মধ্যপ্রদেশ******

পর্ব---১
মহাকালের নগরীতে,,,,,,,
[You must be registered and logged in to see this link.]

দীর্ঘদিনের ইচ্ছে উজ্জয়িনীতে গিয়ে মহাকালের ভস্মারতি দর্শন করব ৷ট্যুর প্লানার গ্রুপে এই নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট ঘাঁটাঘাটি করতে শুরু করলাম ৷ তমাল দাস এর 2018 উজ্জয়িনী ভ্রমণের লেখাটি পড়ে প্রবল ইচ্ছে হলো এ বছর মহাকালের কাছে যাব ই |বিভিন্ন পোস্ট ঘাঁটতে ঘাটতে দেবযানী বসু , তমাল দাস এর পোস্ট থেকে বেসিক কিছু ইনফরমেশন পেলাম এবং কৌশিক দত্ত এর ট্যুর পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের ট্যুর সাজাতে শুরু করলাম।

মে মাসে শুধু টিকিট কেটে বসে আছি আর  কিভাবে সব করব সেটা গ্রুপ ঘেঁটে চলেছি আর  নোট লিখে চলেছি ৷এই পুরো ঘটনা ক্রমে প্রথম কাজই হল ভস্মারতির অনলাইন টিকিট বুকিং |নির্দিষ্ট সময় এই কাজটা নিজেই সম্পন্ন করলাম। এই কাজটা করতে youtube এর বিভিন্ন ভিডিও খুব সাহায্য করেছে ৷যারা ভম্মারতি দর্শন করতে চান তারা যে তারিখে দর্শন করতে চান তার ঠিক একমাস আগে ভাম্মারতির অনলাইন টিকিট বুক করবেন।

এবার অপেক্ষা শুরু কবে সেই নির্দিষ্ট দিন আসবে ৷কি মুশকিল যাওয়ার ঠিক দুদিন আগে থেকে প্রবল শরীর খারাপ ৷যাওয়ার দিন সকালে ডাক্তার দেখিয়ে একটি ইঞ্জেকশন নিয়ে বাবার নাম নিয়ে উঠে বসলাম ট্রেনে ৷সারারাত বিশ্রাম পরের সারাদিন বিশ্রামের পর শিপ্রা এক্সপ্রেস আমাদের ১০ মিনিট আগেই উজ্জয়িনী পৌঁছে দিল ৷তমাল দাসের পোস্ট থেকে হোটেল নমন প্যালেস নাম জানতে পেরেছিলাম ৷এই হোটেলটি আগে থেকেই বুক করে রেখেছিলাম দুদিনের জন্য এর জন্য আমার পড়েছে প্রতিদিন ১৫শ টাকা করে ৷ মন্দিরের একদম কাছে এই হোটেলের অবস্থান ৷হোটেলে পৌঁছেই জিনিসপত্র রেখেই ছুটলাম মন্দিরের দিকে, গিয়ে দেখি সেদিনকার মতন দর্শন বন্ধ লোকে ভস্মারতীর টিকিটের জন্য লাইন দিতে শুরু করেছে ৷ফিরে আসার পথে বড় গণেশ দর্শন করে এলাম |পাশেই খাবারের হোটেল সেখানেই খেয়েদেয়ে রাতে শুয়ে পড়লাম৷সকাল ছটায় স্নান করে শাড়ি পড়ে তৈরি হয়ে চলে গেলাম মন্দিরের উদ্দেশ্যে ৷বড় গনেশ মন্দিরের পাশ থেকে পনেরশো টাকা দিয়ে জলাভিষিকের জন্য টিকিট কেটে দুজনে লাইন দিলাম ৷খুব বেশি ভিড় ছিল না ৷লাইনে দাঁড়িয়ে মনে হল আমি তো ফুল বা প্রসাদ কিছুই হাতে করে আনিনি কি হবে শুধু গর্ভগৃহে প্রবেশ করলে জলটুকু দিয়ে বাবার অভিষেক করতে পারব ৷ ঠিক তখনই মন্দিরের ভেতর থেকে একজন পুরোহিত বেরিয়ে এসে লাইনে দাঁড়ানো সকলের হাতে ফুল এবং বেলপাতা ধরিয়ে দিয়ে গেলেন ৷খুব ভালোভাবে বাবার জলাভিষেক করলাম বাইরে বেরিয়ে এসে মন্দির চত্বরটা ঘুরে দেখে নিলাম।

এরপর আমরা বেরিয়ে গেলাম উজ্জয়িনী শহরের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থান ঘুরে দেখতে ৷প্রায় ঘন্টা চারিক সময় লাগলো উজ্জয়নীর বিভিন্ন স্থান দেখতে ৷এবার এসে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম ৷বিকেল বেলায় হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম রামঘাটে শিপ্রা নদীর তীরে ৷ সেখান থেকে হেঁটে চলে এলাম হর সিদ্ধি মাতার মন্দিরে ছটা নাগাদ ৷ সাতটা থেকে আরতী শুরু ৷ একটা বটগাছের নিচে গুছিয়ে বসলাম আরতী দেখব বলে ৷সন্ধ্যে সাতটায় শুরু হলো আরতি ৷ অপূর্ব দৃশ্য সেই আরতির ৷তাড়াতাড়ি চলে এসে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম৷রাত একটাই উঠে স্নান করে তৈরি হয়ে নিয়ে দুটোর সময় বেরিয়ে গেলাম মন্দিরের উদ্দেশ্যে ৷গিয়ে দেখি আমরা সব থেকে পেছনে রয়েছি এবং সেটা আমার জন্য খুব ভালো হয়েছে ৷শুনেছিলাম গ্যালারির একদম শেষে বসলে আরতির দর্শন নাকি খুব ভালোভাবে হয়। ঘটনাচক্রে সেই শেষেই বসলাম। সেই ব্রহ্ম মুহূর্ত এল শুরু হলো বাবার আরতি ৷মহিলাদের এই আরতি দেখতে দেওয়া হয় না, আমরা সকলেই ঘোমটা দিয়ে নিলাম ৷আরতি শেষ হলো এক অপার্থিব আনন্দ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম |

আজ উজ্জয়নীর গল্প শেষ আজ আমরা চলে যাব ওঙ্কারেশর এর দিকে ৷

উজ্জয়িনী কিছু হোটেলের নাম জানাচ্ছি যেগুলো একদম মন্দিরের কাছে। হোটেল নমন প্যালেস, হোটেল মান সরোবর ,হোটেল শিব সাগর এন এক্স , শিখর দর্শন ,হোটেল বিজয় প্যালেস , মিলন হলিডে |