সারনাথ যাচ্ছি, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের পীঠস্থান। বাংলার পাল রাজ বংশের গৌরব মিশে আছে এর স্থাপত্যে। আছে দোর্দণ্ডপ্রতাপ সম্রাটের প্রজাপালক হয়ে ওঠার নিদর্শন। অশোক, মাথা কাটা কনিষ্ক (ইতিহাসের বইতে তাঁর মাথা ছিলা না তাই!), আমার প্রিয় সম্রাট বিক্রমাদিত্যের গন্ধ মাখা সারনাথ। বৌদ্ধের পুণ্য ভূমিগুলির অন্যতম এই সারনাথ । সকালে মা অন্নপূর্ণার প্রসাদ খেয়ে সকলে এতো খুশী হয়েছিল যে আর কেউ কিছু খেতে চাইল না ।অটো ছুটে চললো সারনাথের উদ্দেশ্যে……আধ ঘণ্টা থেকে মিনিট চল্লিশের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম। ফা-হি-ইয়েন, হিউয়েন-সাং তারপর আমি। মানে আমার এমনই মনে হল, কি করব বলুন? যা ভেবেছিলাম, তার অনেক বেশি কিছু আছে; গৌতম বুদ্ধ পায়ের ধুলো-রঞ্জিত সারনাথ। ভাবা যায়, আমি এখানে। একজন গাইড কে নিলাম সঙ্গে,
আমরা খুশি মনে যা দেব তাতেই সে রাজি ।সারনাথ সত্যি দারুণ জায়গা একটা পুরোদিন সারনাথের জন্য আপনাকে রাখতেই হবে । আমরা সেটা করি নি । সবার শেষে সারনাথ রেখেছিলাম । তাই সময় বেশি পাই নি । মাএ আড়াই ঘন্টার মধ্যে ঘুরে দেখা । আবার আসব ফিরে মনে মনে এই প্রতিজ্ঞা করে ফিরে আসতে হয়।
এবার আসা যাক কি কি দেখলাম ।
সারনাথে প্রবেশপথের কাছেই রয়েছে ছোট্ট পাহাড়ি টিলার মতো চৌখন্ডি স্তূপ - অষ্টকোণবিশিষ্ট স্তম্ভ। বুদ্ধকে এখানেই তাঁর অনুগামী শিষ্যরা বরণ করে। বাদশাহ আকবর পিতা হুমায়ুনের সারনাথ ভ্রমণকে বরণীয় করে তুলতে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্তূপটির সংস্কার করেন। স্তূপটির নিচের অংশ পাথরের ও উপরের বাকি অংশ জমানো ইটের টুকরো দিয়ে তৈরি। স্তূপটি গড়ে ওঠে আষাঢ় পূর্ণিমায়, বুদ্ধ তাঁর পাঁচ শিষ্যকে যেখানে প্রথম পাঠ দেন সেই পূণ্যস্থানে। জনশ্রুতি রয়েছে, স্তূপের মধ্যে ভগবান বুদ্ধের অস্থি রক্ষিত আছে। মূলগন্ধকুঠি বিহারটি প্রাচীনকালে বৌদ্ধদের প্রথম সংঘ ছিল। গুপ্তরাজাদের গড়া মূলগন্ধকুঠি বিহারের স্থলে শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধভিক্ষু অনাগারিকা ধর্মপালের প্রচেষ্টায় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ৬১ মিটার উঁচু মূলগন্ধকুঠি গড়েছে মহাবোধি সোসাইটি।
আমাদের গাইড বাবাজী আমাদের নিয়ে এল মূলগন্ধকুঠি বিহারে ।সারনাথের অপর আকর্ষণ মহাবোধি সোসাইটি নির্মিত এই আধুনিক বুদ্ধমন্দির। এখানে দেখবেন জাপানের অগ্রণী শিল্পী কসেত্সু নোসুর আঁকা অসাধারণ কিছু ফ্রেস্কো।
এরপর বোধিবৃক্ষ ।শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরা থেকে বোধিবৃক্ষের একটি চারা এনে রোপণ করা হয়েছে। বৃক্ষতলে বেদির ওপর বুদ্ধ মূর্তির সামনে অস্মজি, মহানামা, ভদ্দিয়, ওয়াপ্পা, কোন্দানয় পাঁচ শিষ্যের মূর্তি। বুদ্ধ পূর্ণিমায় বুদ্ধের জন্মোত্সব পালিত হয় মহাসমারোহে। গাইড তার মতো করে বলে চলেছে আর আমরা ওর কথামত সব দেখছি । এখান থেকে ধামেক স্তুপ দেখা যাচ্ছিল ।ধামেক স্তুপের পুরো জায়গাটা দেখার দক্ষিণা পঁচিশ টাকা ।ধামেক স্তুপ ও তাকে কেন্দ্র করে এক বিরাট অঞ্চলে অসংখ্য পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন এক কথায় অতুলনীয় ও চমকপ্রদ । সারনাথের এই অত্যাশ্চর্য স্হাপত্য ও ভাষ্কর্য মুলত ইঁট ও বেলেপাথর দিয়ে তৈরি । এজন্যই আমি আগে বলেছিলাম এখানে না এলে একটা আপশোষ থেকে যেত । মিনিট পঁয়তাল্লিশ ঘোরাঘুরির পর এখান থেকে যখন বের হলাম তখনো মনে হচ্ছে অনেক কিছুই যেন দেখা হলো না । আরও অনেকটা সময় থাকতে পারলে যেন ভালো হতো ।
এবার আমরা এলাম মিউজিয়ামে ।খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে ৫টা, এখানে মোবাইল, ক্যামেরা সব জমা দিতে হবে না কিন্তু ছবি তোলা যাবে না ।মিউজিয়াম দেখার দক্ষিণা ফ্রি,কিন্তু ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুললে 20 টাকা লাগবে, এই মিউজিয়ামটাও দারুণ । এদের সংগৃহীত সামগ্রী এক কথায় অতুলনীয় ।
গাইড আমাদের নিয়ে একটু দূরে জাপানি টেম্পল দেখাতে নিয়ে এল । আরও একটা টেম্পলও দেখলাম । ওটাও খুব সুন্দর আর এটাকেও জাপানি টেম্পলই বলা হয় । এগুলো হয়ে যাবার পর পাশেই একটা বাড়িতে নিয়ে গেল যেখানে বেনারসী শাড়ির দোকান ও ফ্যাক্টরি আছে । সে বলল, এখানে আপনারা বেনারসী শাড়ি ইত্যাদি দেখতে পারেন । এখানে জি এস টি লাগে না তাই দামটা একটু কম পড়ে । আমরা বারবার বললাম যে আমরা কিছু কিনব না । এই দোকান থেকে বেরিয়ে আবার আমরা মূলগন্ধকুঠি বিহারের সামনে এলাম।গাইডের ঘোরানো শেষ ।এখান থেকে বেরিয়ে আমাদের ড্রাইভারকে ডেকে গাড়িতে উঠে পড়লাম । সারনাথ দেখা শেষ করে ফিরে এলাম । ফেরার সময় একটু বেশি সময় লাগল রাস্তায় জ্যাম থাকার ফলে রাস্তায় আসতে আসতে দেখছিলাম বারাণসী শহর ,গোধূলিয়া মোড়ে চিরপরিচিত যানজট পেরিয়ে,ছ'টার কিছু পরে দশাশ্বমেধ ঘাটে সরাসরি পৌঁছে গেলাম সন্ধ্যেবেলায় আরতি দেখব বলে।__________________________
দশাশ্বমেধ ঘাটে যেতেই মাঝিদের ডাকাডাকি, “নাও লেগে, বাবু? অসিঘাট, মণিকর্ণিকা সব ঘুমা দেগা।” আমরা একটা নোকাতে চড়ে বললাম, বারানসী গঙ্গার সুন্দর দশ্য দেখে মন ভরে গেলো,এর পর শুরু হলো ঘাট পরিক্রমা,নৌকা করে ঘাটগুলো ঘুরে দেখলাম। এক একজন রাজা এক এক সময়ে তাঁদের আলাদা ঘাট নির্মাণ করে গেছিলেন। সুদূর বিজয়নগর রাজ্য এবং মারাঠা, সিন্ধিয়া, হোলকার, পেশোয়া সব রাজ্যের শাসকরাও ঘাট নির্মাণ করে গেছেন। বেশিরভাগ ঘাটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পৌরাণিক কিছু কাহিনি। আমরা যাতে করে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করছি তা নৌকা ঠিক নয়, বরং বলা ভালো যন্ত্রচালিত নৌকা বা বোট। মাঝি গাইডের কাজ করে। রাজা হরিশ্চন্দ্রের ঘাট, মণিকর্নিকার ঘাট, চৌষট্টি যোগিনীর ঘাট, অহল্যা ঘাট, চেত সিং ঘাট, অসি ঘাট, কেদার ঘাট, গঙ্গা মহল ঘাট, তুলসি ঘাট, জৈন ঘাট, দশাশ্বমেধ ঘাট সব মিলিয়ে মোট ৮৮ ঘাট আছে এখানে। তাদের মধ্যো উল্লেখ্যযোগ্য গুলি হল--
দশাশ্বমেধ ঘাট:এই ঘাটের জল পবিত্র পঞ্চ তীর্থের মধ্যে গণ্য করা হয়।। কথিত আছে ভগবান ব্রহ্মা একবার কাশী রাজার সহায়্তায় ১০ টি অশ্ব বলি দেন এখানে। সেই থেকে এই ঘাটের নাম এইরূপ।
মনিকর্ণিকা ঘাটঃ কথিত আছে শিব এবং পার্বতী এক দিন এই ঘাটে স্নান করতে এসেছিলেন। দেবী পার্বতীর একটা দুল নাকি এখানে হারিয়ে যায়। অনেক খুঁজেও তা না পেয়ে শিব অভিশাপ দেন এই ঘাটে সব সময় শব দাহ হতে থাকবে।লোকে বলে এই ঘাটের চিতার আগুন কখন নাকি নেভে না।
হরিশচন্দ্র্র ঘাটঃ কথিত আছে অভিশাপগ্রস্ত রাজা হরিশচন্দ্র নাকি এখানে মড়া পোড়াতেন। সত্যনিষ্ঠ হরিশচন্দ্র্র নিজ পুত্র রোহিতাশ্বকে দাহ করার জন্যে স্ত্রী শৈব্যার অর্ধেক বস্ত্র দাবি করেন । তখন ভগবান আর্বিভুত হন এবং তাঁকে সশরীরে স্বর্গে যাবার অনুমতি দেন। এই ঘাটে অজস্র শবদাহ করা হয়
__________________________
বারাণসীর মূল আকর্ষণ বোধকরি গঙ্গা আরতি । দারুণ একটা ব্যাপার । কেউ নৌকার ওপর চেয়ারে বসে তো কেউ এমনি নৌকাতেই বসে, কেউবা জেটিতে বসে বা দাঁড়িয়ে, কেউবা সামনে বা পেছনে বা দুধারে সিঁড়িতে বসে । অনেকে চাদর বিছানো সতরঞ্জির ওপর বসে দেখছে । আপনি সামনে বা পেছনে বা দুপাশে কোথায় বসলেন তাতে কিছু যাবে আসবে না - কারণ আরতি সবদিকে ঘুরেই দেওয়া হয় । আরতি চলে পাশাপাশি দুটো ঘাটে - দশাশ্বমেধ ঘাট ও ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ ঘাটে । এক একটা ঘাটে আরতি দেন সাত জন । সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ শুরু হয় । দর্শনার্থীরা অনেক আগে থেকেই আসতে শুরু করেন ভালো জায়গা পাবার আসায় ।আমরা একটা নৌকায় বসে আরতি দেখলাম ।এই আরতি দেখা একটি অপূর্ব অভিজ্ঞতা । আরতি শেষে গঙ্গাকে পরিস্কার রাখার শপথ নেওয়া হয়।নৌকায়,চাতালে,সিঁড়িতে তখন থিক থিক করছে লোক,সকলেই আরতির মহিমায় বিভোর।আরতি শেষ হবার পরও রেশ থেকে যায় অনেকক্ষন।সন্ধ্যায় এই আরতি না দেখলে বেনারস ভ্রমন সম্পূর্ণ হয় না।আশ্চর্যের ব্যাপার ঝড়,জল,প্রচন্ড শীতেও আরতি কখনও স্থগিত হয় না।আশাকরি সকলের এটা ভালো লাগবে ।আরতি শেষ হয়ে যাবার পর আমরা ঘাটে অনেকক্ষণ বসে রইলাম ।আরতি শেষে আবার গেলাম মা অন্নপূর্ণার প্রাসাদ গ্রহনে।পোলাও ,ইডলি,সুপ,মথুরা কেক খেয়ে চললাম হোটেলে।
বারাণসী গেলে অবশ্যই খাবেন মা অন্নপূর্ণার প্রসাদ,বিখ্যাত বারাণসীর পান,এছাড়াও রাবড়ী আর একটা বিখ্যাত খাবার আছে, সেটা হল মালাই। শুধু জমাট দুধের সর । তবে চিনি দিয়ে খেতে হবে। এসব আমার খাওয়া হয়নি তাই আপনারা একটু বেশী সময় নিয়ে যাবেন।
___________________________
অটো ভাড়া :
১)বারাণসীতে দূর্গামন্দির,তুলসী মানস মন্দির,ভারতমাতা মন্দির,সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দির,বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় ও বিড়লা মন্দির (নতুন বিশ্বনাথ মন্দির) ঘুরে দেখার জন্য অটো রিজার্ভ ৪০০ টাকা।
২)বারাণসী থেকে সারনাথ ভ্রমন অটো রিজার্ভ করে ঘোরা (৫ ঘন্টার জন্য) ৪০০-৪৫০ টাকা।
৩)গঙ্গারতি দেখা আর ঘাটগুলো ঘোরার জন্য নৌকার ভাড়া ২০০।বিকেলে দরদাম করে নেবেন আর একটু আগে আগে(৫ টার মধ্যে) ঘাট এ পৌঁছাবেন।__________________________
বারাণসীকে বলা হয় The City of Light। গঙ্গা, গঙ্গার ঘাট, মন্দির, ভারতীয় সঙ্গীত, রাবড়ি-লস্যি-মালাই, অলিগলি-তস্য গলি, দোকানপাট, যানজট, ষাঁড়, বেনারসি শাড়ির দোকান, কাচের চুড়ি এ সব নিয়েই এক প্রাণবন্ত শহর বারাণসী।বিশ্বনাথের গলিতে এখনও বাংলা ভাষায় অজস্র সাইনবোর্ড। কোথাও মোহিনীমোহন কাঞ্জিলাল, কোথাও বা কুঞ্জু সাউ, কোথাও আবার নিখিল, দাশগুপ্তের জর্দা।ধর্মস্থান হিসাবে বেনারসের ভূমিকায়। হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ,জৈন,খ্রিস্টান সব ধর্মের উল্লেখযোগ্য অস্তিত্ব থাকলেও এটি প্রধাণতঃ হিন্দু তীর্থস্থান।বারাণসী বা কাশী কে চিরকালই বাঙালীরা বেশী গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। তাদের বিশ্বাস চতুরাশ্রমের তৃতীয় অর্থাৎ বাণপ্রস্থ যদি এখানে কাটানো যায় এবং এখানেই দেহত্যাগ করলে ভগবান শিবের আর্শীবাদে তাদের মুক্তি ঘটবে আর জন্মগ্রহণ করতে হবে না,এটাই তাদের আকাঙ্খা।
বারাণসী শহর হানাদারদের হানায় বার বার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এর অতীত, কিন্ত পুণের পেশোয়া, ইন্দোরের হোলকার, গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া এবং বারাণসীর রাজাদের হাতে মন্দির, ঘাট এবং শহর গড়ে উঠেছে আবার নতুন করে।এখন এক আধুনিক শহর, বিশ্বনাথ মন্দির আর গঙ্গাতীরের প্রাচীন ঘাট হলো বারাণসীর প্রধান দর্শনীয় স্থান।আজও মণিকর্ণিকা বা হরিশ্চন্দ্র ঘাটের শ্মশানে এসে জড়ো হয় কাঠবোঝাই সব নৌকো। মণিকর্ণিকায় নেই বৈদ্যুতিক চুল্লি। হরিশ্চন্দ্র ঘাটে থাকলেও কাঠের শ্মশানই জনতার বেশি পছন্দ। “যাদের কেউ নেই, সেই বেচারারা ইলেকট্রিকে যায়,” হরিশ্চন্দ্র ঘাটের সামনে দিয়ে যেতে যেতে বললেন নৌকা চালক। এতো শপিংমল,ফ্লাইওভার এবং আধুনিকতার ছোঁয়ার মধ্যে কেউ এক বারও বলছেন না বৈদ্যুতিক চুল্লির কথা।এটাই বারাণসী স্পিরিট। সহস্র পরিবর্তনেও রিচ্যুয়াল বয়ে নিয়ে যাওয়া। খোলা আকাশের নীচে মরদেহ ছাই হয়ে যাওয়া, পাশে উত্তরবাহিনি গঙ্গা। মিথ, ঐতিহ্য, আধুনিকতা সব এখানে জড়াজড়ি করে থাকে। কখনও চেনা ঠেকে, কখনও বা অচেনা। শুধু ধৈর্য রেখে চিনে নিতে হবে মাহেন্দ্রক্ষণটি। তখন শিবের অভিষেকেই ভেসে আসবে বিষ্ণুর মন্ত্
..__________________________
দুদিন ঘুরে খুব ভাল লাগলো। তবে দুদিনে এরবেশী কিছু দেখা সম্ভব নয়। কাশী মন্দিরের দেশ, কমপক্ষে সাতদিন থাকলে কিছুকিছু দেখা যায়। সব বাদ দিয়ে শুধু একটা কথাই বলবো, নৌকাচড়ে বরুণ ও অসি নদীর সঙ্গম স্থলে বরুণেশ্বর মন্দির এবং অসি ঘাটের ভোর ৫ টাই আরতি দেখে এলে খুব ভাল লাগতো । সময় ছিল না বলে দেখা হল না ভারতমাতা মন্দির,কাঠওয়ালা মন্দির, আলমগির মসজিদ এবং আরও অজস্র মন্দির। বাকি রয়ে গেল অনেক গল্প। পরের বারের জন্য তোলা রইল। বাবা বিশ্বনাথ আর মা অন্নপূর্ণা যদি আবার ডাকেন তো আবার বেরিয়ে পড়া যাবে। জয় বাবা বিশ্বনাথ! সবার মঙ্গল করো।
রাতে অটো করে চললাম বারাণসী জংশন 22324-Sabda Bhedi Express এর জন্য।
কষ্টকরে আমার লেখা পড়ার জন্য সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
আমরা খুশি মনে যা দেব তাতেই সে রাজি ।সারনাথ সত্যি দারুণ জায়গা একটা পুরোদিন সারনাথের জন্য আপনাকে রাখতেই হবে । আমরা সেটা করি নি । সবার শেষে সারনাথ রেখেছিলাম । তাই সময় বেশি পাই নি । মাএ আড়াই ঘন্টার মধ্যে ঘুরে দেখা । আবার আসব ফিরে মনে মনে এই প্রতিজ্ঞা করে ফিরে আসতে হয়।
এবার আসা যাক কি কি দেখলাম ।
সারনাথে প্রবেশপথের কাছেই রয়েছে ছোট্ট পাহাড়ি টিলার মতো চৌখন্ডি স্তূপ - অষ্টকোণবিশিষ্ট স্তম্ভ। বুদ্ধকে এখানেই তাঁর অনুগামী শিষ্যরা বরণ করে। বাদশাহ আকবর পিতা হুমায়ুনের সারনাথ ভ্রমণকে বরণীয় করে তুলতে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্তূপটির সংস্কার করেন। স্তূপটির নিচের অংশ পাথরের ও উপরের বাকি অংশ জমানো ইটের টুকরো দিয়ে তৈরি। স্তূপটি গড়ে ওঠে আষাঢ় পূর্ণিমায়, বুদ্ধ তাঁর পাঁচ শিষ্যকে যেখানে প্রথম পাঠ দেন সেই পূণ্যস্থানে। জনশ্রুতি রয়েছে, স্তূপের মধ্যে ভগবান বুদ্ধের অস্থি রক্ষিত আছে। মূলগন্ধকুঠি বিহারটি প্রাচীনকালে বৌদ্ধদের প্রথম সংঘ ছিল। গুপ্তরাজাদের গড়া মূলগন্ধকুঠি বিহারের স্থলে শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধভিক্ষু অনাগারিকা ধর্মপালের প্রচেষ্টায় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ৬১ মিটার উঁচু মূলগন্ধকুঠি গড়েছে মহাবোধি সোসাইটি।
আমাদের গাইড বাবাজী আমাদের নিয়ে এল মূলগন্ধকুঠি বিহারে ।সারনাথের অপর আকর্ষণ মহাবোধি সোসাইটি নির্মিত এই আধুনিক বুদ্ধমন্দির। এখানে দেখবেন জাপানের অগ্রণী শিল্পী কসেত্সু নোসুর আঁকা অসাধারণ কিছু ফ্রেস্কো।
এরপর বোধিবৃক্ষ ।শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরা থেকে বোধিবৃক্ষের একটি চারা এনে রোপণ করা হয়েছে। বৃক্ষতলে বেদির ওপর বুদ্ধ মূর্তির সামনে অস্মজি, মহানামা, ভদ্দিয়, ওয়াপ্পা, কোন্দানয় পাঁচ শিষ্যের মূর্তি। বুদ্ধ পূর্ণিমায় বুদ্ধের জন্মোত্সব পালিত হয় মহাসমারোহে। গাইড তার মতো করে বলে চলেছে আর আমরা ওর কথামত সব দেখছি । এখান থেকে ধামেক স্তুপ দেখা যাচ্ছিল ।ধামেক স্তুপের পুরো জায়গাটা দেখার দক্ষিণা পঁচিশ টাকা ।ধামেক স্তুপ ও তাকে কেন্দ্র করে এক বিরাট অঞ্চলে অসংখ্য পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন এক কথায় অতুলনীয় ও চমকপ্রদ । সারনাথের এই অত্যাশ্চর্য স্হাপত্য ও ভাষ্কর্য মুলত ইঁট ও বেলেপাথর দিয়ে তৈরি । এজন্যই আমি আগে বলেছিলাম এখানে না এলে একটা আপশোষ থেকে যেত । মিনিট পঁয়তাল্লিশ ঘোরাঘুরির পর এখান থেকে যখন বের হলাম তখনো মনে হচ্ছে অনেক কিছুই যেন দেখা হলো না । আরও অনেকটা সময় থাকতে পারলে যেন ভালো হতো ।
এবার আমরা এলাম মিউজিয়ামে ।খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে ৫টা, এখানে মোবাইল, ক্যামেরা সব জমা দিতে হবে না কিন্তু ছবি তোলা যাবে না ।মিউজিয়াম দেখার দক্ষিণা ফ্রি,কিন্তু ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুললে 20 টাকা লাগবে, এই মিউজিয়ামটাও দারুণ । এদের সংগৃহীত সামগ্রী এক কথায় অতুলনীয় ।
গাইড আমাদের নিয়ে একটু দূরে জাপানি টেম্পল দেখাতে নিয়ে এল । আরও একটা টেম্পলও দেখলাম । ওটাও খুব সুন্দর আর এটাকেও জাপানি টেম্পলই বলা হয় । এগুলো হয়ে যাবার পর পাশেই একটা বাড়িতে নিয়ে গেল যেখানে বেনারসী শাড়ির দোকান ও ফ্যাক্টরি আছে । সে বলল, এখানে আপনারা বেনারসী শাড়ি ইত্যাদি দেখতে পারেন । এখানে জি এস টি লাগে না তাই দামটা একটু কম পড়ে । আমরা বারবার বললাম যে আমরা কিছু কিনব না । এই দোকান থেকে বেরিয়ে আবার আমরা মূলগন্ধকুঠি বিহারের সামনে এলাম।গাইডের ঘোরানো শেষ ।এখান থেকে বেরিয়ে আমাদের ড্রাইভারকে ডেকে গাড়িতে উঠে পড়লাম । সারনাথ দেখা শেষ করে ফিরে এলাম । ফেরার সময় একটু বেশি সময় লাগল রাস্তায় জ্যাম থাকার ফলে রাস্তায় আসতে আসতে দেখছিলাম বারাণসী শহর ,গোধূলিয়া মোড়ে চিরপরিচিত যানজট পেরিয়ে,ছ'টার কিছু পরে দশাশ্বমেধ ঘাটে সরাসরি পৌঁছে গেলাম সন্ধ্যেবেলায় আরতি দেখব বলে।__________________________
দশাশ্বমেধ ঘাটে যেতেই মাঝিদের ডাকাডাকি, “নাও লেগে, বাবু? অসিঘাট, মণিকর্ণিকা সব ঘুমা দেগা।” আমরা একটা নোকাতে চড়ে বললাম, বারানসী গঙ্গার সুন্দর দশ্য দেখে মন ভরে গেলো,এর পর শুরু হলো ঘাট পরিক্রমা,নৌকা করে ঘাটগুলো ঘুরে দেখলাম। এক একজন রাজা এক এক সময়ে তাঁদের আলাদা ঘাট নির্মাণ করে গেছিলেন। সুদূর বিজয়নগর রাজ্য এবং মারাঠা, সিন্ধিয়া, হোলকার, পেশোয়া সব রাজ্যের শাসকরাও ঘাট নির্মাণ করে গেছেন। বেশিরভাগ ঘাটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পৌরাণিক কিছু কাহিনি। আমরা যাতে করে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করছি তা নৌকা ঠিক নয়, বরং বলা ভালো যন্ত্রচালিত নৌকা বা বোট। মাঝি গাইডের কাজ করে। রাজা হরিশ্চন্দ্রের ঘাট, মণিকর্নিকার ঘাট, চৌষট্টি যোগিনীর ঘাট, অহল্যা ঘাট, চেত সিং ঘাট, অসি ঘাট, কেদার ঘাট, গঙ্গা মহল ঘাট, তুলসি ঘাট, জৈন ঘাট, দশাশ্বমেধ ঘাট সব মিলিয়ে মোট ৮৮ ঘাট আছে এখানে। তাদের মধ্যো উল্লেখ্যযোগ্য গুলি হল--
দশাশ্বমেধ ঘাট:এই ঘাটের জল পবিত্র পঞ্চ তীর্থের মধ্যে গণ্য করা হয়।। কথিত আছে ভগবান ব্রহ্মা একবার কাশী রাজার সহায়্তায় ১০ টি অশ্ব বলি দেন এখানে। সেই থেকে এই ঘাটের নাম এইরূপ।
মনিকর্ণিকা ঘাটঃ কথিত আছে শিব এবং পার্বতী এক দিন এই ঘাটে স্নান করতে এসেছিলেন। দেবী পার্বতীর একটা দুল নাকি এখানে হারিয়ে যায়। অনেক খুঁজেও তা না পেয়ে শিব অভিশাপ দেন এই ঘাটে সব সময় শব দাহ হতে থাকবে।লোকে বলে এই ঘাটের চিতার আগুন কখন নাকি নেভে না।
হরিশচন্দ্র্র ঘাটঃ কথিত আছে অভিশাপগ্রস্ত রাজা হরিশচন্দ্র নাকি এখানে মড়া পোড়াতেন। সত্যনিষ্ঠ হরিশচন্দ্র্র নিজ পুত্র রোহিতাশ্বকে দাহ করার জন্যে স্ত্রী শৈব্যার অর্ধেক বস্ত্র দাবি করেন । তখন ভগবান আর্বিভুত হন এবং তাঁকে সশরীরে স্বর্গে যাবার অনুমতি দেন। এই ঘাটে অজস্র শবদাহ করা হয়
__________________________
বারাণসীর মূল আকর্ষণ বোধকরি গঙ্গা আরতি । দারুণ একটা ব্যাপার । কেউ নৌকার ওপর চেয়ারে বসে তো কেউ এমনি নৌকাতেই বসে, কেউবা জেটিতে বসে বা দাঁড়িয়ে, কেউবা সামনে বা পেছনে বা দুধারে সিঁড়িতে বসে । অনেকে চাদর বিছানো সতরঞ্জির ওপর বসে দেখছে । আপনি সামনে বা পেছনে বা দুপাশে কোথায় বসলেন তাতে কিছু যাবে আসবে না - কারণ আরতি সবদিকে ঘুরেই দেওয়া হয় । আরতি চলে পাশাপাশি দুটো ঘাটে - দশাশ্বমেধ ঘাট ও ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ ঘাটে । এক একটা ঘাটে আরতি দেন সাত জন । সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ শুরু হয় । দর্শনার্থীরা অনেক আগে থেকেই আসতে শুরু করেন ভালো জায়গা পাবার আসায় ।আমরা একটা নৌকায় বসে আরতি দেখলাম ।এই আরতি দেখা একটি অপূর্ব অভিজ্ঞতা । আরতি শেষে গঙ্গাকে পরিস্কার রাখার শপথ নেওয়া হয়।নৌকায়,চাতালে,সিঁড়িতে তখন থিক থিক করছে লোক,সকলেই আরতির মহিমায় বিভোর।আরতি শেষ হবার পরও রেশ থেকে যায় অনেকক্ষন।সন্ধ্যায় এই আরতি না দেখলে বেনারস ভ্রমন সম্পূর্ণ হয় না।আশ্চর্যের ব্যাপার ঝড়,জল,প্রচন্ড শীতেও আরতি কখনও স্থগিত হয় না।আশাকরি সকলের এটা ভালো লাগবে ।আরতি শেষ হয়ে যাবার পর আমরা ঘাটে অনেকক্ষণ বসে রইলাম ।আরতি শেষে আবার গেলাম মা অন্নপূর্ণার প্রাসাদ গ্রহনে।পোলাও ,ইডলি,সুপ,মথুরা কেক খেয়ে চললাম হোটেলে।
বারাণসী গেলে অবশ্যই খাবেন মা অন্নপূর্ণার প্রসাদ,বিখ্যাত বারাণসীর পান,এছাড়াও রাবড়ী আর একটা বিখ্যাত খাবার আছে, সেটা হল মালাই। শুধু জমাট দুধের সর । তবে চিনি দিয়ে খেতে হবে। এসব আমার খাওয়া হয়নি তাই আপনারা একটু বেশী সময় নিয়ে যাবেন।
___________________________
অটো ভাড়া :
১)বারাণসীতে দূর্গামন্দির,তুলসী মানস মন্দির,ভারতমাতা মন্দির,সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দির,বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় ও বিড়লা মন্দির (নতুন বিশ্বনাথ মন্দির) ঘুরে দেখার জন্য অটো রিজার্ভ ৪০০ টাকা।
২)বারাণসী থেকে সারনাথ ভ্রমন অটো রিজার্ভ করে ঘোরা (৫ ঘন্টার জন্য) ৪০০-৪৫০ টাকা।
৩)গঙ্গারতি দেখা আর ঘাটগুলো ঘোরার জন্য নৌকার ভাড়া ২০০।বিকেলে দরদাম করে নেবেন আর একটু আগে আগে(৫ টার মধ্যে) ঘাট এ পৌঁছাবেন।__________________________
বারাণসীকে বলা হয় The City of Light। গঙ্গা, গঙ্গার ঘাট, মন্দির, ভারতীয় সঙ্গীত, রাবড়ি-লস্যি-মালাই, অলিগলি-তস্য গলি, দোকানপাট, যানজট, ষাঁড়, বেনারসি শাড়ির দোকান, কাচের চুড়ি এ সব নিয়েই এক প্রাণবন্ত শহর বারাণসী।বিশ্বনাথের গলিতে এখনও বাংলা ভাষায় অজস্র সাইনবোর্ড। কোথাও মোহিনীমোহন কাঞ্জিলাল, কোথাও বা কুঞ্জু সাউ, কোথাও আবার নিখিল, দাশগুপ্তের জর্দা।ধর্মস্থান হিসাবে বেনারসের ভূমিকায়। হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ,জৈন,খ্রিস্টান সব ধর্মের উল্লেখযোগ্য অস্তিত্ব থাকলেও এটি প্রধাণতঃ হিন্দু তীর্থস্থান।বারাণসী বা কাশী কে চিরকালই বাঙালীরা বেশী গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। তাদের বিশ্বাস চতুরাশ্রমের তৃতীয় অর্থাৎ বাণপ্রস্থ যদি এখানে কাটানো যায় এবং এখানেই দেহত্যাগ করলে ভগবান শিবের আর্শীবাদে তাদের মুক্তি ঘটবে আর জন্মগ্রহণ করতে হবে না,এটাই তাদের আকাঙ্খা।
বারাণসী শহর হানাদারদের হানায় বার বার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এর অতীত, কিন্ত পুণের পেশোয়া, ইন্দোরের হোলকার, গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া এবং বারাণসীর রাজাদের হাতে মন্দির, ঘাট এবং শহর গড়ে উঠেছে আবার নতুন করে।এখন এক আধুনিক শহর, বিশ্বনাথ মন্দির আর গঙ্গাতীরের প্রাচীন ঘাট হলো বারাণসীর প্রধান দর্শনীয় স্থান।আজও মণিকর্ণিকা বা হরিশ্চন্দ্র ঘাটের শ্মশানে এসে জড়ো হয় কাঠবোঝাই সব নৌকো। মণিকর্ণিকায় নেই বৈদ্যুতিক চুল্লি। হরিশ্চন্দ্র ঘাটে থাকলেও কাঠের শ্মশানই জনতার বেশি পছন্দ। “যাদের কেউ নেই, সেই বেচারারা ইলেকট্রিকে যায়,” হরিশ্চন্দ্র ঘাটের সামনে দিয়ে যেতে যেতে বললেন নৌকা চালক। এতো শপিংমল,ফ্লাইওভার এবং আধুনিকতার ছোঁয়ার মধ্যে কেউ এক বারও বলছেন না বৈদ্যুতিক চুল্লির কথা।এটাই বারাণসী স্পিরিট। সহস্র পরিবর্তনেও রিচ্যুয়াল বয়ে নিয়ে যাওয়া। খোলা আকাশের নীচে মরদেহ ছাই হয়ে যাওয়া, পাশে উত্তরবাহিনি গঙ্গা। মিথ, ঐতিহ্য, আধুনিকতা সব এখানে জড়াজড়ি করে থাকে। কখনও চেনা ঠেকে, কখনও বা অচেনা। শুধু ধৈর্য রেখে চিনে নিতে হবে মাহেন্দ্রক্ষণটি। তখন শিবের অভিষেকেই ভেসে আসবে বিষ্ণুর মন্ত্
..__________________________
দুদিন ঘুরে খুব ভাল লাগলো। তবে দুদিনে এরবেশী কিছু দেখা সম্ভব নয়। কাশী মন্দিরের দেশ, কমপক্ষে সাতদিন থাকলে কিছুকিছু দেখা যায়। সব বাদ দিয়ে শুধু একটা কথাই বলবো, নৌকাচড়ে বরুণ ও অসি নদীর সঙ্গম স্থলে বরুণেশ্বর মন্দির এবং অসি ঘাটের ভোর ৫ টাই আরতি দেখে এলে খুব ভাল লাগতো । সময় ছিল না বলে দেখা হল না ভারতমাতা মন্দির,কাঠওয়ালা মন্দির, আলমগির মসজিদ এবং আরও অজস্র মন্দির। বাকি রয়ে গেল অনেক গল্প। পরের বারের জন্য তোলা রইল। বাবা বিশ্বনাথ আর মা অন্নপূর্ণা যদি আবার ডাকেন তো আবার বেরিয়ে পড়া যাবে। জয় বাবা বিশ্বনাথ! সবার মঙ্গল করো।
রাতে অটো করে চললাম বারাণসী জংশন 22324-Sabda Bhedi Express এর জন্য।
কষ্টকরে আমার লেখা পড়ার জন্য সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ