খুবই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া মানুষদের শখ আহ্লাদের একটা সূক্ষ্ম রেখা থাকে, যেটা অজান্তেই গ্রো করে এবং টপকাতে সাহস হয় না। খুব ছোট থেকেই অর্থ উপার্জনের ইঁদুর দৌড়ে নেমে এরা নিজেদের সব শখ আহ্লাদ অচিরেই ভুলে থাকতে পারে। কেউ কেউ সামান্য অর্থ জমিয়ে বয়স্ক বাপ, মা, অবিবাহিত বোন, দিদি, ভাইয়ের জন্যে দু'মুঠো খুশি আনতে আনতেই জীবনের অর্ধেক কাটিয়ে দেয়। কেউ খুশি থাকে, কেউ বা থাকে না। ভ্রমণ একটি বিলাসিতা। চতুর্দিকে এত মানুষকে প্রতিনিয়ত দেশ বিদেশ ঘুরতে যেতে দেখে কষ্ট পাওয়াই স্বাভাবিক। যারা বছরে একবারও মনের মত জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন, তারা সত্যিই সৌভাগ্যবান বা সৌভাগ্যবতী। কেউ দীঘা, কেউ দার্জিলিং , কেউ বা সুদূর ইওরোপ, আমেরিকা। প্রত্যেকের কাছে তার নিজের ভ্রমন স্থান খোলা জানালার মত। হু হু করে হিমেল হাওয়া আসে তাদের জীবনে। সেই হিমেল হাওয়া জীবনের সব গ্লানি নিমেষে শুষে নেয়। সেই হাওয়া কখনও দীঘা, কখনও দার্জিলিং বা কখনও ব্যক্তিবিশেষে ইউরোপে বয়। আমি আপনি কেউ নই বলার জন্যে যে যোগ্য ভ্রমণকারীর জন্যে সিকিম রইলো, আর যারা অযোগ্য তাদের জন্যে দীঘা। দুবেলা অন্ন জোগাতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কেউ যদি বাগবাজারের ঘাটে গিয়েও শান্তি পায়, সেটাই তার প্রাপ্তি। খোলা জানালা সবার প্রয়োজন। মহামারীর উত্তরকালে এই উপলব্ধি আমাদের সবার হয়েছে। তাই দীঘায় হানিমুন করতে গেলে আর তাকে দেখে মিম বানাবেন না। সেটাই তার শখ। সেটাই তার জানালা, সেটাই তার ইউরোপ।