Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.


Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.

Churn : Universal Friendship
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Churn : Universal Friendship Log in

PEACE , LOVE and UNITY


descriptionলেপাক্ষী Lepakshi Emptyলেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
লেপাক্ষী : পর্ব ১


১৯১০ সাল| হ্যামিল্টন সাহেব ঘোড়ায় চড়ে চলেছেন| লন্ডনের নাম করা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার তিনি| পুরোনো সব গথিক আর রোমান স্থাপত্য এবং তাদের স্ট্রাকচার নিয়ে তাঁর অগাধ জ্ঞান| এখন ইন্ডিয়াতে এসেছেন এদেশের পুরনো মন্দির-টন্দির নিয়ে কাজ করতে| আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া থেকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে| এদেশে এসে দেখলেন, নেটিভরা বহু কোটি মন্দির বানিয়ে রেখেছে সারা দেশ জুড়ে| সেসব জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ করে যেতে হচ্ছে| রেনেসাঁরও অনেক আগে এদেশে লোকজন বিশাল বিশাল অট্টালিকা আর মন্দির তৈরী করে গেছে| মাঝে মাঝে অবাক-ও লাগে তাঁর| তা কিছুদিন হলো, দিব্য দক্ষিন ভারতের ব্যাঙ্গালোর নামের ছোট্ট হিল-স্টেশনে সামারটা কাটাচ্ছিলেন, বাদ সাধলেন এএসএই-এর ডিরেক্টর| তাই তাঁকে ছুটতে হচ্ছে দেড়শ কিলোমিটার দুরে কোন এক ধ্যাড়ধেড়ে অনন্তপুরম গ্রামে| সেখানে নাকি একটা মন্দির ভেঙে পড়বে পড়বে করছে| এত্তো মন্দির, একটা ভাঙ্গলেই বা কি? যাই হোক, অর্ডার ইজ অর্ডার| সোলার হ্যাট চাপিয়ে চললেন সাহেব| মন্দির সারাতে| অনেক দুরের পথ| সঙ্গে তাঁর আসিস্টান্ট আর সাঙ্গপাঙ্গরাও চলেছে|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
[You must be registered and logged in to see this link.]

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
১৫২৬ সাল| ১৪৫০ শকাব্দ| বিজয়নগর সাম্রাজ্য তখন গোটা দক্ষিন ভারতে হিন্দুদের কাছে নতুন আশা-ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে|মধ্যযুগ| দিল্লীতে ইব্রাহিম লোধি| গোটা ভারতবর্ষকে মুসলিমরা কব্জা করেছে| শান্তির বাণী ইসলাম| কিন্তু হিন্দু মুসলিম মিলিয়ে তখন বেশ অশান্তিই চলছিল| হিন্দুরাও আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে নিজেদের ধর্ম আর সংস্কৃতিকে যবনের হাত থেকে বাঁচানোর| এইসব গন্ডগোলের মধ্যেই ভারতীয়রা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাপারটা বুঝতে শিখছিল আস্তে আস্তে | এই একই সময়ে, আমাদের বাংলাদেশে চৈতন্য মহাপ্রভু উদ্বাহু হয়ে নেচে বেড়াচ্ছেন গৌড়বঙ্গ থেকে উড়িষ্যা| মানুষকে নতুন করে ভালোবাসতে শেখাচ্ছেন| কিন্তু আমরা যত কষ্টে, যত রক্তে কিছু শিখি, সেটা ভুলতে খুব বেশি কষ্ট করি না| তাই আবার নতুন রক্ত দিয়ে সেটা শিখতে হয়| যেমন ধরুন…. না থাক, ওরা আবার এন্টিন্যাশনাল বলবে! যাই হোক, যা বলছিলাম| যদিও শাসকের ধর্ম নেই, তারা তবুও বেহেস্তে যাবার আশায় এদেশে শাসন করছে| লুঠপাঠ করছে তার থেকে বেশি| মুঘলরা তখনো ভারতে আসে নি| সম্রাট বাবর তখন আফগানিস্তানে পাথর ভেঙে, বরফ কেটে, পাহাড়-পর্বত ডিঙিয়ে দিল্লী আসার চেষ্টা করছেন| মুসলিম সুলতানরা গোটা দেশে শাসন করলেও, কর্ণাটকের কাছে বিজাপুর পেরোলেই তাঁদের দৌড় শেষ হয়ে যেত| কোনভাবেই তুঙ্গভদ্রা নদী পেরোতে পারেনি তারা| তুঙ্গভদ্রার তীরেই বিজয়নগর সাম্যাজ্য| দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করছেন রাজা কৃষ্ণদেব রাও| মুসলিম শাসনে অত্যাচারিত হয়ে নানা জায়গা থেকে হিন্দুরা এসে আশ্রয় নিচ্ছে বিজয়্নগরে এসে| সারা সাম্রাজ্য জুড়ে তৈরী হচ্ছে অসংখ্য মন্দির| রাজা কৃষ্ণদেব রাওয়ের সভাসদ দুই ভাই, বিরুপান্ন আর বিরন্ন| এরা পেনুকন্ডা নাম একটা অঙ্গরাজ্যের শাসক| বিরুপান্ন ছিলেন রাজা কৃষ্ণদেবের প্রধান কোষাধ্যক্ষ| পেনুকন্ডা রাজ্যের মধ্যে অনন্তপুরম গ্রাম| পৌরানিক যুগে অগস্ত্যমুনির আশ্রম ছিল এখানে| স্কন্দপুরানেও উল্লেখ আছে| শিবের দিব্যক্ষেত্র এখানে| এখানেই শিবের ক্রোধ থেকে জন্ম নিয়েছিল আরেক দেবতা বীরভদ্র| বিরুপান্ন আর বিরন্নর বড় ইচ্ছে এখানে একখান মন্দির বানাবেন| বীরভদ্রের মন্দির| সে মন্দিরের খ্যাতি দূর দুরান্তে ছড়িয়ে যাবে| শুধু দরকার অর্থবল| রাজা কৃষ্ণদেবকে বলেওছেন তাঁরা| কৃষ্ণদেবের সম্মতির অপেক্ষা শুধু| কিন্তু বিধি বাম| কৃষ্ণদেব দেহ রাখলেন| নতুন রাজা হলেন অচ্যুতদেব রাও| আবার দুই ভাই অচ্যুতদেবকে পেশ করলেন নিজেদের বাসনা| অচ্যুতদেব নিজেও হিন্দুদের রক্ষাকর্তা| তা মন্দির বানাতে তাঁর সম্মতি পাওয়া গেলো| লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন| বলে দিলেন, কোষাগার থেকে টাকা নিয়ে বানাও তোমাদের মন্দির| দুই ভাই উত্সাহের সঙ্গে শুরু করে দিলেন মন্দির বানানোর কাজ| দেশ জুড়ে শ্রেষ্ট স্থপতিদের আনা হলো| শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের ডাকা হলো| হই হই কান্ড তখন অনন্ত্পুরম গ্রামে| দুই ভাই ফিরে এলেন রাজধানী থেকে দুরে, পেনুকন্ডাতে| সেখানে একটি দুর্গ ছিল| সেই দুর্গেই থাকতেন দুই ভাই| এখান থেকে তিরিশ ক্রোশ দুরে শুরু হয় মহীশূর রাজ্যের সীমানা| কিছুদিন আগেই সেখানকার রাজারা অনন্তদেবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন| মহীশূর রাজ্যের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে অনেক দুর্গ তৈরী হয়েছে| ওই গ্রামগুলোকে বলা হয় “বেঙ্গাওয়াল-উরু” বা প্রহরীদের গ্রাম| প্রহরীদের এক নেতা কেম্পে গৌড়ার সাহসিকতা আর বীরত্বের খবর সারা বিজয়নগর আর বিজাপুরের মানুষের জানা| এমন দুর্দিনে বিরুপান্ন বা বীরন্নর বেঙ্গাওয়াল-উরুর কাছে গিয়ে থাকাটা রাজা মোটেই ভালো চোখে দেখলেন না| তাছাড়া রাজনীতি বড় কঠিন ঠাই| বিরুপান্ন আর বিরন্নোর বিরুদ্ধে রাজার কান ভারী করার লোকের অভাব হলো না| দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়| রাজকোষ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকাও যায়| এভাবে বেশ একটা দশক পেরোতে থাকে| অচ্যুত্দেব পরাক্রমী রাজা| বিজাপুরের সুলতানদের ক্ষমতা হয় না বিজয়নগর জয় করে মুসলিম রাজ্য বানাবে| এদিকে অন্য সভাসদরা রাজাকে বলে, মন্দিরের হলটা কি? রাজাও জিগেস করেন| বিরুপান্ন বলেন “এই তো মহারাজ হলো বলে, সবই তৈরী| শুধু কল্যানমন্তপের কাজটুকুই যা বাকি”| কিন্তু রাজার কাছে খবর আসে, এত টাকা খরচ করে বানানো হয়েছে একটা ভাঙ্গাচোরা মন্দির| তার থামগুলো সোজা করেও বানাতে পারে নি স্থপতি| তাতে আবার নানা নক্সা কাটা| তার ওপর ছাদে কোনো কারুকাজ নেই| চিত্রকর ডেকে নাকি শুধু কিছু ছবি আঁকানো হয়েছে| এসব শুনে রাজা একদিন বলেন “হিসেব দেখি কোষাগারের”| হিসেব দেখে রাজার চক্ষু চড়কগাছ| বলেন “তবে রে… এত টাকা খরচা করে ভাঙ্গা মন্দির! দে ব্যাটা বিরুপান্নর চোখ দুটো গেলে”| খবর পৌছায় অনন্তপুরমে| বেচারা বিরুপান্ন| ঠিক করে বোঝাতে পারেন না মন্দির বানাতে এত খরচ কেন হয়েছে| কিন্তু তিনি জানেন একটা তাম্রমুদ্রাও বাজে খরচ করেন নি তিনি| এই কয়েক বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন মন্দির| রাজা তাঁর প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছেন| কিন্তু তিনি নিজে জানেন আনুগত্য তাঁর শিরায় শিরায়| মনের দুঃখে ছুটে যান মন্দিরের কল্যাণমন্তপে| নিজেই নিজের চোখ দুটো উপড়ে ছুড়ে ফেলেন দেওয়ালে| সেই ভাঙাচোরা মন্দির পাঁচখানা শতাব্দী পার করে আজও দাঁড়িয়ে আছে| দেওয়ালে এখনো রক্তের দাগ দেখা যায়| শুধু সেই নির্মীয়মান কল্যানমন্তপখানি আজও তৈরী হয় নি| বাকি মন্দির কিন্তু দাঁড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
পুরাকাল| ত্রেতা যুগ| সাল জানি না| রাবণ সীতাদেবীকে কিডন্যাপ করে পুষ্পকরথে করে শ্রীলংকার দিকে চলেছেন| অরুণপুত্র জটায়ু, তা দেখতে পায়| জটায়ুর কাকা ছিলেন গরুড়| জটায়ুর দাদা সম্পাতি ছিলেন দশরথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু| কাজেই তিনি রাম, লক্ষণ বা সীতাকে বিলক্ষণ চেনেন| সীতাকে উদ্ধার করতে উড়ে যায় পুষ্পক রথের দিকে| দশাননের সঙ্গে অনিবার্য যুদ্ধ| সেই বীরত্বের কাহিনী রামায়নে লেখা আছে| রাবনের খড়গের আঘাতে জটায়ুর ডানা কাটা গিয়েছিল| বেচারা ভাঙ্গা ডানার আহত পাখি এসে পড়ল মাটিতে| পরে রাম আর লক্ষণ যখন সীতাকে খুঁজতে খুঁজতে আহত জটায়ুকে দেখতে পান| জটায়ুর কাছ থেকেই তাঁরা সীতার হদিস জানতে পারেন| এর পরে রাম জটায়ুকে বলেছিলেন, “লে পক্ষী”| এর মানে নাকি “ওঠো পাখি”| তাই থেকে এই জায়গাটার নাম হয় লেপাক্ষী| লে হালুয়া…. ভাগ্যিস রামচন্দ্র আর কিছু বলেন নি|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
পুরাকাল| সাল তারিখ সময় ঘেঁটে গেছে| রয়ে গেছে “ওয়ান্স আপন এ টাইম” দিয়ে শুরু হওয়া মুখে মুখে ফেরা মানুষের গল্প, যাদের আমরা বলি, কিংবদন্তি| কিংবদন্তি – এই শব্দটা আমার ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো লাগে| এই শব্দটার মধ্যেই কেমন যেন হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের ভালবাসার খারাপবাসার কাহিনীগুলো মিলেমিশে যায়| লেপাক্ষী মন্দির নিয়েও এরকম অনেক কিংবদন্তি রয়েছে| স্কন্দপুরাণ, অগস্ত্য সংহিতা এবং শিবপুরাণে এই জায়গার উল্লেখ আছে| অর্থাত এই জায়গাটা নিয়ে গল্পকথা অনেকদিনের| এখুনি হয় তো কেউ বলে উঠবেন, “পুরাণে আছে যখন, তা আবার গপ্পকথা হলো নাকি? সেডা তো নির্ভেজাল সইত্য”| হে জনমেজয়, কান খুলে শুনে নাও, পুরাণ হলো আসমুদ্রহিমাচল ভারতবর্ষের শত-সহস্র জনগোষ্ঠির সঞ্চয় করে রাখা লক্ষ লক্ষ কিংবদন্তির সংকলন| পুরাণ শব্দের মানে হলো প্রাচীন| পুরাকালের ঘটনা| আমরা কথায় কথায় বেদ-পুরাণ পেড়ে আনি| যুক্তিতে না কুলালেই তেড়ে দুটো গালাগাল দিয়ে বলি “এসব ব্যাদে আর পুরাণে আছে”| যেহেতু দুই পক্ষের কেউই কোনদিন বেদ বা পুরাণ চোখে দেখেনি, তর্কটা এখানেই থেমে যায়| বেদে কিংবা পুরাণে আছে যখন! বেদ আর পুরাণ কিন্তু টেকনিক্যালি একদম আলাদা| বেদ হলো শ্রুতি| আর পুরাণ হলো স্মৃতি| শ্রুতি, অর্থাত যা শুনেছ| সেটা শুনে কী ভেবছ, কী বুঝেছো তার থেকেও বড় কথা কী বলেছো, বা ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছো.. এগুলো গুরুত্বপূর্ণ নয়| জাস্ট যা শুনেছ তাই| অর্থাত এখানে নিজের বুদ্ধি, কল্পনা, আবেগ এসব লাগাতে যেও না, যা শুনেছ পরের জনকে পাস করে দাও| আর অন্যদিকে পুরাণ হলো স্মৃতি| আমাদের স্মৃতি আমাদের কল্পনা, আবেগ, ভালবাসা, অনুভূতিগুলোকে ছুঁয়ে থাকে| আমাদের জীবনের সব ঘটনা স্মৃতি হয়ে থেকে যায় না| কতো কিছু ঘটনা ঘটে| তারপর আমাদের পক্ষপাতিত্ব, কল্পনা, অনুভূতি- সেই ঘটনায় প্রলেপ লাগায়| কত ঘটনা স্মৃতিতে বদলে যায় বা বিস্মৃতির আড়ালে হারিয়ে যায়| আবার একই ঘটনা এক একজনের স্মৃতিতে এক একরকমভাবে থাকে| পুরাণ আসলে তাই| পুরাণ নিয়ে লিখতে বসলে এখন অনেক কথা চলে আসবে, ছন্দোগ্য উপনিষদ থেকে হরনাথ শাস্ত্রী — সেসব লিখতে লিখতে একটা গোটা মহাভারত হয়ে যাবে| ও, হ্যা, মহাভারতও আসলে একটা পুরাণ, এর আর এক নাম ইতিহাসপুরাণ বা জয়া| পৌরানিক গল্পগুলো বিভিন্ন পুরাণে বিভিন্নভাবে ফিরে ফিরে আসে| ছোটবেলাথেকেই শুনে আসছি, পুরাণ লিখেছেন ব্যাসদেব| মানে আমাদের চিরপরিচিত মহাভারতের রচয়িতা ব্যাসদেব| তখন থেকেই ভাবতাম, ব্যাসদেব বেচারা একা মানুষ, কত কিছু লিখবেন! না হয়, হাতে ব্যথা হবে বলে, গনেশের হেল্প নিয়েছিলেন| তাই বলে, আঠেরো পর্বের মহাভারত লেখার পর আঠারোটা মহাপুরাণ আর, গুচ্ছখানেক উপপুরাণও লিখবেন? তারপরে আবার চারখানা বেদ লিখে তিনি বেদব্যাস| তখনো ছাপাখানা আবিস্কার হয়নি বলে যা খুশি তাই! পরে জেনেছি, ব্যাসদেব কোনো একজন মানুষ নয়| ব্যাস কথাটার মানে হলো সঙ্কলক বা কম্পাইলার| যিনিই এই পুরাণ বা বেদ সংকলন করতেন, তিনিই ব্যাসদেব| ঋষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া গল্পগুলোকে জোড়া লাগিয়ে জয়া বা ইতিহাসপুরাণ লিখেছিলেন| সেটার সঙ্গে আরো অনেক অনেক গল্প যোগ করে তাঁরই শিষ্য বৈশ্যম্পায়ন “মহাভারত” সংকলন করেন| এঁরা সবাই এক একজন ব্যাস| তা, যেটা বলছিলাম| স্কন্দপুরাণ আর শিবপুরাণে লেপাক্ষীর উল্লেখ| সেই যে সেই দক্ষযজ্ঞ লেগেছিলো পুরাকালে! মেয়ের বর হিসেবে চালচুলাহীন গাঁজাখোর শিবঠাকুর মোটেও দক্ষরাজার ফার্স্ট চয়েস ছিলেন না| তিনি মেয়ের বিয়ে দেবেন সফিস্টিকেটেড রাজা-মহারাজার সঙ্গে, অথবা স্কলার ব্রাহ্মণ কিংবা ডাক্তার, নিদেন পক্ষে অনসাইট ফেরত সফ্টওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হলেও কথা ছিল| তা বলে ব্যোমভোলে শিব! কিন্তু অবাধ্য মেয়ে সতী শিবঠাকুরকেই বরমাল্য দিয়ে বসলো| সেইসব গল্প সবার জানা| সতী অনাহুত হয়েই গিয়েছিলেন বাপের বাড়ি| দক্ষ তখন বিরাট এক যজ্ঞ আয়োজন করেছেন| শিব ছাড়া সব দেবতা সেখানে নিমন্ত্রিত| সতী দক্ষরাজের যজ্ঞ থেকে আর ফেরেননি| দক্ষরাজের গঞ্জনায় আগুনে আত্মাহুতি দেন তিনি| সেই অনার কিলিং-এর ভয়াবহ খবরটা গেলো শিবের কানে| রাগে, শোকে শিব পাগল হয়ে উঠলেন| তাঁর সেই রুদ্ররূপ থেকে জন্ম নিলেন বীরভদ্র| তিনি শিবেরই আর এক অবতার| বায়ুপুরাণের বর্ণনায়, বীরভদ্রের মুখ ছিল অতি ভয়ংকর, শরীর অগ্নিশিখায় ব্যাপ্ত, প্রকাণ্ড উদর ও দীর্ঘ দন্ত। পোশাক ছিল ব্যাঘ্রচর্ম। এর হাতে ছিল বহু অস্ত্রশস্ত্র । মানে সহজ কথায় যেরকম দেখতে হলে সবাই ভয়-টয় পাবে আর কি| বীরভদ্র শিবের অনুচর নন্দীকে নিয়ে চললেন প্রতিশোধ নিতে| তাঁর ক্রোধের সামনে কেউ দাঁড়াতেই সাহস পেল না| স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল কেঁপে উঠলো| পুরো যজ্ঞক্ষেত্র বীরভদ্র একাই ভেঙ্গেচুরে ছারখার করে দিলেন| অন্য সব দেবতাদের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না| ডাইরেক্টরের সামনে জুনিয়র সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়াররা যেরকম করে দাঁড়ায় আর কি| বীরভদ্র শিব ঠাকুরের অবতার, মানে তিনি দেবতাদের বোর্ড অফ ডিরেক্টরসে ভেটো মেম্বার| চুন্নু-মুন্নু দেবতারা তাঁর সামনে খড়কুটোর মতো ভেসে গেলেন| সূর্যদেবের দাঁত ভেঙে দিলেন, ভগদেবের চোখ গেলে দিলেন| টিম লিডার ইন্দ্র কিছু বলতে গেছিলেন, বীরভদ্র পাতি তাঁকে তুলে আছাড় মেরে দিলেন| অতএব, বোর্ডের বাকি দুজন পাওয়ারফুল মেম্বার ফিল্ডে নামলেন| বিষ্ণু তুলনামূলক ইয়ং ডিরেক্টর| তার ওপর দক্ষরাজ বিষ্ণুর পরম ভক্ত| দক্ষকে বাঁচাতে সরাসরি ডুয়েল লড়ার চ্যালেঞ্জ দিয়ে বসলেন বীরভদ্রকে| তারপর শুরু হলো হরি-হরের যুদ্ধ… ভয়ানক সে যুদ্ধ| পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে এলো|স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল কেম্পে উঠলো| সৃষ্টি বোধয় ধ্বংস হয় হয়| কিন্তু হরি-হরের যুদ্ধ থামে না| কেউ কারুর থেকে কম যান না| ইনি ওনাকে একটা দৈবঅস্ত্র ঝাড়েন, তো উনি দশটা| এভাবেই চলতে থাকে| ব্রহ্মা, বুড়ো মানুষ, মানে ইয়ে দেবতা, দুজনকেই বুঝিয়ে সুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন| কিন্তু কে শোনে কার কথা| শেষে বিষ্ণু যখন কোনভাবে বীরভদ্রকে হারাতে পারলেন না, তখন ছাড়লেন তাঁর চরমতম অস্ত্র – সুদর্শন চক্র| কিন্তু বীরভদ্র তাতেও কাবু হবার পাত্র নন| খপাত করে সুদর্শন চক্রটাকেই গিলে ফেললেন| বিষ্ণু পড়লেন বিপাকে| বুঝলেন বীরভদ্রকে হারানো তাঁর কাজ নয়| ওদিকে বীরভদ্রও বুঝলেন, বিষ্ণুকে যুদ্ধে হারানো সম্ভব নয়| তাই যুদ্ধের মধ্যেই, সুযোগ পেয়ে দক্ষের ধড় থেকে মুন্ডুটি আলাদা করে দিলেন| হরি-হরের যুদ্ধের কোনো মীমাংসা হলো না| তবে যাকে নিয়ে যুদ্ধ সেই যখন থাকলো না আর যুদ্ধ করে হবেটা কী? হাসতে হাসতে বললাম বটে গল্পখানা, পৌরানিক কাহিনীগুলোতে অনেক সময় অনেক বড় দার্শনিক ভাবনা লুকিয়ে থাকে| লৌকিক গল্পগুলোর মধ্যে ঘুমিয়ে থাকে অনেককিছুই| পৌরানিক মতে, সৃষ্টির শুরু থেকেই শিব এবং বিষ্ণু – এক জন অন্যজনকে ছাড়া সম্পূর্ণ নন, অথচ শিব আর বিষ্ণুর মধ্যে অনেকবার যুদ্ধ হয়েছে| আসলে প্রতিনিয়ত সেই হরি-হরের যুদ্ধ চলে| সংস্কৃতভাষা দিয়ে তাত্পর্য বিচার করে দেখলে, হরি কথাটার মানে সৃষ্টি| হর কথার মানে ধ্বংস| বিষ্ণু, কথাটা এসেছে ‘বিষ’ ধাতু থেকে, যার অর্থ হলো ব্যাপ্ত করা বা পূর্ণ করা (বিষল্যত্ ব্যাপ্তৌ ইতি: বিষ্ণুSmile | আর শিব? শব্দটা এসেছে “শ্বি” ধাতু থেকে, যার অর্থ শূন্য বা খালি| শিব আর বিষ শব্দে, অক্ষরগুলোর উচ্চারণ বা ফোনেটিক্সগুলো উল্টো করে সাজানো (shiv-vish)| আসলে এরা কেউই কাউকে ছাড়া পূর্ণ নয়| তাই শিব আর বিষের মধ্যে এই লড়াইচিরন্তন — ভেতরে এবং বাইরে| নাল সেট আর ইউনিভার্সাল সেটের মধ্যে ভাব এবং আড়ি — এ ফিলোসফি আপনারাই বুঝে নিন| আমি বরং অন্য একটা তথ্য দিই| বীরভদ্র আর বিষ্ণুর মধ্যে যুদ্ধ চলাকালীন বীরভদ্র কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়েছিলেন এক কুর্মশৈলর(কচ্ছপের মতো দেখতে পাহাড়)ওপরে| সেই কুর্মশৈলর ওপরে তিনি নিজেই শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন| সেই কুর্মশৈলের অবস্থান? আজকের লেপাক্ষী|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
[You must be registered and logged in to see this link.]

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
পাহাড় ঘেরা পথ ধরে আমরা এসে পৌছলাম লেপাক্ষী বীরভদ্র মন্দিরের সামনে| না, ঠিক সামনে বলা যাবে না, বলা উচিত পাদদেশে| কারণ ছোট্ট একটা পাহাড়ের ওপরে মন্দিরে| গাড়ি থেকে নেমে ভালো করে চেয়ে দেখলাম, ছোট্ট পাহাড় না বলে, এটাকে একটা বড় পাথর বললেই বেশি মানাবে| এএসআই এর বাকি সমস্ত সাইটগুলোর মতই মন্দিরটি বেশ ছিমছাম| সামনে জুতো রাখার জায়গা|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
উত্তেজিত হয়ে মন্দিরের ভেতরে ঢুকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তার কারুকার্য দেখছে| প্রথম দর্শনে সত্যি-ই তেমন আহামরি কিছু লাগে না মন্দিরটিকে| বিজয়নগর সাম্রাজ্যের আমলে এরকম স্টাইলে অসংখ্য মন্দির তৈরী হয়েছে| এগুলো দেখতে অনেকটা মাথা-কাটা পিরামিডের মতো, যার বেস বা ভূমি আয়তক্ষেত্র| প্রকান্ড সিংহদ্বার| তার পরেই একটা ছোট্ট ঘর, প্রবেশপথ বলা যায় ঘরটাকে| বড় বড় অফিসের রিসেপশন যেরকম হয় আরকি| সেই ছোট ঘর পেরিয়ে একটা প্রকান্ড হলঘর| হলঘর পেরিয়ে মূল মন্দিরের গর্ভগৃহ, যেখানে পুজো হয়| ভেতরে কারুকাজ করা থাম| থামগুলো কোনটাই ঠিক সোজা নয় – একটু ট্যারাবাঁকা| থামগুলো যেখানে মাটির সঙ্গে লেগেছে, সেখানটায় বড় বড় ফাটল| ছাদটা ভেঙে পড়বে না তো! থামগুলোর দিকে ভয়ে ভয়ে তাকালাম| কিন্তু একটু সময় ধরে থামগুলোর দিকে তাকাতে তাকাতে বুঝলাম এগুলো ঠিক সাধারণ থাম নয়| তার ওপর পাথরে খোদাই করা নানা মূর্তি| সেই মুর্তিগুলো এতটাই নিঁখুত যে মনে হয় জীবন্ত| নৃত্যরত কয়েকটা নারীমূর্তি এতোটাই সুন্দর, মনে হবে যেন আমাদের সামনে লাইভ পারফরমেন্স চলছে| এক একটা থাম এক একটা করে পৌরানিক কাহিনী বলছে| কোনটায় বীরভদ্র আর বিষ্ণুর যুদ্ধ, কোনটায় নটরাজ নৃত্যের তালে তালে, কোনটায় নৃসিংহ আর হিরন্যকশিপুর, কোনটায় কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের মহড়া — এরকম প্রতিটা থাম যেন আলাদা আলাদা গল্প বলছে| পাঁচশো বছর ধরে সেই পাথরগুলো অনেক গ্রীষ্ম-বর্ষা-দুঃখ-কষ্ট-আনন্দ সয়ে সয়ে রং বদলে ফেলেছে, অনেক মূর্তির হাত-পা-শরীর কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে… তবু তারা আজও জীবন্ত| প্রীতম, দেবলিকা, আর ইউপা যে যার নিজের মতো করে মন্দিরের সৌন্দর্যগুলো আঁজলা ভরে চোখে-মুখে-বিস্ময়ে মেখে নিচ্ছে| আমিও নিজের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছি| আমার গলায় ক্যামেরা| টুক টুক করে ছবি তুলে যাচ্ছি| আজকাল সবাই খুব ফোটোগ্রাফি বোদ্ধা, তাই এসএলআর ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে ঘোরে| আমিও তাই| অনেকটা এমু পাখির মতো ক্ষুদ্র মস্তিস্ক আর বৃহৎ চোখ নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মতো| তবে আশেপাশে তাকালেই বোঝা যায়, এখন ফটোগ্রাফারের আসল ডেফিনিশন হলো “যার একটা মোবাইল ফোন আছে”| আর বেশিরভাগ ফটোগ্রাফারের সাবজেক্ট সে নিজে, যাকে সেলফি বলে| কিছুদিন পরে অবশ্য মানুষ ফটোগ্রাফি বলতে সেলফি-ই বুঝবে| আর তখন কেউ কেউ ‘আদারসি” তুললে তাদের নিয়ে বাকিরা হাসাহাসি করবে| আমি যদিও সেলফি তুলতে পারি না| কারণ দুটো| এক, আমার বিশ্বাস আমাকে দেখতে বেশ খারাপ, আর দুই, আমার কামেরার লেন্সগুলোকে একশো আশি ডিগ্রীতে ঘোরালে ভেঙে যাবে| আমার সেই ‘আদারসি’ ক্যামেরায় মন্দিরের অসীম সৌন্দর্যকে বন্দী করার অপারগ চেষ্টা করে চলেছি| বড় হলঘরটা থেকে প্রবেশপথের সোজাসুজি মন্দিরের গর্ভগৃহ| আর ডানদিক বাঁদিক খোলা| মন্দিরের বাইরের দিকে একটা বিশাল শিবলিঙ্গ আছে| সেই শিবলিঙ্গকে জড়িয়ে একটা প্রকান্ড সাপ| না না সত্যিকারের সাপ নয়, পাথরের| অনেকগুলো ফনা সেই সাপের| ফনা তুলে শিবলিঙ্গকে ছায়া দিচ্ছে সেই সাপ| এটা বেশ অদ্ভুত লাগলো| কেন লাগলো জানি না, তবে মনে হলো এমন অদ্ভুত শিবলিঙ্গ আমি দেখিনি| তা সে হতেই পারে| আমি আর কটা শিবলিঙ্গ দেখেছি? শিব ঠাকুর নিজের ভক্তদের লিস্ট বানালে, আমার নামটা সেখানে কোনভাবেই থাকবে না| শিব কেন, চন্দ্রগুপ্তের খাতাতেও থাকবে না| নরকে যদি ‘ইনফার্নোর’ মতো সিস্টেম থাকে, তাহলে আমি জানি তার তৃতীয় এবং ষষ্ঠ বৃত্ত আমার জন্য তৈরী আছে| অন্তত, দান্তে তাঁর ‘ডিভাইন কমেডিতে’ স্পষ্ট বলেছেন পেটুক আর নাস্তিকদের জন্য নরকের এই দুটো জায়গা বরাদ্দ থাকবে| কাজেই আমার এরকম শিবলিঙ্গ দেখা বা না দেখায় কিছুই আসে যায় না| কিন্তু ভালো লাগে| একটাই পাথরকে কেটে গোটা সাপটা বানানো| সেই প্রকান্ড শিবলিঙ্গ পেরিয়ে, এগিয়ে গেলাম| অর্ধেকটা তৈরী হওয়া একটা মন্ডপ| আমাদের সঙ্গে একটা ছোট গ্রুপ একটা গাইড ভাড়া করেছিল| গাইড কান্নাড়া ভাষায় তাদেরকে অনেককিছুই বোঝাচ্ছিলেন| আমার কান্নাড়া ভাষার দৌড় ওই ওন্দু, এরেদু, মুরু পর্যন্ত| তবে আমার ধারণা আজকাল খুব সামান্য একটু একটু বুঝতে পারি| সাবটাইটেল ছাড়া কান্নাড়া গাইডের কথায় হালকা বুঝতে পারলাম, এই জায়গাটা হলো কল্যানমন্তপ| কল্যানমন্তপে যজ্ঞ, বিয়ে, সামাজিক অনুষ্ঠান -এই সব হয়| বীরভদ্রস্বামী দক্ষ-যজ্ঞ পন্ড করতে এসেছিলেন| সেই মিশনের কথা মাথায় রেখে নাকি অভিশাপ দিয়েছিলেন এই মন্দিরে কোনদিন কল্যানমন্তপ তৈরীই হবে না| যাক খুব আনন্দ সহকারে শুনলাম সেসব| বাকি তিনজনকে উত্সাহ ভরে ব্যাপারটা বললাম| ওরা বললো “দেখ, তুই তো কান্নাড়া ভাষা বুঝিস না, কাজেই গাইডটা আসলে কি বলেছে সেটা না ভাবাই ভালো| আমরা বরং তোর গল্পটাকেই মেনে নিলাম”| হায়, এদের কীভাবে বোঝাবো, ‘কবি কী বলতে চেয়েছেন’ সেটা কবি ছাড়া কোনো মানে-বইয়ের জানার কথা নয়| শুনেছিলাম, কবি জসীম উদ্দীন একটু বেশি বয়েসে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর নিজের লেখা কবিতাই পরীক্ষার সিলেবাসে ছিল| আমি হলফ করে বলতে পারি, উনি সেই পরীক্ষাতেও “কবি কি বলতে চেয়েছিলেন” লিখে ফুল মার্কস পান নি| এই মুর্খ তিনজন আর কী বুঝবে? আমি আবার ছবি তুলতে মন্দিরে ফিরে এলাম| একটা থামে তরোয়াল হাতে এক ঘোড়-সওয়ারের মূর্তি খোদাই করা| সেটার ছবি তুলতে আমি অন্য একটা থামে হেলান দিয়ে অ্যাঙ্গেল ঠিক করার চেষ্টা করছি, এমন সময় পেছন থেকে ইউপা বলে উঠলো “সৌম্যদা, তুমি যে পিলারটায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছো, সেটা না মনে হয় মাটিতে লেগে নেই, কেমন যেন ঝুলছে”| আমি তো তড়াক করে লাফিয়ে সরে এলাম| বলে কি!
লেপাক্ষী Lepakshi Screen11

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
১৯১০ সাল| হ্যামিল্টন সাহেব যন্ত্রপাতি নিয়ে বীরভদ্র মন্দিরে মাপাজোখ করছেন| মন্দিরটা যেকোনো মুহুর্তে ভেঙে পড়ল বলে! এই মন্দিরে সত্তরখানা স্তম্ভ আছে| সেই সত্তরটা পিলার দিয়ে মন্দিরের এত্তো বড় ছাদ আর চূড়া দাঁড় করানো আছে| মন্দিরে চারটে মন্ডপ বা সেকশন আছে| তার মধ্যে একটা সেকশন তৈরী হয়নি| প্রথমে হ্যামিল্টন সাহেব ভেবেছিলেন ওটা বোধয় ভেঙে গেছে| পরে ভালো করে পরীক্ষা করে বুঝলেন, না, ব্যাটারা বানানোই শেষ করেনি| বাকি তিনটে সেকশন পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে| পিলারগুলো মনোলিথিক, মানে একটাই পাথর কেটে বানানো|পিলারের ওপর এত ভালো খোদাই করা মূর্তি উনি ইউরোপের বড় বড় প্রাসাদেও দেখেন নি| সেকসনগুলোর একটা হলো প্রবেশপথের লাগোয়া এন্টিচেম্বার| লোকাল লোকজন বললো অর্ধমন্ডপ| এর পর মেইন-সেকশন, যাকে নেতিভরা বলে “মুখ্য মন্ডপ” বা “রঙ্গ মন্ডপ”| আর শেষে স্যাঙ্কটাম বা “গর্ভগৃহ”| এদের মধ্যে সবথেকে সুন্দর অবশ্যই মেইন-সেকশনটা| প্রতিটা পিলার ভারী সুন্দর| যে পিলারগুলো এত ভারী একটা ছাদের ভার বহন করেহ্ছে, সেগুলো নিয়ে এত কারুকার্য করার সাহস পায় কি করে এরা? হঠাতই সাহেবের চোখ আটকে গেলো একটা পিলারের ওপর| পিলারটা ছাদ থেকে ঝুলছে! মাটি থেকে প্রায় এক ইঞ্চি উপরে এসে শেষ হয়ে গেছে পিলারটা| তার ওপর পিলারটা বেঁকে আছে| এই রে! নির্ঘাত, মন্দির তৈরী হবার পর কখনও ভূমিকম্পে এই ব্যাপারটা হয়েছে! মাটি থেকে পিলারটা ছেড়ে গেছে| বাকি উনসত্তরখানা পিলার একেবারেই যথেষ্ট নয় এত বড় ছাদটাকে ধরে রাখার জন্য| এক্ষুনি এই পিলারটাকে ঠিক করতে হবে| না হলে বিপদ| ভেঙে পড়বে চারশো বছরের পুরনো এই স্ট্রাকচারটা| উনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলেন| রিপোর্ট পাঠালেন এএসআইএর সদর দপ্তরে| সেখান থেকে নির্দেশ এলো, “সারিয়ে ফেল মন্দিরটা, টাকাপয়সা নিয়ে সমস্যা হবে না| রানী স্বাধীন ভাবে কাজ করার অধিকার দিয়ে রেখেছেন এএসআইকে”| হ্যামিল্টন সাহেবও লেগে পড়লেন লোকজন নিয়ে মন্দির ঠিক করতে| পিলারটাকে সোজা করার চেষ্টা করলেন সাহেব| কিন্তু যত সহজ ভেবেছিলেন ব্যাপারটা মোটেও তা নয়| পুরো মন্দিরের পিলারগুলোতে কিভাবে লোড ডিস্ট্রিবিউশন হয়েছে বোঝা যাচ্ছে না| পিলারটাকে ছাদ থেকে খুলে মাটিতে সোজা করে লাগানো যেতে পারে| সেই মতো অস্থায়ী থাম বসিয়ে চেষ্টা করতে গেলেন সাহেব| যে মুহুর্তে সেই ঝুলন্ত বাঁকা পিলার একটু নড়ে উঠলো, হুড়মুড় করে ছাদটা নিচের দিকে নেমে এলো| ফাটল দেখা গেলো অন্য পিলারগুলোতে| আর সেই ঝুলন্ত পিলারখানি আরো একটু বেঁকে গিয়ে মাটিকে প্রায় স্পর্শ করলো| সাহেব তাঁর ফর্সা টাকে হাত বুলিয়ে চুরুট ধরালেন| ব্যাপারটা তাঁর জ্ঞানের বাইরে| প্রবীন আর্কিটেক্ট এটুকু বুঝলেন এই পিলারটিকে সামান্য আর এদিক ওদিক করলে ছাদটা ভেঙে যাবে| এই ঝুলন্ত পিলারটিই কোনো অদৃশ্য শক্তিতে ছাদখানিকে ধরে রেখেছে| আরো অদ্ভুত ব্যাপার, ছাদের সঙ্গে কিভাবে জোড়া রয়েছে এই এত ভারী পাথরের পিলার! এটা কোনো যুক্তিতে ব্যাখ্যা করা যায় না| তাঁর এই সব কান্ডকারখানার পরেও পিলারটি এখনো মাটিকে স্পর্শ করেনি| শুধু নেমে এসেছে নিচের দিকে | পিলারটির তলায় একদিকে এখনো এক ইঞ্চি গ্যাপ, অন্য দিকে কয়েক মিলিমিটার| খস খস করে কাগজে রিপোর্ট লিখলেন “এই মন্দিরের মেইন-চেম্বারে একটি পিলার রহস্যজনক ভাবে ঝুলছে, সেটিকে কোনরকম মেরামত করা হলে ছাদখানি ভেঙে পড়বে| এই রহস্যের সমাধান আধুনিক বাস্তুকারিগরীবিদ্যার পক্ষে করা সম্ভব নয়”| মন্দিরের মধ্যেই সাহেব ক্লান্ত চোখে ছাদের দিকে তাকালেন| দেখলেন অসাধারণ সব মুরাল পেইন্টিং উঁকি দিছে শত শত বছরের ধুলোর আস্তরণের ভেতর থেকে| স্পষ্ট বুঝলেন, এই ছবিগুলোর সাইজ এবং স্টাইল টেক্কা দিতে পারে যেকোনো ইউরোপিয়ান আর্টিস্টের কাজকে|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
থামটা সত্যি ঝুলছে| তলা দিয়ে কাপড় গলানো যায়| ভালো করে দেখলাম| নাহ এটা সত্যি বেশ চাপের ব্যাপার| একটা গাম্বাট থাম সেটা নাকি ছাদ থেকে ঝুলে রয়েছে! আর সেই ছাদের নিচে আমরা| ছাদটা ভেঙে পড়লে কী হবে? ভয়ে ভয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে আবার চমকালাম| কত রঙ্গীন ছবি| পাঁচশ বছর আগে কোনো শিল্পী প্রাকৃতিক রং দিয়ে এঁকেছেন শিব-পার্বতীর বিয়ে, দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ, মনুনিধিরাজার ন্যায়ধর্ম –এরকম কত কী| বিশাল বিশাল ছবি, গোটা ছাদ জুড়ে| আমি সিস্টিন চ্যাপেলে মাইকেল এঞ্জেলোর আঁকা ছাদ দেখিনি| তবে তার ছবি দেখেছি| মনে হয় এতটুকু বাড়িয়ে বলছি না, পাঁচশো বছর ধরে কোনো রক্ষনাবেক্ষণ ছাড়া বীরভদ্র মন্দিরের ছাদে প্রায় নষ্ট হতে থাকা আঁকা ফ্রেস্কোগুলো, আমার ছবিতে দেখা সিস্টিন চ্যাপেলের থেকে কোনো অংশে কম নয়| রঙের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে গেছে, এখানে ওখানে কালো দাগ…তবু সেগুলো বড় সুন্দর|

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
পুরাকাল| আগেই বলেছি ১৫৪০ সাল নাগাদ বিরুপান্নর বীরভদ্রস্বামী মন্দির তৈরীর আগে থেকেই এই জায়গাটার গুরুত্ব ছিল| স্থানীয় লোকজন জায়গাটার নাম নিয়ে আরো একটা গল্প বলেন| বিরুপাক্ষ নিজেই নিজের চোখ উপড়ে ফেলে দিয়েছিলেন অর্ধেক তৈরী হওয়া কল্যাণমন্ডপে| তাই “লোপ অক্ষি” থেকে জায়গার নাম হয় লেপাক্ষী| যদিও পড়াশুনো করতে করতে দেখতে পাচ্ছি, বেশ কিছু পৌরানিকগল্পে (বিশেষত স্কন্দপুরানে) পঞ্চদশ শতাব্দীর অনেক আগে, এই জায়গাকে লেপাক্ষী নামেই উল্লেখ করা হয়েছে| তার মানে “লোপ অক্ষি” থেকে লেপাক্ষী ব্যাপারটা হোয়াটসঅ্যাপে আসা ফরওয়ার্ড করা মেসেজগুলোর মতো| তাই আমার বরং জটায়ুর “লে পক্ষী” ফান্ডাটাই বেশি পছন্দ হয়েছে| রামচন্দ্র হঠাত ফরাসীদের মতো “le পক্ষী” বললেন কেন জানি না| সংস্কৃতভাষায় “লে” বলে কেউ কাউকে সম্বোধন করে বলে শুনিনি| অবশ্য আমি সংস্কৃতভাষায় কাউকেই সম্বোধন করতে শুনিনি| স্কুলে সংস্কৃতস্যার ক্লাসে “ভো বালক” বলে ডাক ছাড়তেন, এইটুকুই| ক্লাস এইটে পঁচাশি পাওয়া এই আমার সংস্কৃতের অগাধ জ্ঞানভান্ডারকে হেলাফেলা করার নয়| অফিসের এক তেলুগু সহকর্মীর থেকে কনফার্ম করলাম, তেলুগু ভাষায় লে মানে হলো ওঠো| বোঝো কান্ড! রাম এসে জটায়ুর সঙ্গে তেলুগু ভাষায় কথা বলছিলেন! রামচন্দ্র না রাজনীকান্থ ? সত্যজিতের জটায়ু হলে নির্ঘাত বলতেন, “বলেন কি মশাই, এ যে তেলেগুতে তুলকালাম”| প্রদোষ মিত্তির গম্ভীর গলায় বলতেন “লালমোহনবাবু, প্রথমত কথাটা তেলে-গু নয়, তেলুগু| তেলঙ্গম বা ত্রি-লিঙ্গম থেকে শব্দটা এসেছে| কালেশ্বরম, শ্রীশৈলম আর ভীমেশ্বরম – এই তিনখানা পাহাড়কে পুরনো সংস্কৃততে একসঙ্গে ত্রি-লিঙ্গম বলা হতো| এই তিনপাহাড়ের মাঝখানের উপত্যকা ছিল ত্রিলিঙ্গদেশ| এখন সেটাই তেলেঙ্গানা| দ্বিতীয়ত রাম শুধু সংস্কৃতে কথা বলতেন সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই| বারোশ থেকে পনেরশ’ সালের মধ্যে অন্তত পনেরোটা ভারতীয় ভাষায় রামায়ণ অনুবাদ করা হয়েছে| ভারতের বাইরে আরো চার-পাঁচটা ভাষায়| এছাড়া বৌদ্ধ এবং জৈনদের নিজস্ব রামায়ণ রয়েছে| যদিও বলছি অনুবাদ, আসলে সেগুলো প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা রামায়ণ| যারাই রামায়ণ অনুবাদ করেছেন, তারাই চরিত্রগুলোকে, জায়গাগুলোকে, ঘটনাগুলোকে নিজেদের মতো করে রিফর্ম করে লিখেছেন| স্থানীয় মানুষ তাই গল্পগুলোর সঙ্গে একাত্ম হতে পারে| ঠিক সরাসরি অনুবাদ করেন নি কেউ| তাই রামায়ণ সারা ভারতে এতো জনপ্রিয়| আর সেজন্য সারা ভারত ঘুরলে আপনি অন্তত কুড়িখানা জায়গা পাবেন, যেখান থেকে সীতাকে অপহরণ করা হয়েছিল, বা রাম সুগ্রীবের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন| তেরশো সালে তেলুগুতে রামায়ন লেখেন গনাবোদ্দা রেড্ডি| অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা বা কর্ণাটকের বিভিন্ন গল্পে সেই রামায়নের রেফারেন্স পাওয়া যায়|” লালমোহনবাবু বলতেন “আরিব্বাস, কি কান্ড! রামায়নের এত কান্ড! আমি তো ভাবতাম মাত্র সাতটাই কান্ড ছিল!” ফেলুদার আরো বলতে ইচ্ছে করতো “বুঝলি তোপসে, ভাগ্যিস সেটা পাঁচ-সাতশ বছর আগে, তাই সবাই নিজের মতো করে রামায়ণকে ভেঙে-গড়ে লিখতে পেরেছে| আজকালকার দিন হলে কেন অন্যভাবে রামায়ণ লিখে বাল্মীকির অপমান করা হলো দাবী তুলে কিছু লোক বালতি হাতে ধরনা দিতো, লেখকের কুশপুতুল দাহ করত, বেচারা কাম্বান, কেভূম্পু কিংবা কৃত্তিবাসকে, রামায়ণ লেখা ছেড়ে ভিসার জন্য দৌড়ঝাপ করতে হতো|” এই শেষ কথাটা অবশ্য ফেলুদা বলেননি| পারফেকশনিস্ট সত্যজিত রায় কোনোভাবেই ফেলুমিত্তিরকে দিয়ে এরকম বেফাঁস বিতর্কিত মন্তব্য করবেন না| তোপসে ভাবতো, “ঔফ এই ছেলেটা গল্পের জন্য আমাদের টেনে এনে বোরিং ফান্ডা দিচ্ছে, তার থেকে যে গল্পটা বলছিল সেটাই বলতে পারে!” লে জটায়ু| সপ্তর্ষিমন্ডলের একজন হলেন মহামুনি অগস্ত্য| উনি নাকি বিন্ধ্য পর্বতকে মাথা নিচু করতে বলে এই লেপাক্ষীতে আশ্রম বানিয়ে ছিলেন| স্থাপন করেছিলেন এক শিবলিঙ্গ| সেই শিবলিঙ্গ এখনো বীরভদ্র মন্দিরের গর্ভগৃহের তলায় রয়েছে| বীরভদ্র নিজে একটি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন| পরবর্তীকালে রাম জটায়ুকে মুক্তি দিয়ে যখন এই কুর্মশৈলের ওপর আসেন, উনি শিবের আরাধনা করার জন্য আরো একটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করেন| তার পরবর্তীকালে রাম-রাবনের যুদ্ধ যখন শেষ, হনুমান এই জায়গায় আসেন এবং আরো একটি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন| আরো একখানা শিবলিঙ্গ এখানে আছে| সেটি হলো স্বয়ম্ভু| অর্থাত নিজে থেকেই সেটি এখানে মাটি ফুঁড়ে উঠেছে| অর্থাত মোট পাঁচটি শিবলিঙ্গ রয়েছে এই লেপাক্ষীর কুর্মশৈলতে| এছাড়া মন্দিরেরে গর্ভগৃহে বীরভদ্র এবং বিষ্ণুর মূর্তি আছে| রাম এখানে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন, কারণ এখানে তিনি সীতার পায়ের ছাপ দেখেছিলেন| গনাবদ্দা রেদ্দির তেলুগু রামায়ণ অনুযায়ী, জটায়ুর সঙ্গে যুদ্ধ সেরে রাবণ এখানে কিছুক্ষণ রথ থামিয়েছিলেন| রাবণ ছিলেন পরম শিবভক্ত| তিনি এখানে শিবকে প্রনাম করে যান| সে ফাঁকে সীতা রথ থেকে নামেন| তাঁর পায়ের চিহ্ন পাথরে আঁকা হয়ে যায়| রাম সেটা দেখতে পান| সেই সীতার পদচিহ্ন আজও এই মন্দিরে দেখা যায়| সেটা পুন্যলোভাতুরা হিন্দুদের কাছে পরম দর্শনীয় জিনিস| সেই পায়ের চিহ্ন পাথরের মধ্যে গর্ত হয়ে আঁকা আছে| সেখানে পাথরটি সবসময় ভেজা থাকে| কোনদিন সেই পাথরের ভেজা দাগ শুকায় না| শুকনো কাপড়ে মুছে দিলে, কিছুক্ষণের মধ্যে পাথরটি আবার ভিজে ওঠে| যদিও সেই পায়ের চিহ্নটি এত বড় যে সীতা পায়ের সাইজ নিয়ে আমার মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের ঝড় থামে না| এত বড় পায়ের ছাপ ইয়েতির হলেও হতে পারে, তাই বলে সীতার! শিবলিঙ্গগুলির মধ্যে স্বয়ম্ভুলিঙ্গ যেটি, সেটা গর্ভগৃহে নেই| মন্দিরের বাইরের দিকে আছে| তাকেই বেষ্টন করে পাথরের সাপ| প্রকান্ড সেই সাপ| কথিত আছে, মন্দিরের যেসব স্থপতিরা কাজ করছিলেন তাদের মধ্যে কিছু কিশোর ছিল| লাঞ্চ টাইমে তাদের মা খাবার বানাতে দেরী করছিল| ওরা নাকি কেহ্লতে খেলতে শিবলিঙ্গের চারিপাশ থেকে পাথর কাটতে শুরু করে, এবং খাবার তৈরী হবার আগেই শিবলিঙ্গকে বেষ্টন করে ফনাতলা সাপ তৈরী করে ফেলে, এবং সেটা একটাই পাথর কেটে| সত্যি, মায়েরা মাঝে মাঝে এত ধীরে খাবার রান্না করেন যে বলার নয়! এই রকম সর্পবেষ্টিত শিবলিং সারা পৃথিবীতে একটাই আছে| কারণ শিবের গলায় বাসুকীসাপ থাকেন| শিবলিঙ্গকে জড়িয়ে সাপ তার ফনা দিয়ে সেই শিবলিঙ্গকে আড়াল করে রেখেছে, এটা কোন পৌরানিক কাহিনী সমর্থন করে না| শোনা যায় পুরোহিত এইরকম অলুক্ষুনে স্থাপত্য ভেঙে দেবার কথা বলেছিল| কিন্তু শিল্পের নিরিখে কাজটা এতটাই ভালো ছিল যে বিরুপান্ন সেটিকে ভাঙ্গতে দেন নি| ভাগ্যিস!

descriptionলেপাক্ষী Lepakshi EmptyRe: লেপাক্ষী Lepakshi

more_horiz
privacy_tip Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum
power_settings_newLogin to reply