Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.


Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.

Churn : Universal Friendship
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Churn : Universal Friendship Log in

PEACE , LOVE and UNITY


description বীরভূমের মামা ভাগ্নে পাহাড় Mama Bhagne Pahar Birbhum Empty বীরভূমের মামা ভাগ্নে পাহাড় Mama Bhagne Pahar Birbhum

more_horiz
বীরভূমের মামা ভাগ্নে পাহাড় ও ছয় সতীপীঠ (মতান্তরে পাঁচ সতীপীঠ ও এক সিদ্ধপীঠ)

সূচিপত্র ----->
১) মামা ভাগ্নে পাহাড়
২) বক্রেশ্বর (সতীপীঠ)
৩) সাঁইথিয়া (সতীপীঠ)
৪) লাভপুর (সতীপীঠ)
৫) কঙ্কালীতলা (সতীপীঠ)
৬) তারাপীঠ (সতীপীঠ / মতান্তরে সিদ্ধপীঠ)
৭) নলহাটি (সতীপীঠ)
_________________________________________________

-----------> আজকের কথা <-------------
১) মামা ভাগ্নে পাহাড়

আমার বাড়ি থেকে মাত্র ২২ কিমি. দূরে, গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত দুবরাজপুর এর নিকট একটি পাহাড় রয়েছে, যা মামা-ভাগ্নে পাহাড় নামে বিখ্যাত বীরভূম জেলার একমাত্র পাহাড়!!
এই ট্রিপে উৎসাহ আমার খুব বেশি, কারণ আমার মনের ইচ্ছা আমি সমস্ত সতীপীঠ দর্শন করবো । তাই মনের এই ইচ্ছাকে বাস্তবে রুপ দেবার জন্য ধীরে ধীরে সব সতীপীঠ দর্শন করছি!! আর এই বীরভূম এমন এক স্থান যেখানে একসাথে অনেকগুলো সতীপীঠ রয়েছে । সতীর অঙ্গের কিছু অংশ এই জেলার বেশ কিছু স্থানে পতিত হয়েছে এবং গড়ে উঠেছে বিশেষ বিশেষ পীঠ ।
যার মাহাত্ম্য কথা শুনলে সত্যিই মন ভরে যায়!!

মায়ের প্রণাম মন্ত্র, মায়ের রুপ, মায়ের দর্শনে যেন ভরে ওঠে। আত্মতৃপ্তি অনুভূত হয়!!

এবার আসি মামা ভাগ্নে পাহাড়ের কথায়, পৌঁছালাম তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে ‌। দেখলাম লোকজন খুব একটা বেশি নেই । গুটি কয়েক মেয়ে সেলফি তুলছে, ছেলেদের একটা দল আড্ডা দিচ্ছে উঁচু পাথরে বসে । আর মহিলাদের একটা দল মেয়েগুলোর সাথেই রয়েছে, আর তাছাড়া কিছুজন মন্দিরে বসে । পাহাড়েশ্বরী মা । দেবী কালি । এখানে দেবী কালী স্থানীয় মানুষের কাছে শ্যামাঙ্গী দেবী নামে পরিচিত!

✓ পৌরাণিক মাহাত্ম্য কথা ------>

পৌরাণিক মাহাত্ম্যের কথা এই পাহাড়ে গেলেই শোনা যায় এবং যা বীরভূমের সকলের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়!
শোনা যায় যে, রাম যখন সীতা উদ্ধারে লঙ্কা যাত্রা করেন তখন হিমালয় থেকে সেতু বন্ধের পাথর রথে করে আনা হচ্ছিল । সেসময় কিছু পাথর পড়ে 'মামা ভাগ্নে' পাহাড়ের সৃষ্টি (কিংবদন্তী প্রচলিত রয়েছে এমনই) ।
অপর একটি পৌরাণিক সূত্রে জানা যায় দেবতা বিশ্বকর্মা মহাদেব শিবের আদেশে দ্বিতীয় কাশী নির্মাণ করছিলেন এক রাত্রির মধ্যে । সেই সময় পড়ে যাওয়া পাথর থেকেই সৃষ্টি হয় মামা ভাগ্নে পাহাড় ।

মামা ভাগ্নে পাহাড়ের মধ্যেই রয়েছে পাহাড়েশ্বরী দেবীর যোনীপীঠ । মনে করা হয় এই যোনীপীঠ আসামের কামরুপ কামাখ্যার মতোই! (অবশ্য এটি স্থানীয় বিশ্বাস) ।

মামা ভাগ্নে পাহাড় থেকে নীচে নেমে এসে পাহাড়েশ্বর পার্ক!
পার্কটি বেশ বড়ো এবং সুন্দর । শিশুদের জন্য সেখানে অনেক ব্যবস্থা রয়েছে এবং বড়োদের জন্যেও কিছু মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা রয়েছে ।

[সবশেষে কিছু কথা, যার উল্লেখ করা খুব দরকার --- "মামা-ভাগ্নে পাহাড়" যার পৌরাণিক মাহাত্ম্য এত, যা বীরভূমের সকলের প্রিয় স্থান এবং আশেপাশের জেলাতেও যার পরিচিতি রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণমূলক স্থান হিসেবে; তাই এই স্থানকে দৃশ্যদূষণ করার এবং কামার্ত মনোভাব থেকে চাহিদা পূরণের স্থান হিসেবে গড়ো তোলোনা । খুব খুব বাজে । যাচ্ছেতাই কিছু ব্যাপার চোখে পড়েছে, যা কোনোভাবেই কোনোদিন কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয় ।]

description বীরভূমের মামা ভাগ্নে পাহাড় Mama Bhagne Pahar Birbhum EmptyRe: বীরভূমের মামা ভাগ্নে পাহাড় Mama Bhagne Pahar Birbhum

more_horiz
পাথরের দেশ দুবরাজপুরে
#Dubrajpur

দুবরাজপুর নামটার সাথে আমার প্রথম পরিচয় সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার মাধ্যমে। 'রবার্টসনের রুবি' গল্পটার কথা মনে পড়ে। সারা গল্পটাই কিন্তু এই জায়গার প্রেক্ষাপটে লেখা। তখন থেকেই মনের মধ্যে 'মামা ভাগ্নে' পাহাড়ের জন্য এক আকর্ষণ সৃষ্টি হয়ে গেছিল বোধহয়।

চাকরি পরিবর্তনের সুবাদে জুন মাসের শেষের দিকে প্রায় এক সপ্তাহ মত একটা ছুটি পাওয়া গিয়েছিল। তা থেকে দিন তিনেকের জন্য বরাদ্দ করলাম সপরিবারে তারা মায়ের কাছে পুজো দিয়ে আসার জন্য। সাথে বক্রেশ্বরটাও ঘুরে আসবো। তখনই মাথায় এলো বক্রেশ্বরের খুব কাছেই তো দুবরাজপুর।

অতএব শুরু হলো internet এ অনুসন্ধান। সব খোঁজাখুঁজি করে দেখলাম, হাওড়া থেকে একমাত্র হুল এক্সপ্রেসই আছে যেটা ভোরবেলা ছেড়ে মোটামুটি সাড়ে দশটা নাগাদ সরাসরি দুবরাজপুর পৌঁছে যায়। তারপর দুবরাজপুর থেকে গাড়ি ভাড়া করে দিনে দিনে মামা ভাগ্নে পাহাড় ও বক্রেশ্বর দেখে তারাপীঠে চলে আসা যায়।

সেইমত এক শনিবার ভোরবেলা আমরা অর্থাৎ বাবা, মা, আমি, আমার অর্ধাঙ্গিনী ও আমার ছোট্ট মেয়ে সবাই মিলে চেপে বসলাম হুল এক্সপ্রেসে। সকালের স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় মনেই হচ্ছিল না যে এটা গ্রীষ্মকাল। গরমের মালুমটা হলো ট্রেন থেকে নাবার সময়ে AC থেকে বেরোনোর পর। ট্রেন থেকে নাবতেই আমাদের অভ্যর্থনা করার জন্য গরম হওয়াটা যেন ঝাঁপিয়ে পড়লো। যাই হোক গরম সম্পর্কে মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলাম তার সঙ্গে বেড়ানোর আনন্দে আমাদের ধাতস্থ হতে খুব একটা সময় লাগলো না।

দুবরাজপুর স্টেশনটা কিন্তু একেবারে ছোট্ট একটা স্টেশন। স্টেশন থেকে বেরিয়েই দেখলাম বেশ কিছু গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে থেকেই একটা মারুতি omni বুক করা হলো । এখানে বলে রাখা দরকার স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটু এগোলেই taxi stand আছে। হয়তো সেখানে ভাড়া আরো কিছুটা কম হত। কিন্তু প্রথমবার তাই আমাদের জানা ছিলো না। গাড়ি ছুটতে শুরু করলো পাথর রাজ্য মামা ভাগ্নের দিকে।

আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন এতক্ষণ ধরে আমি যে এই মামা-ভাগ্নের কথা বলে যাচ্ছি আসলে এরা কি? কি এদের বৈশিষ্ট? বলছি বলছি .... শুনুন তাহলে। 'মামা - ভাগ্নে' আসলে দুটি বিশালাকার পাথরের নাম। পাথরের আবার নাম!!! এ আবার কিরকম কথা? হয় হয় পাথরেরও নাম হয়, যদি তারা বিখ্যাত পাথর হয়। মামা ভাগ্নের খ্যাতি balancing rock হিসাবে। balancing rock মানে একটি পাথরের উপর আরেকটি পাথর রয়েছে কিন্তু তাদের intersection area খুব ছোট ও সরু। অথচ ওরা একে অপরের উপর যুগযুগ ধরে দাঁড়িয়ে আছে। এই পাথুরে মামা ভাগ্নেকে দেখতেই আমরা এখন দুবরাজপুরের ঘিঞ্জি রাস্তার মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছি।

প্রায় একঘন্টা চলার পর আমরা এসে পৌঁছলাম মামা ভাগ্নে পাহাড়ের তলায়। একটা মজার ব্যাপার আসার পথে আর কোথাও কিন্তু এরকম পাহাড় দেখতে পেলাম না। মনে হয় যেন কোন শক্তিমান এসে এখানে একরাশ পাথর ফেলে এই পাহাড়ের সৃষ্টি করেছে। দুবরাজপুরের সাথে জড়িয়ে থাকা পৌরাণিক কাহিনীটাও কিন্তু সেই কথাই বলে। কথিত আছে সেতু বন্ধনের সময় রামচন্দ্র স্বর্গ থেকে এই রাস্তা দিয়েই পাথর নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এখানে এসে তার পক্ষীরাজ ঘোড়াগুলি ক্লান্ত হয়ে পরে। তাই তিনি এখানে কিছু পাথর ফেলে রেখে যান। আবার ভিন্ন মতে বলে শিব ঠাকুর বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে এই স্থানে একরাতের মধ্যে দ্বিতীয় কাশী তৈরি করতে বলেন। কিন্তু বিশ্বকর্মা ঠাকুরের পাথর জোগাড় করতে করতেই ভোর হয়ে যায়। তাই তিনি পাথরগুলি এখানে ফেলে রেখেই অন্তর্হিত হন। সেই থেকেই এখানে পাথরগুলো স্তূপাকার হয়ে এই পাহাড়ের সৃষ্টি করেছে।

গাড়ির রাস্তা পাহাড়ের তলাতেই শেষ। তারপর পাথুরে রাস্তায় বেশ খানিকটা চড়াই উঠে পৌঁছাতে হয় মামা ভাগ্নের কাছে। সারা রাস্তাটা ঢেকে রেখেছে উঁচু উঁচু গাছ। তাই জুনে মাসের দুপুরেও পথ চলতে খুব একটা কষ্ট হলো না। যদিও এখানে মামা ভাগ্নেরই বেশি নামডাক, কিন্তু লক্ষ করলাম সারা জায়গাটাই একটা পাথরের উপর আরেকটা পাথর সাজিয়ে তৈরি হয়েছে। প্রত্যেক পাথর একে অপরের উপর balance করে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন এরা কিভাবে বছরের পর বছর এইভাবে দাঁড়িয়ে আছে।

পথ চলতে চলতে মাঝে মাঝেই চোখে পড়ছে মাথায় পাতা বা কাঠের বোঝা নিয়ে চলেছে স্থানীয় মানুষজন। তাদের থেকেই পথের হদিস নিয়ে পায়ে পায়ে এগিয়ে চললাম। ঠান্ডা হাওয়া, পাখির ডাক, নির্জনতা আর প্রকৃতির নিজের তৈরি বিশাল বিশাল পাথরের ভাস্কর্য দেখতে দেখতে এক সময় চলে এলাম পাহাড়ের একদম ওপরটাতে। এখানেই রয়েছে আমাদের কাঙ্খিত মামা-ভাগ্নে পাথর। মামা ভাগ্নের পাস থেকে গোটা জায়গাটার একটা সুন্দর bird's eye view পাওয়া যায়। অপূর্ব সেই দৃশ্য। মন ভরে ছবি তুলে আস্তে আস্তে নাবতে শুরু করলাম।

এই পাহাড়ের পাদদেশে আছে পাহারেশ্বর শিবের বিশালাকার মন্দির। মন্দিরের ভিতর পাহাড়েরই দুটি শিলাকে শিব ও পার্বতীরূপে পূজা করা হয়। পুরোহিত জানালো এই শিলা দুটি নাকি আজও বেড়ে চলেছে আকারে। আমরা পুজো দিয়ে বাইরে এসে গেলাম পাশ্ববর্তী বজরংবলীর মন্দিরে। এখানেও মূর্তি পাহাড়ের একটি শিলা। মন্দির দর্শন শেষ করে কিছুক্ষণ সুশীতল গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিয়ে যাত্রা শুরু হলো বক্রেশ্বরের উদ্যেশ্যে। সে গল্প আরেকদিন হবে।
privacy_tip Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum
power_settings_newLogin to reply