দিগারদী গ্রাম : পুরুলিয়ার বরাভূমে নতুন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন - একটি ভ্রমণ গাইড
দিগারদী গ্রাম : পুরুলিয়ার বরাভূমে নতুন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন - একটি ভ্রমণ গাইড 18-04-10
দিগারদী গ্রাম : পুরুলিয়ার বরাভূমে নতুন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন - একটি ভ্রমণ গাইড 18-04-11
দিগারদী গ্রাম : পুরুলিয়ার বরাভূমে নতুন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন - একটি ভ্রমণ গাইড 18-01-10
দিগারদী গ্রাম : পুরুলিয়ার বরাভূমে নতুন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন - একটি ভ্রমণ গাইড 17-59-10

বসন্তের পলাশ মানেই পুরুলিয়া । পলাশ দেখার নেশায় মন চাইলো পুরুলিয়া যেতে । সারা পুরুলিয়াতেই তো পলাশের উৎসব । কিন্তু বেশী হৈচৈ বড়ান্তি নিয়ে । মন চাইলো পলাশ দেখতে পুরুলিয়া তো যাবোই, কিন্তু একটু অচেনা offbeat এরিয়াকে কেন্দ্র করে পলাশের অভিযানে সামিল হলাম । একই ট্যুরিস্ট স্পট নয় একটু নতুনত্বের ছোঁয়া থাকবে আর একটু নিরিবিলি ।

নেট সার্চ করে পেয়ে গেলাম দিগারদী গ্রাম । সেটা কোথায়?

পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের একটি গ্রাম দিগারদী, বরাভূম স্টেশন থেকে মাত্র ১৩ কিমি । হোমস্টে ও আছে । ভোলা ঘোটুয়ালের । পাখি পাহাড়ের নীচেই পলাশ আর মুহুয়ার মধ্যে । খুব বেশী লাক্সারি টাইপ নয়, কিন্তু আতিথেয়তায় খুব আন্তরিক । পুরুলিয়ার কোনো গ্রামে এমন সুন্দর হোমস্টে, প্রশংসার যোগ্য ।

আগের দিন রাতের ট্রেন ধরে পরদিন সকালে বরাভূম স্টেশনে নেমে ভোলাদার পাঠানো অটোতে (চালক কার্তিকদা ছিলো আমাদের সারাদিনের গাইড, অমায়িক ব্যবহার) হোমস্টেতে এসে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে পাখি পাহাড়ের নীচে পলাশের অভিযানে নেমে পড়লাম । মন ভরে উপভোগ করলাম বসন্তের পলাশ ।

ছবি তুললাম, কিছু পলাশ সংগ্রহও করলাম । দারুন লাগলো বসন্তের লাল ফাগুন ।
এরপর কার্তিকদার অটোতেই বেরোলাম ঘুরতে ।

পাখি পাহাড়, আল্পনা গ্রাম ভাস্কা, পারদী ডাম, গরগাবুরু পাহাড়, মাঠা পাহাড়, খাইরাবেরা ডাম, মুখোশ গ্রাম, টুরগা ডাম এবং ফলস ছিলো আমাদের গন্তব্য । টুরগা ফলসে স্নানও সেরে নেওয়া হলো ।

যেহেতু রাতেই আমাদের ফেরার ট্রেন তাই আর বানদুংড়িতে সজারুর গুহা দেখা হলো না । একদিকে ভালোই হলো, এই বানদুংড়ির টানেই আবার আসবো দিগারদীতে ভোলাদার আস্তানায় ।

বিকেলে ফিরে পাখি পাহাড়ের পাশে খোলা আকাশের তোলায় শালপাতায় লাঞ্চ সেরে একটু রেস্ট নিয়ে নিলাম । রাতের খাবার নিয়ে এরপর আবার আমরা পাড়ি দিলাম বরাভূম স্টেশন । সেখান থেকে ট্রেন ধরে পরদিন ভোরে বাড়ী ।

কিছু কথা:
---------------
১) মার্চ মাস প্রায় শেষ, এবারের মতো পলাশও প্রায় শেষ । আস্তে আস্তে এবার পলাশ ঝরে পড়বে।

২) বর্ষাতে সবুজ পুরুলিয়া দেখতে গেলে দিগারদী কে বেস করে টুরগা ফলস, বামনী ফলস, নীল জলের লেক এবং সর্বোপরি পাখী পাহাড়, মাঠা পাহাড়ে ট্রেককিং করা যায় ।

৩) নভেম্বর থেকে মার্চ পুরুলিয়ার আদর্শ সময় । অযোধ্যা পাহাড়কে কেন্দ্র করে পর্যটকের ভিড় হয়, দিগারদী কে ভালো ভাবে প্রমোট করলে, অযোধ্যা হিলটপে ভিড় কিছু কমবে, বলরামপুরে পাখী পাহাড়ের নীচে ভালো পর্যটন কেন্দ্র দিগারদী ।
একই কথা প্রযোজ্য বসন্তে বড়ান্তির ক্ষেত্রেও । পলাশের নতুন ঠিকানা হয়ে উঠবে দিগারদী গ্রামকে কেন্দ্র করে পর্যটন। (এটা উল্লেখ্য সমগ্র পুরুলিয়ায় হলো পলাশের ভান্ডার)

৪) দুদিন সময় নিয়ে দিগারদী ভ্রমণে যাওয়া সবচেয়ে ভালো, আর পুরুলিয়া যদি আগে না যাওয়া থাকে তাহলে ৩/৪ দিন লাগবে । তবে আমার বার ছয়েক পুরুলিয়া জেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি পুরুলিয়াকে একটা ট্রিপে কখনই ভালোভাবে জানা সম্ভব নয়, বার বার আস্তে হবে, দার্জিলিঙের পর সব চেয়ে বৈচিত্র্যময় হলো পুরুলিয়া ।

৫) যাওয়া এবং আসা:

সবচেয়ে ভালো হাওড়া চক্রধরপুর পাসেঞ্জের ট্রেনে (স্লীপার ক্লাস আছে) বরাভূম স্টেশনে নামা এবং রাতে ফেরার ট্রেনও একই বরাভূম থেকে ।

৬) দিগারদী গ্রামে ভোলা ঘোটুয়ালের হোম স্টে । প্রতিদিন/প্রতিজন ৬০০ টাকা। নাম বানকুঠি হোমস্টে ।
যোগাযোগ : ৯৪৭৪৯৯৬১৫৪ এবং ৮৯৭২১৮২১৭২

#purulia #west #bengal #palash #ayodhya #ajodhya #hill #pakhi #pahar #pakhipahar #digardi #village