Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.


Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.

Churn : Universal Friendship
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Churn : Universal Friendship Log in

PEACE , LOVE and UNITY


descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz


ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ


Topic III

Protest, resistance and uprisings during the first century of British rule (Peasant and tribal uprisings) - the uprisings that took place in Bengal in the 18lh century are to be mentioned. For each uprisings a short paragraph may be used. Other than the underlined uprisings only brief mention of the rest will suffice. Viz Sannyasi, Fakir, Farazi and Wahabi movements. Mopla insurrection in South India. Chuar, Santhal, Kol movements in Eastern India. Bhil and Kol insurrection in Western India. Revolt of 1857 (the characteristics of popular upsurge should be clearly reflected . (Unnecessary references to and quotations of historians should be avoided) Map -1, Illustration -2

☼ কৃষক বিদ্রোহের কারণ:-

☼ ওয়াহাবি আন্দোলন:-

☼ ফরাজি আন্দোলন:-

☼ সন্দীপ বিদ্রোহ:-

☼ রংপুর বিদ্রোহ:-

☼ সন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ:-

☼ পাইক বিদ্রোহ:-

☼ পলিগার বিদ্রোহ:-

☼ মোপলা বিদ্রোহ:-

☼ কোল বিদ্রোহ:-

☼ সাঁওতাল বিদ্রোহ:-

☼ চুয়াড় বিদ্রোহ:-

☼ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ:-

►মহাবিদ্রোহের বিস্তার:-

►মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি:-

►মহাবিদ্রোহ ব্যর্থতার কারণ:-

☼ মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণা :-

### তোমার সাহায্যে আমরা পাশে আছি, তুমি এগিয়ে যাও।
# প্রিয় ছাত্র - ছাত্রী যদি কোথাও কোনো ভুল থেকে থাকে তবে মনে রাখবে সেটা অনিচ্ছাকৃত। নিচে কমেন্ট করো। ঠিক করে দেওয়া হবে।

CLASS TEN HISTORY
#Madhyamik #2020 #HISTORY #Suggestions
#ইতিহাস #মাধ্যমিক

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz

কৃষক বিদ্রোহের কারণ (Cause of Peasant Movement)


ভারতে ব্রিটিশ রাজত্বের সূচনা থেকেই অর্থাৎ ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর থেকে একের পর এক কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয় । এই সব কৃষক বিদ্রোহের অনেকগুলি কারণ ছিল, যেমন :

(১) কোম্পানি প্রবর্তিত নতুন ভূমিরাজস্ব নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকশ্রেণি : ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে কোম্পানি প্রবর্তিত নতুন ভূমিরাজস্ব নীতি ও ভুমিরাজস্ব ব্যবস্থা, রাজস্ব আদায়ের জন্য আমিলদার ও ইজারাদারদের অত্যাচার, প্রচলিত ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে সংগতিবিহীন নতুন আইন ও বিচারব্যবস্থায় ভারতীয় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, যা তাদের ব্রিটিশ বিরোধী করে তুলেছিল । দরিদ্র ভূমিহীন প্রজাদের বিদ্রোহ তারই স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ ।

(২) কোম্পানি প্রবর্তিত ভূমিরাজস্বের উচ্চ হার : চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, মহলওয়ারি, রায়তওয়ারি ও অন্যান্য ধরণের রাজস্বব্যবস্থা এবং নতুন ভুমিরাজস্ব ব্যবস্থায় ভুমিরাজস্বের হার ছিল খুবই বেশি । এইসব ভুমি-রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তিত হওয়ায় ভারতের গ্রামীণ জীবনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো প্রায় ভেঙ্গে পড়ে ।

(৩) শিল্পবিপ্লব : ইংল্যান্ডে ১৮শ ও ১৯শ শতকের শিল্পবিপ্লবের ফলে ভারতীয় কুটির শিল্প ধ্বংস হয়ে যায় । এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল কৃষকরা তাই ব্রিটিশ বিরোধী হয়ে ওঠেন ।

(৪) জমিদারী উত্পীড়ন : জমিদার ও তাঁদের নায়েব গোমস্তাদের প্রজাপীড়নও কৃষকদের বিদ্রোহে ইন্ধন যোগায় ।

(৫) মহাজনদের শোষণ : মহাজনদের শোষণ ও বঞ্চনাও কৃষক বিদ্রোহে অন্যতম কারণ ।

(৬) সরকারি বঞ্চনা : সবশেষে কৃষকদের প্রতি সরকারের বঞ্চনা ও উপেক্ষা তাদের বিদ্রোহে প্ররোচিত করে ।

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz
ওয়াহাবি আন্দোলন (Wahabi movements)

ভারতবর্ষে ওয়াহাবি আন্দলনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলির অধিবাসী শাহ সৈয়দ আহমদ (১৭৮৬-১৮১৩ খ্রি.) এবং তাঁর অনুগামীদের নেতৃত্বে ওয়াহাবি আন্দোলন অচিরেই একটি রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয় ।
ওয়াহাবি আন্দলনের উদ্দেশ্য :

(১) ‘ওয়াহাবি’ শব্দের অর্থ হল ‘নবজাগরণ’ । আরব দেশে আব্দুল ওয়াহাব (১৭৬৩-৮৭ খ্রি. ) নামে এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের সংস্কারের জন্য এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন ।

(২) উনবিংশ শতকের প্রথম দিকে ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা করেন দিল্লীর খ্যাতনামা মুসলিম নেতা সন্ত ওয়ালিউল্লাহ (১৭০৩-৬২ খ্রি.) এবং তাঁর পুত্র আজিজ । প্রথম দিকে এই আন্দোলন ছিল ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন এবং এর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের শুদ্ধিকরণ । ভারতে ওয়াহাবি সম্প্রদায়ের যথার্থ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রায়বেরিলির সৈয়দ আহমদ (১৭৮৬-১৮৩১ খ্রি.) । তিনি আরবের ওয়াহাবিদের অনুকরণে ধর্মসংস্কারের কথা প্রচার করতে শুরু করেন ।

(৩) ওয়াহাবি আন্দোলন মূলত ধর্মসংস্কার আন্দোলন হিসাবে শুরু হলেও অচিরেই তা রাজনৈতিক আন্দোলনের পরিণতি লাভ করে । সৈয়দ আহমদ বলেন, ইংরেজ শাসনের ফলে ভারতবর্ষ ‘দার-উল-হার্ব’ বা বিধর্মীর দেশে পরিণত হয়েছে, একে ‘দার-উল-ইসলাম’ অর্থাৎ ইসলামের দেশে পরিণত করতে হবে । সুতরাং এই আন্দোলনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বিধর্মী ইংরেজ শাসন উচ্ছেদ করে মুসলমান শাসন প্রতিষ্ঠা করা ।

(৪) প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, ওয়াহাবি আন্দোলন কখনই জাতীয় আন্দোলন ছিল না এবং এই আন্দোলনের চরিত্র সাম্প্রদায়িকতা মুক্তও ছিল না । ইংরেজ শাসনের পরিবর্তে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করাই ছিল ওয়াহাবি আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য ।

(৫) ওয়াহাবিগণ দ্রুত ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলেন । ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবে শিখ শাসনের অবসান ঘটাবার জন্য তাঁরা ধর্মযুদ্ধ শুরু করেন । ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ওয়াহাবিগণ পশ্চিম পাঞ্জাবের রাজধানী পেশোয়ার জয় করেন । কিন্তু তাদের এই সাফল্য বেশিদিন স্থায়ী হয় নি । ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে বালাকোটের যুদ্ধে সৈয়দ আহম্মদ প্রাণ হারান এবং ওয়াহাবিরা পরাস্ত হন । পাঞ্জাবে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর আবার ওয়াহাবিগণ ইংরেজদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন । ক্রমশ বাংলা, বিহার, মীরাট ও অন্ধ্রের হায়দরাবাদে ওয়াহাবি আন্দোলন বিস্তারলাভ করে ।

(৬) বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মীর নিশার আলি বা তিতুমীর (১৭৮২-১৮৩১খ্রি.) । তিনি কিছুদিন মুসলিম তীর্থস্থান মক্কায় অবস্থান করেন । সেইখানেই তিনি রায়বেরিলির সৈয়দ আহম্মদের সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন । মক্কা থেকে দেশে ফিরে তিনি ওয়াহাবি আদর্শ অনুসারে ইসলাম ধর্মের সংস্কারে আত্মনিয়োগ করেন । জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে তিতুমীরের প্রচারের ফলে দরিদ্র ও নিম্নশ্রেণির বহু মুসলমান দলে দলে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন । প্রথম প্রথম ওয়াহাবিদের সংগ্রাম ছিল স্থানীয় জমিদার, মহাজন ও নীলকরদের বিরুদ্ধে । কলকাতার পূর্ব ও উত্তরদিকের গ্রামসমূহ, চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, ফরিদপুর, মালদহ, রাজমহল প্রভৃতি অঞ্চল বিদ্রোহীদের করতলগত হয় । জনসাধারণের অর্থ সাহায্যে তিতুমীর বাদুড়িয়া থানার দশ কিলোমিটার দুরে নারকেলবেড়িয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করে দলবলসহ সেখানে অবস্থান করেন এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন । লর্ড বেন্টিঙ্ক তিতুমীরকে বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় । তিতুমীর তাঁর ৬০০ অনুগামী কাঁচা বেল, ইট, তীর, ধনুক, বর্শা ইত্যাদি নিয়ে বাঁশের কেল্লা থেকে ব্রিটিশদের উপর আঘাত হানে । শেষ পর্যন্ত ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে মেজর স্কটের নেতৃত্বে এক শক্তিশালী ইংরেজ বাহিনী তিতুমীর ও তাঁর অনুগামীদের পরাজিত করেন । তিতুমীর তাঁর বহু অনুগামীসহ যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণত্যাগ করেন । তিতুমীরের সেনাপতি গোলাম মাসুম খাঁ ইংরেজদের হাতে ধারা পড়েন । তাঁকে কেল্লার সামনেই ফাঁসি দেওয়া হয় । এই ঘটনাই বারাসত বিদ্রোহ নাম পরিচিত ছিল । প্রত্যক্ষদর্শী সাধারণ মানুষ এই ঘটনায় আরও ঘোরতর ইংরেজ বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন ।

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz

ফরাজি আন্দোলন (Farazi movements)


বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলনের আদর্শে মুসলিম সমাজে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ফরাজি আন্দোলনের সূত্রপাত হয় । ১৮১৮ থেকে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফরাজি আন্দোলন চলে । 'ফরাজি' শব্দের অর্থ ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য । ফরাজি আন্দোলনের মূল প্রবর্তক ছিলেন হাজি শরিয়তুল্লাহ । হাজি শরিয়তুল্লাহ কুসংস্কারমুক্ত সাম্যবাদী সমাজ গঠনের কথা বলতেন । নীলকর সাহেব ও হিন্দু-মুসলিম জমিদারদের বিরুদ্ধে ফরাজি আন্দোলন গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল । ফরিদপুর ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল প্রভৃতি স্থানের গরিব হিন্দু-মুসলিম কৃষক, তাঁতি, কারিগর. শ্রমিক প্রমুখ এই ফরাজি আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন । বাংলার নিপীড়িত ও অত্যাচারিত মানুষের কাছে হাজি শরিয়তুল্লাহ ছিলেন এক আদর্শ পুরুষ । হাজি শরিয়তুল্লাহ ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে 'ফরাজি' নামে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় গঠন করেন । এই সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিয়ে তিনি সংস্কার ও সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন ।

১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে হাজি শরিয়তুল্লাহ মারা গেলে তাঁর পুত্র দুধু মিঁয়া এই আন্দোলনের হাল ধরেন । দুধু মিঁয়া বা মহম্মদ মুসিন ফরাজি আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেন । জমিদার, নীলকর ও সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর স্লোগান ছিল 'যারা জমি চাষ করছে জমি তাদেরই' অথবা 'জমির মালিক ঈশ্বর' । ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ঢাকা, পাবনা,বাখরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নোয়াখালি, খুলনা ছাড়াও তার প্রভাবে এপার বাংলার ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে ফরাজি আন্দোলনের ভাবধারা ছড়িয়ে পড়ে । ক্রমে ফরাজি আন্দোলন তার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র হারায় । জোরপূর্বক অর্থ আদায় এবং দল ভুক্তির জন্য এর জনপ্রিয়তা কমতে থাকে । শেষ পর্যন্ত জমিদার ও নীলকরদের চাপে কোম্পানি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে দুধু মিঞাকে কারারুদ্ধ করেন । করারুদ্ধ অবস্থায় ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে দুধু মিঁয়ার মৃত্যু হয় । দুধু মিঁয়ার মৃত্যুর পর ফরাজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে ।

দুধু মিঁয়ার মৃত্যুর পর পুত্র নোয়া মিঁয়া বা আব্দুল গফুর কিছু কাল পিতার আন্দোলন চালিয়ে যান । আব্দুল গফুর ফরাজি আন্দোলনকে ধর্মীয় আন্দোলনে পরিণত করেন ।

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz
সন্দীপ বিদ্রোহ

ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার ত্রুটি , সুদখোর মহাজনদের নির্লজ্জ শোষণ, ঔপনিবেশিক শোষণ এবং কৃষক ও উপজাতিদের উপর দমন নীতি ইত্যাদির কারণে ও এর প্রতিবাদে বিভিন্ন সময়ে কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি, কারিগর, জেলে, মুচি, মেথর, ব্যবসায়ী, শিল্পী, ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ বিচ্ছিন্ন ভাবে হলেও সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে সামিল হয়েছিল । এইসব বিদ্রোহগুলির মধ্যে সন্দীপ বিদ্রোহ ছিল অন্যতম ।

১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে নোয়াখালি জেলার দরিদ্র মুসলিম কৃষকদের বিদ্রোহ সন্দীপ বিদ্রোহ নামে পরিচিত । বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত নোয়াখালি জেলার অন্তর্গত কয়েকটি ছোটো বড়ো দ্বীপের সমষ্টি হল সন্দীপ অঞ্চল । আবু তোরাপ চৌধুরী এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে নিহত হন । পরে অত্যাচারী ইংরেজ বেনিয়া গোকুল ঘোষালের বিরুদ্ধে সন্দীপের কৃষকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে ।

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz
রংপুর বিদ্রোহ

ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার ত্রুটি , সুদখোর মহাজনদের নির্লজ্জ শোষণ, ঔপনিবেশিক শোষণ এবং কৃষক ও উপজাতিদের উপর দমন নীতি ইত্যাদির কারণে ও এর প্রতিবাদে বিভিন্ন সময়ে কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি, কারিগর, জেলে, মুচি, মেথর, ব্যবসায়ী, শিল্পী, ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ বিচ্ছিন্ন ভাবে হলেও সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে সামিল হয়েছিল । এইসব বিদ্রোহগুলির মধ্যে রংপুর বিদ্রোহ ছিল অন্যতম ।

১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির ইজারাদার দেবী সিংহের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রংপুরের কৃষকদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম রংপুর বিদ্রোহ নামে পরিচিত । ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জানুয়ারী রংপুরের শকিনা, ফতেপুর, কাজিরহাট ও ডিমলা অঞ্চলের কৃষকরা সমবেত হয়ে নুরুলউদ্দিনের নেতৃত্বে তেপাগ্রামে একটি দেবী সিংহের বিরুদ্ধে 'স্বাধীন স্থানীয় সরকার' গঠন করেন । প্রায় পাঁচ সপ্তাহ স্বাধীনভাবে এই সরকার কাজ চালিয়েছিল । দয়ারাম শীল নুরুলুদ্দিনের সহকারী নেতা ছিলেন । এই বিদ্রোহের প্রধান কারণগুলি হল —

(১) জমিদার বা প্রজাদের ওপর উচ্চহারে ভুমিরাজস্ব আরোপ ।

(২) সময় মতো রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থ জমিদার বা প্রজাদের ওপর অনেক সময় নানা প্রকার অত্যাচার চালানো হত ।

(৩) খাজনা অনাদায়ে অনেক জমিদার ও ওই অঞ্চলের কিছু মহিলা জমিদারের জমিদারি স্বত্ব অতি সামান্য মূল্যে কিনে নেওয়া হত ।

(৪) রাজস্ব অনাদায়ে বিদ্রোহী কৃষকদের কারাগারে ধরে এনে অমানুষিক বেত্রাঘাত করা হত ।

(৫) অজন্মা খরা বা যে-কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য শস্যহানি হলেও অসহায় কৃষকদের বা জমিদারদের খাজনা থেকে রেহাই দেওয়া হত না ।

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz
সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ (Sannyasi and Fakir movements)

বাংলায় কোম্পানি শাসনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলেন সন্ন্যাসী ও ফকির সম্প্রদায় । দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ১৭৬৩ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা ও বিহারের দরিদ্র কৃষকেরা অন্ন ও বস্ত্রের জন্য সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের ধ্বজা তোলেন । প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই বিদ্রোহে সামিল হয়েছিল । উত্তরবঙ্গের 'মাদারি' সম্প্রদায়ের ফকির এবং পূর্ববঙ্গ ও 'ময়মনসিংহের' 'গিরি', 'গোঁসাই' এবং 'নাগা' সন্ন্যাসীরা প্রথম এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেয় । পরে ক্ষমতাচ্যুত জমিদার, ছাঁটাই হওয়া সৈনিক ও বিতাড়িত কৃষক এ বিদ্রোহে যোগ দেয় । সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর 'আনন্দমঠ' উপন্যাসে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেছেন । এই বিদ্রোহের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দের মধ্য ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরাণী, কৃপানাথ, মুশা শাহ, মজনু শাহ, পরাগল শাহ, চিরাগ আলি শাহ প্রমুখ অন্যতম । এদের মধ্যে ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে ভবানী পাঠকের মৃত্যু হয় । সমকালীন বিভিন্ন তথ্য ও সূত্র থেকে জানা যায় যে, এইসব বিদ্রোহের কারণ ছিল-

(ক) বাংলা ও বিহারে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করতে করতে সন্ন্যাসী ও ফকিরদের অনেকে কৃষকে পরিণত হয় । ইংরেজরা তাঁদের শোষণপীড়ন করেছিল ।

(খ) বছরের বিশেষ সময়ে এই সন্ন্যাসী ফকির কৃষকরা তীর্থে যেত । কিন্তু ইংরেজরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাদের উপর তীর্থকর বসালে তারা ক্ষুব্দ হয়েছিল ।

(গ) ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের [১১৭৬ সাল] সময় ইংরেজদের পৈশাচিক শোষণ ও অত্যাচারের দৃশ্য দেখে বিদ্রোহীরা ইংরেজ, মহাজন ও কিছু জমিদারদের উপর আস্থা হারায় ।

(ঘ) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ধার্য করা অত্যধিক রাজস্ব, জমি থেকে ইচ্ছামতো কৃষক উচ্ছেদ প্রভৃতি কারণে বাংলা-বিহারের কৃষকরা ভীষণ ক্ষুব্ধ হয় ।

(ঙ) রাজস্ব আদায়ের নামে সার্বিক লুন্ঠন ও কোম্পানির লোকেদের নির্দয় অত্যাচার বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দেয় । প্রথমে কোম্পানির কুঠি, জমিদারদের কাছারি ও মহাজনদের বাড়ি আক্রমণ করে । ১৭৬৩ -১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্রোহের আগুন বেশি প্রজ্বলিত থাকে, রাজশাহির রামপুর ও বোয়ালিয়ার কুঠি এবং ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ ছাড়িয়ে পড়ে ।

(চ) ফকির ও সন্ন্যাসীদের মধ্যে অনেকেই রেশম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল । কোম্পানির কর্মচারীরা নানা ভাবে তাদের এই ব্যবসাতে বাধা দিত ।

এই সব অসন্তোষকে কেন্দ্র করে ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় সর্বপ্রথম সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ শুরু হয় । ক্রমে তা দাবানলের মতো মালদহ, রংপুর, দিনাজপুর, কোচবিহার, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর প্রভৃতি জেলায় ছড়িয়ে পড়ে । অত্যাচারিত ও নির্যাতিত দরিদ্র কৃষক, মোগল সেনাবাহিনীর বেকার সৈন্য এবং সন্ন্যাসী ও ফকিরদের বিভিন্ন সম্প্রদায়, এই বিদ্রোহে অংশ নেয় । এই বিদ্রোহকে সন্ন্যাসী বিদ্রোহ বলে অভিহিত করা হলেও উইলিয়াম হান্টার সর্বপ্রথম সন্ন্যাসী বিদ্রোহকে কৃষক বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন । এটি ছিল পুরো দস্তুর ইংরেজ সরকার বিরোধী কৃষকদের বিদ্রোহ । যদিও লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস একে 'হিন্দুস্থানের যাযাবর' ও 'পেশাদার ডাকাতদের উপদ্রব' বলে চিহ্নিত করেছেন ।

ব্যর্থতার কারণ:

১) সুযোগ্য নেতৃত্ব ও নেতাদের অভিজ্ঞতার অভাব এবং সাংগঠনিক দুর্বলতা,

২) সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা,

৩) আদর্শহীনতা এবং সাম্প্রদায়িক অনৈক্য,

৪) উপযুক্ত অস্ত্রশস্ত্রের অভাব প্রভৃতি কারণে এই চার দশক ধরে চলতে থাকা সন্ন্যাসী বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় ।

descriptionClass x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ EmptyRe: Class x ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম শতকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ

more_horiz
privacy_tip Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum