ইতিহাসের পথে পথে
++++++++++++++++++
রাজগীর - নালন্দা - গয়া - বুদ্ধগয়া - ( ১ )
+++++++++++++++++++++++++++++++
[You must be registered and logged in to see this link.]
বাঙালী কি আর সে বাঙালী আছে?
নরেন, অরবিন্দ, সুভাষের কথা বাদই দিলাম, নিদেনপক্ষে বিনয়-বাদল-দীনেশ, ক্ষুদিরাম- প্রফুল্ল চাকী কি মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা বা মাতঙ্গিনী হাজরা - আহা কি সব নাম। শুনলেই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে আপনি।
আর আজকাল?
বিশ্ববখাটে, সবজান্তা, বাইরে শেয়াল - ঘরে ইঁদুর, মেনীমুখো বাঙালীতে দেশ ভর্তি। এমনকি - রইল ঝোলা - চলল ভোলা টাইপও বিরল।
দেখুন দেখি, শুরু করলাম বেড়ানোর গল্প দিয়ে আর এসব কি হাবিজাবি লিখছি!!
আসলে হল কি, একই সময়ে দুটো প্রোগ্রাম পড়ে গেলে যা হয় আরকি! একটা ক্লাবের বাৎসরিক পিকনিক আরেকটা ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে ছেলেবেলার সেই জায়গায় গিয়ে স্মৃতির পাতা ওল্টানো। ভেবেছিলাম পিকনিকটা সেরে একদিন পরে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেব। কিন্তু ভাবলেই তো হবেনা, খচ্চা আছে।
আরে ধুসস্ মশাই, আর্থিক খরচা নয়। এ অন্য জিনিষ। পৃথিবীর সবথেকে ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বলছি শুনুন তবে। প্রোগ্রামগুলো শুনেই গিন্নী গেলেন চটে। কি? সবই তোমার প্রোগ্রাম? আমি কি ফ্যালনা? আমার কি সখ আহ্লাদ থাকতে নেই? ইত্যাদি প্রভৃতি সাতসতেরো। সঙ্গে পেয়ে গেলেন আমার আরও দুটো বন্ধুর স্ত্রীদের। ব্যস, আর যায় কোথা? চলো, আমরা ওইসময়েই যাব অন্য কোথাও। তা যাওনা কেন? কে বারণ করেছে?
ইল্লি আরকি? তোমরা না গেলে মালপত্র বইবে কে? ঘর, খাওয়া, ঘোরা - এসব কে করবে?
বোঝো!!
কুলি, গাইড, ম্যানেজারের কম্বিনেশন কাজ বেচারা স্বামী নামক আসামী ছাড়া আর কে করবে?
তারমানে এই নয় যে তাঁরা নিজেরা এসব পারেন না। কিন্তু ঘোড়া দেখলে -
থাকগে! আর কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। আমাকেও তো, মানে, হুঁ হুঁ, এখানেই মানে, ওই আর কি, বাড়িতেই থাকতে হবে। আর জলে থেকে কুমীরের -- না, না, মাক্কালী, বলতে চাইনি। সিলিপ অফ টাং!!
তো ঠিক হল কাছাকাছির মধ্যেই কোথাও ঘুরে আসা হোক চার পাঁচদিনের জন্য। বড়দিনের ছুটি চলছে। তারমধ্যেও অবশ্য টিউশন, কোচিং ইত্যাদি রয়েছে। সেসব ম্যানেজ করে ঝপাস করে টিকিট কেটে ফেলা হল দানাপুর এক্সপ্রেসে। তিন বন্ধুর ফ্যামিলি। মোট দশ জন।
২৩ ডিসেম্বর হাওড়া থেকে বক্তিয়ারপুর। আর ফেরার টিকিট ২৭ তারিখ গয়া থেকে শিপ্রা এক্সপ্রেস।
হাওড়া থেকে এক বন্ধু তার ফ্যামিলি নিয়ে উঠল। আমরা উঠলাম ব্যান্ডেল থেকে। ট্রেন ঠিকঠাক টাইমে চলছে। বর্ধমান আসার আগেই খাওয়াদাওয়া সারা। রুটি / লুচি, পনীর / চিকেন, আর মিষ্টি তো থাকেই। গুছিয়ে খাওয়ার পরেও রয়ে গেল অনেকটা করে। সব গোছগাছ করে চাদরটাদর পেতে শুয়ে পড়া হল। আরেক বন্ধু তার ফ্যামিলি নিয়ে উঠবে আসানসোল থেকে। বারোটার পর সে উঠতে ঘুমোনোর চেষ্টা। আমার তো রাত জাগা স্বভাব। বিশেষ করে সফরকালে।
ট্রেন থামবে স্টেশনে- টুক করে নেমে গিয়ে চারপাশটা ঘুরে আসব, ইঞ্জিনটা গিয়ে দেখব কি মডেলের, কোথাকার, দুচারটে লোকের সঙ্গে আলাপ হবে, মাঝরাতে গরম চা খেয়ে ঠোঁট পুড়বে, ট্রেন ছেড়ে দিলে দৌড়ে গিয়ে ওঠা -এসব না হলে আর বেড়ানো কিসের?
বেড়াতে যাওয়া ঠিক হওয়ার পর টিকিট কাটা যখন হয়ে গেল, তখন হোটেলের জন্য খোঁজ শুরু করলাম। পিক সিজন, হোটেল পাওয়া একটু মুশকিল। যদিও রাজগীর বাঙালীর খুব পছন্দের তালিকায় পড়েনা, তাও হোটেলে ঠাঁই নেই, ঠাঁই নেই ভাব। কয়েকটা হোটেল পেলামও। ১১০০/ ১২০০ টাকায় ডবল বেড। ঠিক করার আগে বন্ধুদের জানালাম যখন, আসানসোলের বন্ধু বলল - আমার খাস বন্ধুর বাড়ি রাজগীরে। ও ওখানেই আছে, আমি বলে দিচ্ছি, ও নিজে গিয়ে হোটেল ঠিক করে আসবে সব দেখেশুনে। তুই চাপ নিসনা একদম। কাজেই আমি হোটেল খোঁজায় ক্ষ্যান্ত দিলাম।
টিকিটটাও আরেক বন্ধু কেটেছিল। সে আমাকে জানানো মাত্রই বলেদিলাম - তুই কেটেনে আগে। তারপর ফোন কর। কাজেই টিকিটটা আরামসে হয়ে গেছিল।
হোটেলটা যে এতটা ভোগাবে বুঝিনি আগে।
একদম শেষ মুহুর্তে জানাল, হোটেল পাওয়া যাচ্ছেনা। সব বুকড। দুএকটা আছে। সেটাও ২২০০/ ২৫০০ চাইছে।
এত গালাগাল করলাম বাকি দুজন বন্ধুতে। তাও তার কোনো হেলদোল নেই। বলে কি ওই বন্ধুটার বাড়িইতো আছে। ওখানেই থেকে যাব নাহয়।
এতগুলো লোক কারুর বাড়িতে গিয়ে থাকব, হয় নাকি? তারপর আরও নানারকম সমস্যা আছে।
আবার হোটেল খোঁজা শুরু হল। তারপর কলকাতার সেই বন্ধু তার ট্র্যাভেল এজেন্টকে দিয়ে রাজগীরে দুদিন আর বুদ্ধগয়ায় দুদিন হোটেল বুক করল।
বক্তিয়ারপুরে যখন নামলাম তখন পৌনে পাঁচটা। ট্রেন যখন প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে তখন সবাই হুড়োহুড়ি করছে। এক বন্ধু বলল - দেখতো, বক্তিয়ারপুর এল কিনা? আমি নিশ্চিন্ত। ট্রেন পৌছোনোর কথা চারটে ছাপ্পান্নয় আর এখন চারটে চল্লিশ।
বললাম এটা নয় বুঝলি, এর পরেরটা বক্তিয়ারপুর হবে হয়ত। আসলে সারারাত জেগে সেই একটু চোখটা লেগে এসেছিল।
আশপাশের লোকজনের কথায় জানতে পারলাম এটাই বক্তিয়ারপুর। তখন হুড়োহুড়ি করে নামা। আর সেই হুড়োহুড়িতে গায়েদেওয়ার একটা চাদর রয়ে গেল বার্থে। আমরা নেমে পড়লাম। যখন মনে পড়ল, তখন ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। আর কিছু করার নেই।
স্টেশন থেকে নেমে বেরিয়ে এলাম বাইরে। স্টেশনের বাইরে সারসার গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। দানাপুর এক্সপ্রেস থেকে বক্তিয়ারপুরে নামার পর রাজগীর যাওয়ার একটা লোকাল ট্রেন আছে। কিন্তু তাতে আড়াই থেকে তিনঘন্টা সময় লাগে ৫৫ কিলোমিটার যেতে। সে ট্রেনের কোন তাড়া নেই। কেউ দাঁত মাজতে মাজতে হাত দেখালেও সে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। সে লোক মুখচোখ ধুয়ে এলে ট্রেনও ছাড়ে - এইরকম অবস্থা!!
তো আমরা গাড়িতেই যাব ঠিক করে এসেছিলাম। বাইরে বেরিয়ে এসে আগে চা খেলাম জমিয়ে। চা খেতে খেতেই আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোর ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলছি ভাড়ার। ১৬০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ১২০০ এমনকি ১০০০ টাকাতেও যাবে গাড়িগুলো। সুমো, বোলেরো, স্করপিও, ট্র্যাক্স গাড়ি সব। একটা গাড়িতেই সবার হয়ে যাবে। গাড়ি ঠিক করে তাকে বলা হল। সে নিয়ে এল গাড়ি। বড় একটা বোলেরো। কিন্তু অন্য একটা সমস্যা তৈরী হয়ে গেল জোর।
( চলবে )
++++++++++++++++++
রাজগীর - নালন্দা - গয়া - বুদ্ধগয়া - ( ১ )
+++++++++++++++++++++++++++++++
[You must be registered and logged in to see this link.]
বাঙালী কি আর সে বাঙালী আছে?
নরেন, অরবিন্দ, সুভাষের কথা বাদই দিলাম, নিদেনপক্ষে বিনয়-বাদল-দীনেশ, ক্ষুদিরাম- প্রফুল্ল চাকী কি মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা বা মাতঙ্গিনী হাজরা - আহা কি সব নাম। শুনলেই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে আপনি।
আর আজকাল?
বিশ্ববখাটে, সবজান্তা, বাইরে শেয়াল - ঘরে ইঁদুর, মেনীমুখো বাঙালীতে দেশ ভর্তি। এমনকি - রইল ঝোলা - চলল ভোলা টাইপও বিরল।
দেখুন দেখি, শুরু করলাম বেড়ানোর গল্প দিয়ে আর এসব কি হাবিজাবি লিখছি!!
আসলে হল কি, একই সময়ে দুটো প্রোগ্রাম পড়ে গেলে যা হয় আরকি! একটা ক্লাবের বাৎসরিক পিকনিক আরেকটা ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে ছেলেবেলার সেই জায়গায় গিয়ে স্মৃতির পাতা ওল্টানো। ভেবেছিলাম পিকনিকটা সেরে একদিন পরে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেব। কিন্তু ভাবলেই তো হবেনা, খচ্চা আছে।
আরে ধুসস্ মশাই, আর্থিক খরচা নয়। এ অন্য জিনিষ। পৃথিবীর সবথেকে ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বলছি শুনুন তবে। প্রোগ্রামগুলো শুনেই গিন্নী গেলেন চটে। কি? সবই তোমার প্রোগ্রাম? আমি কি ফ্যালনা? আমার কি সখ আহ্লাদ থাকতে নেই? ইত্যাদি প্রভৃতি সাতসতেরো। সঙ্গে পেয়ে গেলেন আমার আরও দুটো বন্ধুর স্ত্রীদের। ব্যস, আর যায় কোথা? চলো, আমরা ওইসময়েই যাব অন্য কোথাও। তা যাওনা কেন? কে বারণ করেছে?
ইল্লি আরকি? তোমরা না গেলে মালপত্র বইবে কে? ঘর, খাওয়া, ঘোরা - এসব কে করবে?
বোঝো!!
কুলি, গাইড, ম্যানেজারের কম্বিনেশন কাজ বেচারা স্বামী নামক আসামী ছাড়া আর কে করবে?
তারমানে এই নয় যে তাঁরা নিজেরা এসব পারেন না। কিন্তু ঘোড়া দেখলে -
থাকগে! আর কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। আমাকেও তো, মানে, হুঁ হুঁ, এখানেই মানে, ওই আর কি, বাড়িতেই থাকতে হবে। আর জলে থেকে কুমীরের -- না, না, মাক্কালী, বলতে চাইনি। সিলিপ অফ টাং!!
তো ঠিক হল কাছাকাছির মধ্যেই কোথাও ঘুরে আসা হোক চার পাঁচদিনের জন্য। বড়দিনের ছুটি চলছে। তারমধ্যেও অবশ্য টিউশন, কোচিং ইত্যাদি রয়েছে। সেসব ম্যানেজ করে ঝপাস করে টিকিট কেটে ফেলা হল দানাপুর এক্সপ্রেসে। তিন বন্ধুর ফ্যামিলি। মোট দশ জন।
২৩ ডিসেম্বর হাওড়া থেকে বক্তিয়ারপুর। আর ফেরার টিকিট ২৭ তারিখ গয়া থেকে শিপ্রা এক্সপ্রেস।
হাওড়া থেকে এক বন্ধু তার ফ্যামিলি নিয়ে উঠল। আমরা উঠলাম ব্যান্ডেল থেকে। ট্রেন ঠিকঠাক টাইমে চলছে। বর্ধমান আসার আগেই খাওয়াদাওয়া সারা। রুটি / লুচি, পনীর / চিকেন, আর মিষ্টি তো থাকেই। গুছিয়ে খাওয়ার পরেও রয়ে গেল অনেকটা করে। সব গোছগাছ করে চাদরটাদর পেতে শুয়ে পড়া হল। আরেক বন্ধু তার ফ্যামিলি নিয়ে উঠবে আসানসোল থেকে। বারোটার পর সে উঠতে ঘুমোনোর চেষ্টা। আমার তো রাত জাগা স্বভাব। বিশেষ করে সফরকালে।
ট্রেন থামবে স্টেশনে- টুক করে নেমে গিয়ে চারপাশটা ঘুরে আসব, ইঞ্জিনটা গিয়ে দেখব কি মডেলের, কোথাকার, দুচারটে লোকের সঙ্গে আলাপ হবে, মাঝরাতে গরম চা খেয়ে ঠোঁট পুড়বে, ট্রেন ছেড়ে দিলে দৌড়ে গিয়ে ওঠা -এসব না হলে আর বেড়ানো কিসের?
বেড়াতে যাওয়া ঠিক হওয়ার পর টিকিট কাটা যখন হয়ে গেল, তখন হোটেলের জন্য খোঁজ শুরু করলাম। পিক সিজন, হোটেল পাওয়া একটু মুশকিল। যদিও রাজগীর বাঙালীর খুব পছন্দের তালিকায় পড়েনা, তাও হোটেলে ঠাঁই নেই, ঠাঁই নেই ভাব। কয়েকটা হোটেল পেলামও। ১১০০/ ১২০০ টাকায় ডবল বেড। ঠিক করার আগে বন্ধুদের জানালাম যখন, আসানসোলের বন্ধু বলল - আমার খাস বন্ধুর বাড়ি রাজগীরে। ও ওখানেই আছে, আমি বলে দিচ্ছি, ও নিজে গিয়ে হোটেল ঠিক করে আসবে সব দেখেশুনে। তুই চাপ নিসনা একদম। কাজেই আমি হোটেল খোঁজায় ক্ষ্যান্ত দিলাম।
টিকিটটাও আরেক বন্ধু কেটেছিল। সে আমাকে জানানো মাত্রই বলেদিলাম - তুই কেটেনে আগে। তারপর ফোন কর। কাজেই টিকিটটা আরামসে হয়ে গেছিল।
হোটেলটা যে এতটা ভোগাবে বুঝিনি আগে।
একদম শেষ মুহুর্তে জানাল, হোটেল পাওয়া যাচ্ছেনা। সব বুকড। দুএকটা আছে। সেটাও ২২০০/ ২৫০০ চাইছে।
এত গালাগাল করলাম বাকি দুজন বন্ধুতে। তাও তার কোনো হেলদোল নেই। বলে কি ওই বন্ধুটার বাড়িইতো আছে। ওখানেই থেকে যাব নাহয়।
এতগুলো লোক কারুর বাড়িতে গিয়ে থাকব, হয় নাকি? তারপর আরও নানারকম সমস্যা আছে।
আবার হোটেল খোঁজা শুরু হল। তারপর কলকাতার সেই বন্ধু তার ট্র্যাভেল এজেন্টকে দিয়ে রাজগীরে দুদিন আর বুদ্ধগয়ায় দুদিন হোটেল বুক করল।
বক্তিয়ারপুরে যখন নামলাম তখন পৌনে পাঁচটা। ট্রেন যখন প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে তখন সবাই হুড়োহুড়ি করছে। এক বন্ধু বলল - দেখতো, বক্তিয়ারপুর এল কিনা? আমি নিশ্চিন্ত। ট্রেন পৌছোনোর কথা চারটে ছাপ্পান্নয় আর এখন চারটে চল্লিশ।
বললাম এটা নয় বুঝলি, এর পরেরটা বক্তিয়ারপুর হবে হয়ত। আসলে সারারাত জেগে সেই একটু চোখটা লেগে এসেছিল।
আশপাশের লোকজনের কথায় জানতে পারলাম এটাই বক্তিয়ারপুর। তখন হুড়োহুড়ি করে নামা। আর সেই হুড়োহুড়িতে গায়েদেওয়ার একটা চাদর রয়ে গেল বার্থে। আমরা নেমে পড়লাম। যখন মনে পড়ল, তখন ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। আর কিছু করার নেই।
স্টেশন থেকে নেমে বেরিয়ে এলাম বাইরে। স্টেশনের বাইরে সারসার গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। দানাপুর এক্সপ্রেস থেকে বক্তিয়ারপুরে নামার পর রাজগীর যাওয়ার একটা লোকাল ট্রেন আছে। কিন্তু তাতে আড়াই থেকে তিনঘন্টা সময় লাগে ৫৫ কিলোমিটার যেতে। সে ট্রেনের কোন তাড়া নেই। কেউ দাঁত মাজতে মাজতে হাত দেখালেও সে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। সে লোক মুখচোখ ধুয়ে এলে ট্রেনও ছাড়ে - এইরকম অবস্থা!!
তো আমরা গাড়িতেই যাব ঠিক করে এসেছিলাম। বাইরে বেরিয়ে এসে আগে চা খেলাম জমিয়ে। চা খেতে খেতেই আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোর ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলছি ভাড়ার। ১৬০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ১২০০ এমনকি ১০০০ টাকাতেও যাবে গাড়িগুলো। সুমো, বোলেরো, স্করপিও, ট্র্যাক্স গাড়ি সব। একটা গাড়িতেই সবার হয়ে যাবে। গাড়ি ঠিক করে তাকে বলা হল। সে নিয়ে এল গাড়ি। বড় একটা বোলেরো। কিন্তু অন্য একটা সমস্যা তৈরী হয়ে গেল জোর।
( চলবে )