সোনাঝুড়ির হাট,শান্তিনিকেতন

খোয়াইয়ের হাট / সোনাঝুড়ির হাট : শান্তিনিকেতন ভ্রমন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি সোনাঝুড়ির জঙ্গলে খোয়াই এর হাট দর্শন না হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে খোয়াই ধারে এই হাটটি প্রতি শনিবার দুপুরের পর বসে, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। শনিবার বসে বলে হাটটির চলতি নাম, 'শনিবারের অন্য হাট' এছাড়া অনেকে 'খোয়াই হাট' বা 'সোনাঝুড়ির হাট' বলে থাকে। ২০০৩ সাল থেকে এই হাট বসছে। এই হাটের মধ্যে রয়েছে সরল গ্রামীণ জীবনের এক টুকরো ছোঁয়া। আক্ষরিক অর্থেই এটি হাট। কোথাও কোনো স্থায়ী ঘর নেই। নেই অস্থায়ী ঘর কিংবা সামিয়ানাও। কেউ ত্রিপল, কেউ চট, কেউবা মাটিতে কাপড় বিছিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। হাটটি পুরোপুরি মধ্যসত্বভোগী মুক্ত। বিক্রেতারা সবাই প্রান্তিক উৎেপাদক। পার্শ্ববর্তী কোপাই, বোলপুর, গোয়ালপাড়া, পাটুলডাঙা, প্রান্তিক ও ভুবনডাঙা গ্রামের নারী-পুরুষরা তাদের হাতে তৈরি বিভিন্ন দ্রবাদি নিয়ে হাজির হয়ে থাকেন হাটে ।
আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের নিচে প্রতি শনিবার করে ঘর সাজানোর জিনিস একতারা- দোতারা, রং বেরঙের চূড়ি,গলার মালা,কানের দুল আর বাহারি জামাকাপড়ের পসরা সাজিয়ে বিশাল এক হাট বসে। সওদার মধ্যে কাপড় ও সাজগোজের জিনিসের আধিক্য বেশি। তবে নান্দনিক শো-পিস, খেলনা, মনোহরি সামগ্রী রয়েছে। সূর্য যতো পশ্চিমে ঢলে পড়ে ততোই জমে ওঠে হাট।

সাথে আছে একতারা নিয়ে বাউলের মন ভোলানো গান। আর রয়েছে আদিবাসী সাঁওতাল কিছু সহজ সরল মানুষের নাচ, যাদের সত্যি চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। মনের সুখে একমনে নেচে যাচ্ছে। ওদের সাথে একটু কোমর দুলিয়ে নেচে নেওয়া যায়।

সোনাঝুরি ও শালবন ঘেরা প্রকৃতি সাথে ঢোল আর মাদলের শব্দ, সে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা। হাটের মাঝেই এখানে ওখানে সাঁওতাল দল মাদলের তালে তালে নাচে মগ্ন। সাঁওতালী নাচ চলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

কেনাকাটা করার ইচ্ছে না থাকলেও মনের অজান্তেই বেশকিছু জিনিস কেনা হয়ে যায়।