কাশ্মীর - কিছু বিশেষ কথা - সতর্কীকরণ ---- Kashmir Some warning / caveat
পর্ব ১ : শ্রীনগর
ক) শ্রীনগর প্রসঙ্গে প্রথমেই আসবে ডাল লেকে ভাসমান ভ্রমণের কথা। তাই এখানে একটি বিশেষ সাবধানতার কথা না বললেই নয়।
সাধারণত ট্রাভেল গ্রুপের পরিচালকরা আপনাকে মমতা চক বা ১ নম্বর ঘাটের কাছে ছেড়ে দেবে। কারণ মূল শহরের কাছে এই জায়গাতেই যথেষ্ট পার্কিং এর জায়গা আছি। এবং ডাল লেক সংলগ্ন ডাঙার বাজার করার জায়গাগুলি এখান থেকে হেঁটে যাওয়া যায়। কিন্তু বস্তুত এই জায়গাটা আসলে ডাল লেকের কুৎসিত ও নালা মতন সরু অংশের কাছাকাছি। এখান থেকে শিকারার মাঝিদের সাথে দরদাম করে মাথা পিছু ৪০০-৫০০ টাকার contract করে নৌকা বিহার তো শুরু করলেন। কিন্তু ১৫ - ২০ মিনিট পরই বুঝতে পারবেন যে মাঝিরা ডাল লেকের খোলা মেলা বড় অংশে না গিয়ে আপনাকে নিয়ে যাবে সেই দুর্গন্ধ যুক্ত নালার অংশে। কারণ এই অংশেই আছে লেকের ভাসমান বাজার, যেখানে উঁচু দামে হাউস বোটের মত জলযানে হরেক পসরা সাজানো আছে আপনার গলা কাটার জন্য। আপনি যতই হাত পা ধরুন না কেন, শিকারা ওই দুর্গন্ধযুক্ত গলি ঘুজি দিয়েই আপনাকে ক্রমাগত ঘোরাতে থাকবে। আপনি যদি কোথাও কিছু না কেনেন, এক ঘণ্টার আগেই আপনার ভ্রমণ শেষ। আপনি বলবেন, "তুমি যে বলেছিলে আড়াই ঘণ্টা ঘোরাবে?" ওর উত্তর আসবে, "আপনি যদি দরদাম করে কেনা কাটা করতেন, তাহলে কম করে অতটা সময়ই লাগতো। যেহেতু কেনেন নি, তাই ভ্রমণ তাড়াতাড়ি শেষ!" বোকার মত তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
সমাধান - মমতা চক থেকে অটো নিয়ে চারজনের গ্রুপে নিষাদ গার্ডেন এর কাছের কোনো ঘাটে চলে যান। একই অথবা কিছু কম দামে টানা এক ঘন্টা ডাল লেকের সুবিস্তৃত মূল অংশে ঘোরার মজা নিতে পারবেন।
খ) কাশ্মীরের অদূরে আছে শঙ্করাচার্যের মন্দির। নাম এইরকম হলেও, এটি আসলে শিব মন্দির। মহেশ্বর ওই নামে পূজিত হন। শ্রীনগর সাইট সিইং এ অনেকেই "আরো একটা মন্দির" মনে করে এটিকে এড়িয়ে চলে। এই দুর্গম মন্দির টির কিন্তু একটি অন্য রকমের সৌন্দর্য আছে। আরো মনোরম এই মন্দিরটির শিখর - এটিকে প্রদক্ষিণ করলে ছড়িয়ে থাকা ডাল লেকের ও তৎসংলগ্ন শ্রীনগর শহরের bird's eye view পাওয়া যায়, যা এক কথায় অতুলনীয়। বলাই বাহুল্য যে ডাল লেক সংলগ্ন একটি পাহাড় চূড়ায় এই মন্দিরটি স্থাপিত। শীকারা ভ্রমনের সময় গোধূলি আলোয় যখন এই মন্দিরে আলো জ্বলে, তখনও মন্দিরটি র ক্ষুদ্র আলোকিত অবয়ব, অসম্ভব সুন্দর লাগে।
তাই বলছি, কাশ্মীর ভ্রমণে সাইট সীইং সূচী তে এই মন্দিরটিকে অবশ্যই রাখবেন।
প্রায় একই কথা Hazratbal Shrine সম্পর্কেও বলা যায়। তবে এটির স্থাপত্য অত্যন্ত সুন্দর হলেও locality এমনি সাধারণ। এটিও অবশ্যই দেখবেন
গ) শ্রীনগরের গার্ডেন সমূহ পর্যটকদের কাছে অন্যতম মূল আকর্ষণ। যদি মার্চ এপ্রিল মাসে যান তাহলে টিউলিপ গার্ডেনের স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য তো দেখবেন ই। এর কথা এখানে উঠছেই না। এ ছাড়াও কিন্তু অসংখ্য বিখ্যাত গার্ডেন আছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবেন? একটির থেকে আরেকটি বেশ দূরে দূরে। আর প্রত্যেকটি জায়গা ঘুরে ফিরে দেখতে বেশ সময় ও লাগবে। কিছুক্ষণ পর একটু একঘেয়ে ও। আর পয়সা খরচের কিছু ব্যাপার কিন্তু আছে। যেটা নেহাত কম নয়
সমাধান - আমার মনে হয় শহর থেকে একটু দূরে "পরী মহল গার্ডেন" অবশ্যই দেখুন। আর নেহরু গার্ডেন, নিষাদ গার্ডেন, চশমী সহী আর শালিমার গার্ডেনের মধ্যে যে কোনো একটা দেখুন। সময় ও বাঁচবে সাশ্রয় ও হবে। আর ক্লান্তি ও একঘেয়েমি ও লাগবে না।
ঘ) বাজার হাটের অসংখ্য অপশন আছে শ্রীনগর এ। "ডাল গেট" নামক জায়গাটির বাজার ভালো লেগেছে।
এই প্রসঙ্গে ডাল লেক থেকে দূরে পুরনো শ্রীনগর এর "খৈয়াম চক" নামক জায়গার কথা বলতেই হয়। এই অঞ্চল টি কাশ্মীরি খাওয়া দাওয়া ও কেনাকাটার পিঠ স্থান।
যে কথাটি না বললেই নয়, শ্রীনগরের বেকারির জিনিস ও যথেষ্ট সুস্বাদু। আর নিরামিষ দিনে, শ্রীনগর এর আনাচ কানাচ জুড়ে বেশ কয়েকটি বেশ কয়েকটি নিরামিষ ভজনালায় রমরম করে চলছে, যা অতীতে অভাবনীয় ছিল।
পর্ব ১ : শ্রীনগর
ক) শ্রীনগর প্রসঙ্গে প্রথমেই আসবে ডাল লেকে ভাসমান ভ্রমণের কথা। তাই এখানে একটি বিশেষ সাবধানতার কথা না বললেই নয়।
সাধারণত ট্রাভেল গ্রুপের পরিচালকরা আপনাকে মমতা চক বা ১ নম্বর ঘাটের কাছে ছেড়ে দেবে। কারণ মূল শহরের কাছে এই জায়গাতেই যথেষ্ট পার্কিং এর জায়গা আছি। এবং ডাল লেক সংলগ্ন ডাঙার বাজার করার জায়গাগুলি এখান থেকে হেঁটে যাওয়া যায়। কিন্তু বস্তুত এই জায়গাটা আসলে ডাল লেকের কুৎসিত ও নালা মতন সরু অংশের কাছাকাছি। এখান থেকে শিকারার মাঝিদের সাথে দরদাম করে মাথা পিছু ৪০০-৫০০ টাকার contract করে নৌকা বিহার তো শুরু করলেন। কিন্তু ১৫ - ২০ মিনিট পরই বুঝতে পারবেন যে মাঝিরা ডাল লেকের খোলা মেলা বড় অংশে না গিয়ে আপনাকে নিয়ে যাবে সেই দুর্গন্ধ যুক্ত নালার অংশে। কারণ এই অংশেই আছে লেকের ভাসমান বাজার, যেখানে উঁচু দামে হাউস বোটের মত জলযানে হরেক পসরা সাজানো আছে আপনার গলা কাটার জন্য। আপনি যতই হাত পা ধরুন না কেন, শিকারা ওই দুর্গন্ধযুক্ত গলি ঘুজি দিয়েই আপনাকে ক্রমাগত ঘোরাতে থাকবে। আপনি যদি কোথাও কিছু না কেনেন, এক ঘণ্টার আগেই আপনার ভ্রমণ শেষ। আপনি বলবেন, "তুমি যে বলেছিলে আড়াই ঘণ্টা ঘোরাবে?" ওর উত্তর আসবে, "আপনি যদি দরদাম করে কেনা কাটা করতেন, তাহলে কম করে অতটা সময়ই লাগতো। যেহেতু কেনেন নি, তাই ভ্রমণ তাড়াতাড়ি শেষ!" বোকার মত তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
সমাধান - মমতা চক থেকে অটো নিয়ে চারজনের গ্রুপে নিষাদ গার্ডেন এর কাছের কোনো ঘাটে চলে যান। একই অথবা কিছু কম দামে টানা এক ঘন্টা ডাল লেকের সুবিস্তৃত মূল অংশে ঘোরার মজা নিতে পারবেন।
খ) কাশ্মীরের অদূরে আছে শঙ্করাচার্যের মন্দির। নাম এইরকম হলেও, এটি আসলে শিব মন্দির। মহেশ্বর ওই নামে পূজিত হন। শ্রীনগর সাইট সিইং এ অনেকেই "আরো একটা মন্দির" মনে করে এটিকে এড়িয়ে চলে। এই দুর্গম মন্দির টির কিন্তু একটি অন্য রকমের সৌন্দর্য আছে। আরো মনোরম এই মন্দিরটির শিখর - এটিকে প্রদক্ষিণ করলে ছড়িয়ে থাকা ডাল লেকের ও তৎসংলগ্ন শ্রীনগর শহরের bird's eye view পাওয়া যায়, যা এক কথায় অতুলনীয়। বলাই বাহুল্য যে ডাল লেক সংলগ্ন একটি পাহাড় চূড়ায় এই মন্দিরটি স্থাপিত। শীকারা ভ্রমনের সময় গোধূলি আলোয় যখন এই মন্দিরে আলো জ্বলে, তখনও মন্দিরটি র ক্ষুদ্র আলোকিত অবয়ব, অসম্ভব সুন্দর লাগে।
তাই বলছি, কাশ্মীর ভ্রমণে সাইট সীইং সূচী তে এই মন্দিরটিকে অবশ্যই রাখবেন।
প্রায় একই কথা Hazratbal Shrine সম্পর্কেও বলা যায়। তবে এটির স্থাপত্য অত্যন্ত সুন্দর হলেও locality এমনি সাধারণ। এটিও অবশ্যই দেখবেন
গ) শ্রীনগরের গার্ডেন সমূহ পর্যটকদের কাছে অন্যতম মূল আকর্ষণ। যদি মার্চ এপ্রিল মাসে যান তাহলে টিউলিপ গার্ডেনের স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য তো দেখবেন ই। এর কথা এখানে উঠছেই না। এ ছাড়াও কিন্তু অসংখ্য বিখ্যাত গার্ডেন আছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবেন? একটির থেকে আরেকটি বেশ দূরে দূরে। আর প্রত্যেকটি জায়গা ঘুরে ফিরে দেখতে বেশ সময় ও লাগবে। কিছুক্ষণ পর একটু একঘেয়ে ও। আর পয়সা খরচের কিছু ব্যাপার কিন্তু আছে। যেটা নেহাত কম নয়
সমাধান - আমার মনে হয় শহর থেকে একটু দূরে "পরী মহল গার্ডেন" অবশ্যই দেখুন। আর নেহরু গার্ডেন, নিষাদ গার্ডেন, চশমী সহী আর শালিমার গার্ডেনের মধ্যে যে কোনো একটা দেখুন। সময় ও বাঁচবে সাশ্রয় ও হবে। আর ক্লান্তি ও একঘেয়েমি ও লাগবে না।
ঘ) বাজার হাটের অসংখ্য অপশন আছে শ্রীনগর এ। "ডাল গেট" নামক জায়গাটির বাজার ভালো লেগেছে।
এই প্রসঙ্গে ডাল লেক থেকে দূরে পুরনো শ্রীনগর এর "খৈয়াম চক" নামক জায়গার কথা বলতেই হয়। এই অঞ্চল টি কাশ্মীরি খাওয়া দাওয়া ও কেনাকাটার পিঠ স্থান।
যে কথাটি না বললেই নয়, শ্রীনগরের বেকারির জিনিস ও যথেষ্ট সুস্বাদু। আর নিরামিষ দিনে, শ্রীনগর এর আনাচ কানাচ জুড়ে বেশ কয়েকটি বেশ কয়েকটি নিরামিষ ভজনালায় রমরম করে চলছে, যা অতীতে অভাবনীয় ছিল।