঙ্গা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, বিশ্ব বিখ্যাত "হর কি পৌড়ি" ঘাট। এই ঘাটের সন্ধ্যা আরতি এক অন্যতম দর্শনীয় বিষয়, যার টানে লক্ষ লক্ষ মানুষ হর কি পৌড়ি ঘাটে আসে। এই ঘাটে আছে একটি সুউচ্চ ঘড়ি স্তম্ভ। এছাড়া গঙ্গা দেবী, বদ্রীনাথ, ও লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির। এখানে সন্ধ্যাবেলায় গঙ্গায় প্রদীপ ভাসানোর প্রথা আছে। গঙ্গার স্রোতে যখন একসাথে অনেকগুলো প্রদীপ ভেসে যায়, দেখতে দারুন লাগবে।
           হরিদ্বারের দুটো পাহাড়ি মন্দির হল, মনসা পাহাড়ের উপর "মনসা মন্দির" আর চন্ডী পাহাড়ের উপর "চন্ডী মন্দির"। দুটো মন্দিরেই যাওয়ার জন্য রোপওয়ের ব্যবস্থা আছে। মনসা মন্দিরে হেঁটে উঠা যায়, তবে না ওঠাই ভালো, অনেকটা সময় নষ্ট হয়। এই দুই মন্দির চত্ত্বরে প্রচুর বাঁদর আছে, বাঁদর থেকে সাবধান।
        এরপর হরিদ্বার থেকে ৫ কিমি দূরে "কঙ্খল"। এখানে আছে রাজা দক্ষের মন্দির, দক্ষেশ্বর মহাদেবের মন্দির। মন্দিরের সামনেই গঙ্গা নদী। আছে য্জ্ঞকুন্ড, এখানে আছে সতীর দেহ কোলে নৃত্যরত মহাদেবের রুদ্রমুর্তি, এছাড়া আছে সীতাকুণ্ড, শ্রী জগৎগুরু আশ্রম, আনন্দময়ী মায়ের আশ্রম।

পরের দিন হরিদ্বার থেকে ২৪ কিমি দূরে "হৃষিকেশ"। হৃষিকেশ হল, যোগশিক্ষা আর তপস্যার জায়গা। হৃষিকেশ বাজারে প্রচুর আয়ুর্বেদিক ঔষুধ ও আয়ুর্বেদিক প্রসাধন সামগ্রীর দোকান আছে। এখানেই আছে বিখ্যাত সেতু "লক্ষ্মণ ঝোলা"। সেতুর নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে গঙ্গা নদী। এখানে গঙ্গা নদীর জলের রঙ সবুজ। সম্পূর্ণ দূষণহীন গঙ্গা। কিন্তু গত ১৩/০৭/২০১৯ থেকে প্রায় ৯৫ বছরের পুরোনো এই সেতুটি সাধারনের জন্য সরকারী ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেতুর ওপারে আছে ১৩ তলা উঁচু "ত্রম্বকেশ্বর মন্দির"। এছাড়াও আছে রাম ঝোলা, ঋষিকুন্ড, বালাজি মন্দির, গীতা ভবন, বেদ নিকেতন। গীতা ভবনে একটা রুদ্রাক্ষ গাছ আছে। তবে এখান থেকে রুদ্রাক্ষ কিনলে, অবশ্যই দেখে কিনতে হবে।
       
       হরিদ্বার শহরে প্রচুর মন্দির আছে। সব দেখা সম্ভব নয়। তবে পবন ধাম বা কাঁচ মন্দির, দেবী বৈষ্ণবী মাতা মন্দির বেশ ভালো।
        ঘুড়ে বেড়ানো ছাড়া, হরিদ্বার মার্কেটিং-এর জন্যও বেশ ভালো। শীত বস্ত্রের দাম ঠিকঠাক।

## থাকা-খাওয়া :: হোটেল ধরমশালা ( Hotel Dharamshala )
    **************
হরিদ্বারে থাকা-খাওয়ার জায়গার কোন অভাব নেই। হরিদ্বার স্টেশনের কাছে, বাসস্ট্যান্ডের কাছে, হর কি পৌড়ি ঘাটের কাছে এবং বাজারে বিভিন্ন বাজেটের প্রচুর হোটেল ও লজ্ আছে। এছাড়াও হরিদ্বারে অনেক ধর্মশালা আছে। হোটেলে অগ্রিম বুকিং করা যায়, কিন্তু ধর্মশালায় কোন অগ্রিম বুকিং করা যায় না, ঘর ফাঁকা থাকলে, তবেই থাকা যায়।
           হরিদ্বারে হোটেলের চেক আউটের সময় দুপুর ১২ টা। তবে হোটেল বা ধর্মশালার খোঁজখবর করার জন্য, কোন টোটো, আটো বা রিকশাচালকের থেকে সাবধান। এরা টাকার বিনিময়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে।

খাবারের ব্যাপারে হরিদ্বারের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে নিরামিষ খাবারের আধিক্য বেশি।
        তবে হরিদ্বারে গিয়ে কয়েকটি খাবার অবশ্যই খেতে হবে, যেমন- রাবরি, লস্যি, দই আর বিখ্যাত প্যাড়া। হরিদ্বারে "নীতিন জি-র" দোকান থেকে  প্যাড়া খুবই সুন্দর ।
বেড়াতে গেলে কিছু মানুষের একটু অ্যালকোহলের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায় । তীর্থস্থান হরিদ্বারে গিয়ে এই ভালোবাসা ত্যাগ করতে হবে ।

¤ কিছু হোটেল ::
  """"""""""""""""""""""
▪︎দীপ রেসিডেন্সি -- 07060604286।
▪︎হোটেল মানস সরোবর ইন্টারন্যাশনাল --                   09836646003।
▪︎ মন্দাকিনী গেস্ট হাউস -- 09897511616।  
▪︎শচীন ইন্টারন্যাশনাল -- 09536282698।
▪︎হোটেল জ্ঞান -- 09837757272।

¤ কিছু ধর্মশালা ::
  """"""""""""""""""""""""
▪︎ভোলাগিরি আশ্রম।
▪︎বেদ নিকেতন।
▪︎কালীকমলি ধর্মশালা।
▪︎গুজরাতি ধর্মশালা।
▪︎ভারত সেবাশ্রম সংঘ।
▪︎কালীবাড়ি।
▪︎মারোয়াড়ি পঞ্চায়েতি ধর্মশালা।

         এই হোটেল ও ধর্মশালাগুলি ছাড়াও প্রচুর হোটেল ও ধর্মশালা আছে। উপরিলিখিত হোটেলগুলির নাম ও নম্বর এবং ধর্মশালাগুলির নাম গুগুল থেকে সংগ্রহ করা।

## যাওয়া-আসা ::
    **************
হাওড়া থেকে হরিদ্বার সরাসরি ট্রেনে যাওয়া যায়, অথবা কলকাতা থেকে বিমানে দেরাদুন পৌঁছে, বাস অথবা গাড়িতে হরিদ্বার যাওয়া যাবে। এছাড়া দিল্লি থেকে ট্রেনে অথবা গাড়িতে হরিদ্বার যাওয়া যাবে।  

¤ যাওয়ার ট্রেনের সময় ::
  """""""""""""""""""""""""""""""""""""
▪︎হাওড়া থেকে প্রতিদিন যাচ্ছে "দুন এক্সপ্রেস", সময় রাত ৮.২৫ মিনিটে।
▪︎প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার যাচ্ছে "উপাসনা এক্সপ্রেস", সময় দুপুর ১ টা।
▪︎প্রতি সোম, বুধ, বৃহস্পতি, শনি ও রবিবার যাচ্ছে "কুম্ভ এক্সপ্রেস", সময় দুপুর ১ টা।

¤ ফেরার ট্রেনের সময় ::
  "'"""""""""""""""""""""""""""""""""
▪︎হরিদ্বার থেকে প্রতিদিন আসছে "দুন এক্সপ্রেস", সময় রাত ৯.৪৫ মিনিটে।
▪︎প্রতি বুধ ও শনিবার আসছে "উপাসনা এক্সপ্রেস", সময় রাত ১১.৩৫ মিনিটে।
▪︎প্রতি সোম, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শুক্র ও রবিবার আসছে "কুম্ভ এক্সপ্রেস", সময় রাত ১১.৫০ মিনিটে।


## ট্যুর প্ল্যানটা মোটামুটি এই রকম,
হাওড়া বা কলকাতা থেকে ট্রেনে বা বিমানে (দেরাদুন বিমান বন্দর) হরিদ্বার পৌঁছানোর পর, হরিদ্বার থেকে ঘোরাঘুরি,-----

▪︎১ম দিন :: মনসা মন্দির, চন্ডী মন্দির, কঙ্খল।
▪︎২য় দিন :: হৃষিকেশ ও সংলগ্ন মন্দির সমূহ।
▪︎৩য় দিন :: হরিদ্বার শহরের কিছু মন্দির দর্শন।
এতো কিছুর মধ্যেও সময় করে গঙ্গা স্নান, গঙ্গা আরতি দর্শন আর মার্কেটিং করে নিতে হবে।

◆ সঙ্গে অবশ্যই নিতে হবে ::- প্রত্যেকের পরিচয়পত্র অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অনলাইনে হোটেল বা ট্যুর বুকিং করলে, ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় ঔষধ সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে ।।
Happy Journey.....।।
Today at 13:20