Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.


Churn : Universal Friendship
Welcome to the CHURN!

To take full advantage of everything offered by our forum,
Please log in if you are already a member,
or
Join our community if you've not yet.

Churn : Universal Friendship
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Churn : Universal Friendship Log in

PEACE , LOVE and UNITY


তৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter

descriptionতৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter - Page 2 Emptyতৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter

more_horiz
First topic message reminder :

তৃতীয় অধ্যায়ঃ নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ

[You must be registered and logged in to see this link.]

►নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ:-



►নদীর কাজ [Work of River]:-

♦ নদী:

♦ নদীর কাজ করার পদ্ধতি:  

♦(ক) ক্ষয়সাধন:

♦ (খ) বহন:

♦ (গ) অবক্ষেপণ:



►কাজ অনুসারে নদীপ্রবাহের বিভাগ:

♦ (ক) পার্বত্য গতি: পার্বত্য গতিতে নদীর প্রধান কাজ ক্ষয় সাধন:

♦ (খ) মধ্যগতি: মধ্যগতিতে নদীর প্রধান কাজ বহন:  

♦ (গ) নিম্নগতি: নিম্নগতিতে নদীর প্রধান কাজ অবক্ষেপণ:



►নদীর পার্বত্য গতি : নদীর ক্ষয়সাধন ও বাহনের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ:

♦ আড়াআড়ি পাড় [Interlocking Spur]:  

♦ V -অক্ষরের উপত্যকা ও গিরিখাত [V-Shaped Valley & Gorge]:

♦ জলপ্রপাত [Waterfalls]:    

♦ ক্যানিয়ন [Canyon]



►নদীর মধ্যগতি : নদীর বহন ও অবক্ষেপণের ফলে সৃষ্ট ভুমিরূপ :

♦ নদীর বাঁক [Meander]:

♦ অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ [Ox-bow Lake বা Horse-bow]:



► নদীর নিম্নগতি : নদীর অবক্ষেপণের ফলে সৃষ্ট ভুমিরূপ :

♦ প্লাবন ভূমি [Flood Plain]

♦ ব-দ্বীপ [Delta]:



►হিমবাহের কাজ [Work of Glaciers]

♦ হিমরেখা [Snow Line]:

♦ হিমবাহ [Glacier]:

♦ হিমবাহের শ্রেণিবিভাগ:

♦ (ক) উপত্যকা হিমবাহ [Valley Glacier] বা পার্বত্য হিমবাহ [Mountain Glacier] :

♦ (খ) মহাদেশীয় হিমবাহ [Continental Glacier]

♦ (গ) পাদদেশীয় হিমবাহ [Piedmont Glacier]



►হিমবাহের কাজ [Work of Glaciers]:

► হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ:

♦ বার্গস্রুন্ড ও ক্রেভাসেস [Bergschurnd and Crevasses]:

♦ সার্ক, এরিটি ও পিরামিড চূড়া [Cirque, Arete & Pyramidal Peak] :

♦ U- আকৃতির উপত্যকা [U -Shaped Valley]:

♦ রসে মাতনে [Roche Moutonne]:

♦ ঝুলন্ত উপত্যকা [Hanging Valley]:

♦ ক্র্যাগ ও টেল [Crag & Tail]:

♦ গ্রাবরেখা [Moraine]:



►হিমবাহের সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ:

♦ অবক্ষেপ ও ইরাটিক্স [Drift & Erratics]:

♦ বোল্ডার ক্লে [Boulder Clay]:

♦ ড্রামলিন [Drumlin]:

♦ এসকার [Esker] :

♦ কেম [kame] :

♦ আউট-ওয়াস-প্লেন [Out-Wash-Plain]:



► হিমশৈল:



►বায়ুর কাজ [Work of Wind]

♦ বায়ুপ্রবাহের কাজের ক্ষেত্র :

♦ বায়ুপ্রবাহের কাজ করার পদ্ধতি:

♦ (ক) অপসারণ [Deflation]:

♦ (খ) অবঘর্ষণ [Abrasion]:

♦ (গ) ঘর্ষণ [Attrition]



► বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ:-

♦ গৌর [Gour]:

♦ জুগেন [Zeugen]:

♦ ইয়ারদাঙ [Yardang]:

♦ ব্লো-আউট [Blow-Out]:

♦ ইনসেলবার্জ [Inselberg]:



► বায়ুপ্রবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ:-

♦ বালিয়াড়ি [Sandune]:

♦ তির্যক বালিয়াড়ি [Tranverse Dune]:

♦ অণুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি [Longitudinal Dune]:

♦ বার্খান[Barkhan]:

♦ সীফ বালিয়াড়ি [Self Dune]:

♦ লোয়েস[Loess]:



► অন্যান্য বৈশিষ্ট্য:


### তোমার সাহায্যে আমরা পাশে আছি, তুমি এগিয়ে যাও।
# প্রিয় ছাত্র - ছাত্রী যদি কোথাও কোনো ভুল থেকে থাকে তবে মনে রাখবে সেটা অনিচ্ছাকৃত। নিচে কমেন্ট করো। ঠিক করে দেওয়া হবে।

CLASS TEN GEOGRAPHY MCQ wbbse
#Madhyamik #2020 #Geography #Suggestions
CLASS TEN GEOGRAPHY MCQ class x

Madhyamik pariksha 2020

Last edited by Admin on Sat Sep 12, 2020 11:04 am; edited 1 time in total

descriptionতৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter - Page 2 Emptyছোটো প্রশ্ন ও উত্তর -- তৃতীয় অধ্যায় sq

more_horiz
ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর:[তৃতীয় অধ্যায়]


নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ (Work of Rivers, Glaciers and Winds)



প্রশ্ন:- নদী (River) কাকে বলে ?

উত্তর:- বৃষ্টির জল, তুষার-গলা জল, হ্রদ বা ঝর্ণার জল ভূমির ঢাল অনুসারে গড়িয়ে এসে স্বাভাবিক যে জলধারা বা জলস্রোতের সৃষ্টি করে তাকে নদী বলে ।



প্রশ্ন:- শুষ্ক অঞ্চলে কোমল শিলার ওপর গঠিত নদী উপত্যকাকে কী বলে ?

উত্তর:- শুষ্ক অঞ্চলে কোমল শিলার ওপর গঠিত নদী উপত্যকাকে ক্যানিয়ন (Canyon) বলে ।



প্রশ্ন:- একটি পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়নের (Canyon) নাম কী ?

এই অংশ লুকানো (Hidden) আছে । ফোরামে যোগদান করলে দেখা যাবে ।






দয়াকরে ফোরামে যোগদান করুন ।





কিভাবে যোগদান করবেন তার টিউটোরিয়াল লিংক


---

Code:

https://churn.forumotion.com/t575-how-to-register-in-forum

[You must be registered and logged in to see this link.]

descriptionতৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter - Page 2 Emptyঅধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:[৩য় অধ্যায়- ১ম অংশ]

more_horiz
অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:[৩য় অধ্যায়- ১ম অংশ]


প্রশ্ন:- ১. মন্থকূপ কী ?

পার্বত্য গতিতে নদীখাতের কোনো অংশের নরম শিলা থাকলে প্রবল জলস্রোতের সঙ্গে সঙ্গে নদীবাহিত নানান আকৃতির শিলাখন্ডগুলিও ঘুরতে থাকায় নদীখাতে গর্তের আকার ক্রমশ বেড়ে হাঁড়ির মতো হয় । পার্বত্য পথে নদীর ক্ষয়কাজের ফলে সৃষ্টি হওয়া এইসব গর্তকে মন্থকূপ বা পটহোল বলে ।



প্রশ্ন:- ২ খরস্রোত কী ?

নদীর পার্বত্য গতিপথে কোমল ও কঠিন শিলা স্তরগুলি একটির পর একটি লম্বালম্বিভাবে থাকলে কোমল শিলাস্তরগুলি কঠিন শিলাস্তরের তুলনায় অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে গিয়ে কয়েকটি সিঁড়ি বা ধাপের সৃষ্টি করে । নদী-উপত্যকায় সিঁড়ি বা ধাপের সৃষ্টি হলে নদীস্রোত একটির পর একটি সিঁড়ি পেরিয়ে ধাপে ধাপে প্রবলবেগে নীচে নেমে আসে, একে খরস্রোত বলা হয় ।

উদাহরণ:- মিশরের আসোয়ান থেকে আটবারা পর্যন্ত স্থানে নীল নদের গতিপথে ছ্য় জায়গায় খরস্রোত দেখা যায় ।



প্রশ্ন:- ৩ সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে ?

নদীর জলপ্রবাহ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে কোনও প্রাচীন মালভূমি অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে ক্রমশ ক্ষয় পেতে পেতে এক সময় উঁচু-নীচু ঢেউ খেলানো ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায় ভূমি বলা হয় । সমপ্রায় ভুমির এখানে ওখানে ছোটো ছোটো পাহাড় বা মোনাডনক দেখা যায় ।

উদাহরণ: ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের ছোটোনাগপুর মালভূমির পূর্ব অংশে সমপ্রায় ভূমি দেখা যায়।



প্রশ্ন:- ৪. খাঁড়ি কাকে বলে ?

মোহনার কাছে ১) নদীতে জলস্রোত খুবই বেশি থাকলে অথবা, ২) সমুদ্র বেশি গভীর হলে কিংবা ৩) সমুদ্রস্রোতের অপসারণ ক্ষমতা খুবই বেশি হলে মোহনার কাছে পলি সঞ্চিত হাতে পারে না । ফলে কোনো বদ্বীপ গঠিত হয় না । এমত অবস্থায় নদীর মোহনাটি যথেষ্ট খোলা ও প্রশস্ত হলে এই ধরনের খোলা ও প্রশস্ত নদী মোহনাটিকে খাঁড়ি বলে । উদাহরণ হিসাবে আমাজন, কঙ্গো, টেমস্‌, ক্লাইড প্রভৃতি নদীতে এই রকম খাঁড়ির সৃষ্টি হয়েছে ।



প্রশ্ন:- ৫. স্বাভাবিক বাঁধ কী ?

১) নিম্ন প্রবাহে নদীর গতিবেগ একেবারে কমে গেলে নদী বাহিত বিভিন্ন আকৃতির শিলাখন্ড, শিলাচূর্ণ, বালি, পলি প্রভৃতি বহন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং নদী বাহিত বিভিন্ন পদার্থ, শিলাখন্ড, শিলাচূর্ণ, বালি, পলি প্রভৃতি নদীর দু’তীরে অবক্ষেপণের মাধ্যমে সঞ্চিত হয় ।

২) দীর্ঘকাল ধরে পলিসঞ্চয়ের ফলে নদীর দুই তীরবর্তী স্থান পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তুলনায় উঁচু হয়ে যায়।

৩) নদীর দুই পাশে পলি সঞ্চয়ের ফলে প্রাকৃতিকভাবে বাঁধের আকারে যে দীর্ঘ ভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে স্বাভাবিক বাঁধ বলা হয় ।

৪) স্বাভাবিক বাঁধের উচ্চতা সাধারণত ২ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে ।

৫) স্বাবাভিক বাঁধ নদী ও নিম্ন অববাহিকাকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে ।

উদাহরণ:- কলকাতা শহর গঙ্গার স্বাভাবিক বাঁধার ওপর অবস্থিত ।



প্রশ্ন:- ৬. পলল ব্যজনী অথবা পলিশঙ্কু কী ?

পার্বত্য অঞ্চল পার হয়ে নদী যখন সমভূমিতে নেমে আসে তখন ভূমির ঢাল হঠাৎ কমে যায় । নদীর বহন ক্ষমতা ও স্রোত বেগ দুইই হঠাৎ কমে যায় । ফলে নদী উপত্যকায় নদী বাহিত শিলাখন্ড, পলি, বালি, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি জমতে থাকে । কালক্রমে তিন কোণা শঙ্কু আকৃতির পলিগঠিত ভূমি বা পলল ব্যজনীর সৃষ্টি হয় ।

উদাহরণ:- গঙ্গার সমভূমি প্রবাহে হরিদ্বার ও হৃষীকেশের কাছে বহু পলল ব্যজনী দেখা যায় ।



প্রশ্ন:- ৭. নদীমঞ্চ কাকে বলে ?

নদীর মধ্যগতিতে নদী যখন সমভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীর উভয় তীরে অনেক সময় একাধিক অসমান ধাপ বা মঞ্চ দেখা যায়, এদের নদীমঞ্চ বলা হয় । মধ্যগতিতে নদী-উপত্যকার দু’ধারে নদীবাহিত বিভিন্ন পদার্থ যেমন- শিলাখন্ড, পলি, বালি, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি ক্রমাগত সঞ্চিত হয়ে এই ধরনের অসমান ধাপ তৈরি হয় । নতুন নদী উপত্যকা পুরোনো নদী উপত্যকার তুলনায় বেশি গভীর হওয়ায় এই ধরনের নদীমঞ্চের সৃষ্টি হয় । ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা প্রভৃতি নদীর উভয় তীরে নদীমঞ্চ দেখা যায়।



প্রশ্ন:- ৮. উপকূলীয় হিমবাহ কাকে বলে ?

উত্তরে সুমেরু বৃত্তের মধ্যে অবস্থিত সুমেরু মহাসাগরে এবং দক্ষিণে কুমেরু বৃত্তের মধ্যে অবস্থিত দক্ষিণ মহাসাগরের উপকূল অঞ্চল উপকূলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে বিস্তৃত বরফের স্তর বা হিমবাহ আছে, এই সমস্ত হিমবাহকে উপকূলীয় হিমবাহ বলা হয়।

উদাহরণ:- অ্যান্টার্কটিকার রস উপকূল অঞ্চলে উপকূলীয় হিমবাহ দৃশ্যমান ।



প্রশ্ন:- ৯. হিমসিঁড়ি কী ?

উচ্চ পার্বত্য উপত্যকার সমগ্র অংশে হিমবাহ কখনো কখনো সমানভাবে প্রবাহিত হয় না । তখন পার্বত্য উপত্যকাটির বিভিন্ন অংশে ক্ষয়কাজের পার্থক্য হয় । ফলে উপত্যকার গায়ে সিঁড়ির মতো বহু ধাপের সৃষ্টি হয় । হিমবাহের ক্ষয়কাজের তারতম্যের জন্য পার্বত্য উপত্যকায় গঠিত হওয়া এইসব সিঁড়ি বা ধাপকে হিমসিঁড়ি বা আল্পস বলে ।



প্রশ্ন:- ১০. প্যাটার্নস্টার হ্রদ কাকে বলে ?

প্রাকৃতিক কারণে কোনো অঞ্চলে হিমসিঁড়িগুলির ঢাল উপত্যকার দিকে না হয়ে পর্বতের দিকে হয় । তখন হিমবাহ গলা জল উপত্যকার দিকে যেতে না পেরে হিমসিঁড়িগুলির মধ্যে আবদ্ধ হয়, এবং হ্রদের সৃষ্টি করে । এই ভাবে সৃষ্ট হ্রদকে প্যাটার্নস্টার হ্রদ বলে ।



প্রশ্ন:- ১২. ফিয়র্ড কী ?

সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন পার্বত্যভূমিতে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে গিরিখাতের সৃষ্টি হয় । এই সব গিরিখাতগুলির মধ্যে আংশিক জলপূর্ণ গিরিখাতকে ফিয়র্ড বলে । পার্বত্য অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলভাগ অনেক সময় হিমবাহ দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় ও অসংখ্য উপত্যকার সৃষ্টি করে । এইসব উপত্যকাগুলি জলমগ্ন হলে ফিয়র্ডের সৃষ্টি হয় । ইউরোপ মহাদেশের স্কটল্যান্ড ও নরওয়ের সমুদ্র উপকূলভাগে অসংখ্য ফিয়র্ড দেখা যায়, এদের গভীরটা খুব হয়,নরওয়ের সোজনে-ফিয়র্ডের গভীরতা প্রায় ১২০০ মিটার ।



প্রশ্ন:- ১৩. কেটল [Kettle] কী ?

হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে যেসব ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, কেটল [Kettle] হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপের নিদর্শন । আউট ওয়াস সমভূমিতে [Out-wash-Plain] - এ হিমবাহের নানারকম অবক্ষেপণের মধ্যে চাপা পড়া বিরাট বরফের চাঁই থেকে যায় । কালক্রমে বরফ গলে গেলে অঞ্চলটি বেশ বড়ো আকারের গর্তরূপে অবস্থান করে, এই সব গর্তকে কেটেল [Kettle] বলা হয় । এইসব গর্তগুলো জলপূর্ণ হয়ে যে হ্রদ সৃষ্টি করে, তাকে কেটেল হ্রদ (Kettle Lake) বলে । ইউরোপ মহাদেশের স্কটল্যান্ডের ওর্কনে দ্বীপে ‘কেটল’ ভূমিরূপ এবং ‘কেটল হ্রদ’ দেখা যায় ।



প্রশ্ন:- ১৪. নব বলে কী বোঝায় ?

হিমবাহের সঞ্চয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, গ্রাবরেখা [Moraine] হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । পার্বত্য অঞ্চল দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় ক্ষয় পাওয়া শিলাখন্ড, নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি হিমবাহের সঙ্গে বয়ে চলে । এই সব বিচ্ছিন্ন ও ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাখন্ডের কিছু অংশ হিমবাহের দু’পাশে, সামনে ও তলদেশে স্তূপাকারে সঞ্চিত হয় । সঞ্চিত এইসব শিলাস্তূপকে গ্রাবরেখা বলে । শিলাখন্ড বা শিলাচূর্ণ, নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি হিমবাহের সামনে স্তূপাকারে সঞ্চিত হলে তাকে প্রান্ত-গ্রাবরেখা [Terminal Moraine] বলে । অনেক সময় হিমবাহের প্রান্তভাগ থেকে প্রবাহিত বরফগলা জলধারার প্রভাবে প্রান্ত-গ্রাবরেখার মধ্যে পাথর, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে ছোটো ছোটো টিলা বা ঢিবির মতো ভূমিরূপ সৃষ্টি করে, ছোটো ছোটো টিলা বা ঢিবির মতো এই ধরনের ভূমিরূপকে নব বলা হয় ।



প্রশ্ন:- ১৫. ভেন্টিফ্যাক্ট ও ড্রিক্যান্টার কী ?

বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভাসমান বালি, ছোটো ছোটো পাথরকুচি, শক্ত কোয়ার্টজ কণা প্রভৃতির সঙ্গে শিলার ঘর্ষণে শিলাস্তর ক্ষয় পায়, একে অবঘর্ষ বলে । মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুবাহিত বালির সঙ্গে সংঘর্ষে যখন পাথরখন্ডগুলোর সামনের দিকে ছুঁচালো ও মসৃণ হয়ে যায়, তখন তাকে ভেন্টিফ্যাক্ট বলে। মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুবাহিত বালির সঙ্গে সংঘর্ষে যখন পাথরগুলোর তিনদিকই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তখন তাকে ড্রিকান্টার বলা হয়।



প্রশ্ন:- ১৬. ধান্দ কাকে বলে ?

বায়ুর অপসারণ প্রক্রিয়ায় শিথিল বালুকারাশি একস্থান থেকে অপর স্থানে স্থানান্তরিত হয় । মরুভূমি অঞ্চলে শিথিল বালুকারাশি এভাবে অপসারণের ফলে মরুভূমির কোনো কোনো স্থানে নীচু হয়ে যায় এবং মরুভূমিতে ছোটো বড়ো নানান আকৃতির গর্ত সৃষ্টি হয় । রাজস্থানের থর মরুভূমিতে বায়ুর অপসারণের ফলে সৃষ্টি হওয়া ছোটো ছোটো গর্তকে স্থানীয়ভাবে ধান্দ বলে ।



প্রশ্ন:- ১৭. মরূদ্যান [Oasis] কী ?

প্রবল বায়ূপ্রবাহের ফলে বহুদিন ধরে মরুভূমির কোনো স্থানের বালি অপসারিত হয়ে নীচু হতে হতে নীচু অংশের গভীরতা যখন ভূগর্ভের জলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায় তখন সেখানে মরূদ্যান [Oasis] সৃষ্টি হয়। মরূদ্যান জলহীন শুষ্ক এবং রুক্ষ মরুভূমিতে মানুষ ও পশুর জীবন রক্ষা করে ।

উদাহরণ:- সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধ একটি বড় মরূদ্যানের উপর গড়ে উঠেছে ।



প্রশ্ন:- ১৮. অবঘর্ষ কী ?

অবঘর্ষ হল এক রকমের ক্ষয়সাধনকারী প্রক্রিয়া । এই ক্ষয়সাধনকারী প্রক্রিয়া ক) নদী, খ) হিমবাহ এবং গ) বায়ুর ক্ষয়কাজের দ্বারা হতে পারে ।

ক) নদীর দ্বারা অবঘর্ষ: নদীবাহিত প্রস্তরখন্ডের সঙ্গে নদীখাতের সংঘর্ষের ফলে নদীখাতে ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয়, যা নদীখাতকে আরও তাড়াতাড়ি ক্ষয় করতে সাহায্য করে । নদীর ক্ষয়কাজের এই প্রক্রিয়াকে অবঘর্ষ বলে ।

খ) হিমবাহ দ্বারা অবঘর্ষ: প্রবাহমান হিমবাহের মধ্যে যেসব পাথরের টুকরো থাকে সেগুলোর সঙ্গে পর্বতের সংঘর্ষে পাহাড়ের গা কিংবা হিমবাহ উপত্যকা ক্রমশ ক্ষয়ে গিয়ে মসৃণ হলে তাকে অবঘর্ষ বলে ।

গ) বায়ুর দ্বারা অবঘর্ষ : বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভাসমান বালি, ছোটো ছোটো পাথরখন্ড, শক্ত কোয়ার্টজ কণা প্রভৃতির সঙ্গে ঘর্ষণে শিলাস্তর ক্ষয় পায়, একে অবঘর্ষ বলে । এই রকমের ঘর্ষণে শিলাস্তরে গভীর দাগ, আঁচড়ানোর দাগ বা মৌচাকের মতো অসংখ্য ছোটো ছোটো ছিদ্রের সৃষ্টি হয় । কঠিন শিলাস্তরের তুলনায় কোমল শিলাস্তরে অবঘর্ষের পরিমাণ বেশি হয় । প্রধানত মরুভূমি অঞ্চলে অবঘর্ষের ফলে শিলা গৌর, ইনসেলবার্জ, ভেন্টিফ্যাক্ট, ড্রিকান্টার, ইয়ারদাং, জুগ্যান প্রভৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় । মরুভূমি অঞ্চলে কঠিন ও কোমল শিলাস্তর ভূমির সঙ্গে পরস্পর সমান্তরালভাবে বিন্যস্ত হয়ে জুগ্যান এবং লম্বালম্বিভাবে বিন্যস্ত হয়ে ইয়ারদাং ভূমিরূপ গঠন করে ।



প্রশ্ন:- ১৯. থর মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুর ক্ষয় কাজ সবচেয়ে বেশি হয় কেন ?

প্রধানত মরুভূমি অঞ্চলেই বায়ুর ক্ষয়কাজ সবচেয়ে বেশি হয় । এর কারণ হল:-

১) মরুভূমি অঞ্চলে পাহাড়-পর্বত, গাছপালা প্রভৃতির উপস্থিতি না থাকায় মরুভূমির ওপর দিয়ে যখন বায়ু প্রবাহিত হয় বায়ুপ্রবাহ কোনরূপ বাধার সম্মুখীন হয় না । ফলে মরুভূমির ওপর দিয়ে প্রবলবেগে বায়ু প্রবাহিত হয়,

২) আদ্রতা, বৃষ্টিপাত এবং গাছপালা কোনো স্থানের ভূমিকে দৃঢ় ও সংবদ্ধ করে রেখে ক্ষয়ীভবনে বাধা সৃষ্টি করে । মরুভূমিতে এই তিনটিরই অভাব আছে । এজন্য মরুভূমিতে শিথিল মাটি ও বালির ওপর বায়ু সহজেই তার ক্ষয়কাজ চালাতে পারে,

৩) মরুভূমিতে শীত ও গ্রীষ্ম এবং দিন ও রাত্রির মধ্যে তাপমাত্রার প্রভেদ খুবই বেশি । এই জন্য ব্যাপক সংকোচন ও প্রসারনের ফলে সংঘটিত যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনের দ্বারা শিলা সহজেই চূর্ণবিচূর্ণ ও শিথিল হয়ে বালিতে পরিণত হয়, এতে বায়ুর ক্ষয়কার্যের সুবিধা হয় । এই সমস্ত বিভিন্ন কারণের জন্যই থর মরুভূমিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুর ক্ষয়কাজের হার সবচেয়ে বেশি হয় ।



প্রশ্ন:- ২০. সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে ?

নদীর জলপ্রবাহ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে প্রাচীন মালভূমি এবং উচ্চভূমি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় পেতে পেতে এক সময় উঁচু-নীচু ঢেউ-খেলানো ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায় ভূমি বলা হয়।

উদাহরণ:- ঝাড়খন্ড রাজ্যের ছোটনাগপুর মালভূমির কোনো কোনো অংশ সমপ্রায়ভূমি এবং এদের মধ্যে পরেশনাথ ও পাঞ্চেত পাহাড় দুটি হল মোনাডনক ।



প্রশ্ন:- ২১. নদীর নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ কাকে বলে ?

উচ্চ ও মধ্যগতি প্রবাহের পর নদীপ্রবাহ যখন সমুদ্র সমতলে আসে, তখন সেখান থেকে মোহনা পর্যন্ত অংশে নদীর প্রবাহকে নদীর নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ বলে । মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের পর থেকে গঙ্গাসাগরের মোহনা পর্যন্ত অংশে গঙ্গার গতিপ্রবাহকে নিম্ন বা বদ্বীপ প্রবাহ বলা হয় ।



প্রশ্ন:- ২২. নদীর বিভিন্ন কাজ কী কী বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ?

নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ গতিপথে নদী প্রধানত তিন রকমের কাজ করে থাকে, যথা- (ক) ক্ষয়সাধন, (খ) বহন, ও (গ) অবক্ষেপন বা সঞ্চয় । এই তিন ধরনের কাজ নির্ভর করে নদীর সামর্থ্যের ওপর । নদীর সামর্থ্য নির্ভর করে প্রধানত তিনটি বিষয়ের ওপর, যথা:- ১) জলের পরিমাণ, ২) জলের গতিবেগ ও ৩) গতিপথের ঢাল । এগুলি বৃদ্ধি পেলে নদীর কর্মক্ষমতা বিশেষত ক্ষয় ও বহন অনেকাংশে বেড়ে যায় । আবার এগুলি কমে গেলে নদীর অবক্ষেপণ বা সঞ্চয়কাজ অনেক বেশি হয় ।



প্রশ্ন:- ২৩. নদীর গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী ?

নদীর গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে নানান সাদৃশ্য থাকলেও এবং তাদের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল এই যে-

১) গিরিখাত সৃষ্টি হয় বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে, অপরপক্ষে, ক্যানিয়ন সৃষ্টি হয় বৃষ্টিহীন ‘প্রায় শুষ্ক’ মরুপ্রায় উচ্চভূমি অঞ্চলে ।

২) নদীর পার্বত্য প্রবাহে গিরিখাত খুব গভীর এবং ইংরেজী ‘V’ অক্ষরের মতো হয় । পক্ষান্তরে, ক্যনিয়নের আকৃতি ইংরেজি ‘I’ অক্ষরের মতো হয়ে থাকে।



প্রশ্ন:- ২৪. নদী ও হিমবাহ উপত্যকার মধ্যে কী ধরনের আকৃতিগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ?

নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘I’ অথবা ‘V’-এর মতো, কিন্তু হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি ‘U’ -এর মতো হয় ।



প্রশ্ন:- ২৫. হিমবাহ কীভাবে ক্ষয়সাধন করে ?

হিমবাহ প্রধানত উৎপাটন [Plucking] এবং অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়সাধন করে ।

১) উৎপাটন [Plucking]: গতিশীল হিমবাহের চাপে যখন পর্বতের গা থেকে পাথর খুলে আসে তখন তাকে উৎপাটন [Plucking] বলে ।

২) অবঘর্ষ [Abrasion] : প্রবাহমান হিমবাহের মধ্যে যেসব পাথরের টুকরো থাকে সেগুলোর সঙ্গে পর্বতের সংঘর্ষে পাহাড়ের গা কিংবা হিমবাহ -উপত্যকা ক্রমশ ক্ষয়ে গিয়ে মসৃণ হলে তাকে অবঘর্ষ [Abrasion] বলে ।

descriptionতৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter - Page 2 Emptyঅধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:[৩য় অধ্যায়- ২য় অংশ]

more_horiz
অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:[৩য় অধ্যায়- ২য় অংশ]


প্রশ্ন:-১. বায়ুর কাজ কোথায় বেশি দেখা যায় ?

প্রধানত মরুভূমি অঞ্চলেই বায়ুর ক্ষয়কাজ সবচেয়ে বেশি হয় । এর কারণ হল:-

১) মরুভূমি অঞ্চলে পাহাড়-পর্বত, গাছপালা প্রভৃতির উপস্থিতি না থাকায় মরুভূমির ওপর দিয়ে যখন বায়ু প্রবাহিত হয় বায়ুপ্রবাহ কোনরূপ বাধার সম্মুখীন হয় না । ফলে মরুভূমির ওপর দিয়ে প্রবলবেগে বায়ু প্রবাহিত হয়,

২) আদ্রতা, বৃষ্টিপাত এবং গাছপালা কোনো স্থানের ভূমিকে দৃঢ় ও সংবদ্ধ করে রেখে ক্ষয়ীভবনে বাধা সৃষ্টি করে । মরুভূমিতে এই তিনটিরই অভাব আছে । এজন্য মরুভূমিতে শিথিল মাটি ও বালির ওপর বায়ু সহজেই তার ক্ষয়কাজ চালাতে পারে,

৩) মরুভূমিতে শীত ও গ্রীষ্ম এবং দিন ও রাত্রির মধ্যে তাপমাত্রার প্রভেদ খুবই বেশি । এই জন্য ব্যাপক সংকোচন ও প্রসারনের ফলে সংঘটিত যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনের দ্বারা শিলা সহজেই চূর্ণবিচূর্ণ ও শিথিল হয়ে বালিতে পরিণত হয়, এতে বায়ুর ক্ষয়কার্যের সুবিধা হয় ।

এছাড়া সমুদ্র উপকূলেও বায়ুর কাজ দেখা যায়।



প্রশ্ন:-২. নদীর উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন গতির বিভিন্ন কাজের তুলনা :-

নদীর উচ্চ, মধ্য ও নিম্নগতির বিভিন্ন কাজের তুলনা


বিভিন্ন গতি


নিম্নক্ষয়


পার্শ্বক্ষয়


সঞ্চয়


নদীখাত


বিশেষ ভূমিরূপ

১) উচ্চগতি


বেশি


কম


X


গভীর ও অগভীর


গিরিখাত ও জলপ্রপাত

২) মধ্যগতি


কম


মাঝারি


বেশি


চওড়া ও অগভীর


স্বাভাবিক বাঁধ ও প্লাবনভূমি

৩) নিম্নগতি


X


বেশি


খুব বেশি


খুব চওড়া ও অগভীর


চর, দ্বীপ, বদ্বীপ, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ



প্রশ্ন:- ৩. নদীর বহন কাজ কী কী প্রক্রিয়ায় সংঘটিত হয় ?

নদীর তার বহন কাজ নিম্নলিখিত চারটি প্রক্রিয়ায় সংঘটিত করে থাকে, যথা-

১) দ্রবণ [Solution] প্রক্রিয়ায় বহন: অনেক সময় নদী তার গতিপথে কোনো কোনো প্রস্তরখন্ডকে দ্রবিভূত করে তার জলস্রোতের সঙ্গে বহন করে থাকে । লবণ, চুনাপাথর প্রভৃতি নদীর জলে দ্রবিভূত হয়ে বাহিত হয় ।

২) ভাসমান [Suspension] প্রক্রিয়ায় বহন: অনেক সময় ক্ষুদ্রাকার ও কম ওজনের পাথর, বালি বা কাদার কণা নদী-স্রোত চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে এক স্থান থেকে অন্যত্র ভেসে যায় এবং নদী এগুলিকে ভাসমান অবস্থায় বহন করে থাকে।

৩) লম্ফদান [Saltation] প্রক্রিয়ায় বহন: নদীর স্রোতের টানে কিছু কিছু শিলাখন্ড নদীখাতে বারবার ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে চলে এবং কালক্রমে নদীপথে বাহিত হয় ।

৪) আকর্ষণ [Traction] প্রক্রিয়ায় টানের মাধ্যমে বহন: নদীগর্ভে পতিত বিভিন্ন রকম ভারী প্রস্তরখন্ড স্রোতের টানে নদীর তলদেশ দিয়ে বোঝা হিসাবে (Bed-load) গড়িয়ে গড়িয়ে অন্যত্র বাহিত হয় । নদীবাহিত বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ প্রক্রিয়ার সাহায্যে পরিবাহিত বস্তুর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ।



প্রশ্ন:- ৪. নদীর অবঘর্ষ ক্ষয় ও ঘর্ষণ ক্ষয়ের মধ্যে পার্থক্য কী ?

নদীর অবঘর্ষ ক্ষয় ও ঘর্ষণ ক্ষয়ের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল এই যে- পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল স্রোতের জন্য নদীবাহিত নানান আকারের ও বিভিন্ন আয়তনের পাথরগুলোর সঙ্গে নদীখাতে ঘর্ষণের আঘাতের ফলে নদী খাতে ছটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয় । এই প্রক্রিয়াকে অবঘর্ষ ক্ষয় বলে । এই গর্তগুলোর জন্য নদীখাত আরও দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায় । অর্থাৎ অবঘর্ষ ক্ষয়ের ফলে নদীখাতে ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয়।

পক্ষান্তরে, ঘর্ষণ ক্ষয়ের সময় নদীবাহিত পাথরগুলো পরস্পরের সঙ্গে ক্রমাগত ঘর্ষণে ও ঠোকাঠুকির ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে অবশেষে বালি কণায় পরিনত হয় । অর্থাৎ নদীর ঘর্ষণ ক্ষয়ের ফলে পাথরখন্ডগুলি বালি কণায় রূপান্তরিত হয় ।



প্রশ্ন:- ৫. নদী উপত্যকার সঙ্গে হিমবাহ উপত্যকার পার্থক্য:-

নদী উপত্যকা ও হিমবাহ উপত্যকার পার্থক্য


বৈশিষ্ট্য


নদী উপত্যকা --- হিমবাহ উপত্যকা

১) অবস্থান গত পার্থক্য


১) মেরু প্রদেশের বরফাবৃত অঞ্চল এবং উষ্ণ ও শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চল ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে নদী উপত্যকার উপস্থিতি লক্ষ করা যায় না ।


--- ১) কেবলমাত্র বরফে ঢাকা ঊঁচু পার্বত্য অঞ্চল এবং হিমশীতল মেরু অঞ্চলেই হিমবাহ উপত্যকার উপস্থিতি লক্ষ করা যায় ।

২) আকৃতিগত পার্থক্য


২) পার্বত্য অঞ্চলে নদীর উচ্চগতিতে নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজী ‘I’ বা সরু ‘V’ আকৃতির হয় । উচ্চগতির শেষে ও মধ্যগতির প্রথমে নদী উপত্যকায় ‘নদীমঞ্চ’ সৃষ্টি হয় । সমভূমিতে নদীর মধ্যগতিতে নদী উপত্যকার আকৃতি প্রশস্ত ও খুব চওড়া এবং নদীখাত ক্রমশ অগভীর ও বিরাট চওড়া হতে থাকে । নিম্নগতিতে নদীখাতে চড়া পড়ে নদী উপত্যকায় বিশাল চড়ার সৃষ্টি হয় এবং নদী উপত্যকা অসম্ভব আঁকাবাঁকা হয়ে যায় । নদী উপত্যকার আঁকাবাঁকা এই গতিপথকে মিয়েন্ডার বলে ।


--- ২) উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল হিমবাহের ক্ষয়কাজের ফলে খুব চওড়া তলদেশ এবং অপেক্ষাকৃত মসৃণ ও খাড়া পাড়যুক্ত হিমবাহ উপত্যকার সৃষ্টি হয় । এই সময়ে হিমবাহ উপত্যকার মধ্য দিয়ে অসম্ভব ভারী এবং কঠিন বরফের চাঁই প্রবাহিত হওয়ার জন্য হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি হয় অনেকটা ইংরেজী ‘U’ অক্ষরের মতো । সাধারণত সোজাপথে প্রবাহিত হয় বলে হিমবাহ উপত্যকায় কখনোই বাঁক বা মিয়েন্ডার গঠিত হয় না ।

হিমবাহ উপত্যকায় কোনো রকমের মঞ্চ সৃষ্টি হয় না ।
৩) প্রবাহের গতি ৩) পার্বত্য ও উচ্চ সমভূমি অঞ্চলে নদী স্রোতের গতিবেগ প্রবল হয়, নিম্নভূমিতে নদী স্রোতের গতিবেগ ধীরে ধীরে কমে আসে ।
--- ৩) বেশিরভাগ সময়েই হিমবাহ অত্যন্ত ধীরগতিতে প্রবাহিত হয় ।
৪) ক্ষয়ের প্রকৃতি ৪) নদী উপত্যকায় ক্ষয়কাজের ফলে সৃষ্ট পাথরখন্ডগুলির আকৃতি গোলাকার ও মসৃণ হয় ।
--- ৪) হিমবাহ উপত্যকায় ক্ষয়কাজের ফলে সৃষ্ট পাথরখন্ডগুলি কোনো নির্দিষ্ট আকার থাকে না এবং আকৃতিতে এরা এবড়ো খেবড়ো হয় ।
৫) ভূমিরূপের পার্থক্য ৫) নদীর সঞ্চয় কাজের ফলে নদী উপত্যকায় প্লাবনভূমি, স্বাবাভিক বাঁধ, বদ্বীপ প্রভৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।
--- ৫) হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে হিমবাহ উপত্যকায় গ্রাবরেখা, ড্রামলিন, টিলা, কেম প্রভৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।



প্রশ্ন:- ৬. নদী উপত্যকা ও হিমবাহ উপত্যকার আকৃতির পার্থক্যের কারণ কী ?

নদী-উপত্যকা ও হিমবাহের উপত্যকার পার্থক্যের কারণ:- নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজী I অথবা V -এর মতো, কিন্তু হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি U-এর মতো হয়, এর কারণ হল:-

১) নদীর উচ্চগতিতে ভূমির ঢাল বেশি হওয়ায় নদী প্রবল গতিবেগ সম্পন্ন হয় এবং নদী শুধুই নীচের দিকে ক্ষয় করে । এর ফলে নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি I -এর মতো হয় ।

২) ক্রমশ নদী উপত্যকার পার্শ্বদেশ বৃষ্টির জল, আবহবিকার বা ধসের ফলে ক্ষয় পেতে থাকলে উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদী উপত্যকা সংকীর্ণ V -এর মতো হয় ।

৩) নদীর অন্যান্য গতিতে নদী-উপত্যকা নীচের দিকে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না বললেই চলে । পরিবর্তে নদী-উপত্যকা পাশের দিকে ক্ষয় হয়, ফলে নদী উপত্যকা সংকীর্ণ V -এর পরিবর্তে প্রশস্ত V-এর আকার নেয় ।

হিমবাহ যখন উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন সেখানে হিমবাহের নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয় প্রায় সমানভাবে হতে থাকে । এক্ষেত্রে হিমবাহের ক্রমাগত ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়ের ফলে উপত্যকাটি বরফমুক্ত হলে দেখা যায় যে:- (ক) হিমবাহের তলদেশ বেশ প্রশস্ত, (খ) পার্শ্বদেশ বেশ খাড়া এবং, (গ) আড়াআড়ি পার্শ্বদেশ অনেকটা ইংরেজি U অক্ষরের মতো দেখতে হয় ।



প্রশ্ন:- ৭. পললশঙ্কু ও ব-দ্বীপের মধ্যে পার্থক্য:-

পলল শঙ্কু ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য


পললশঙ্কু --- ব-দ্বীপ

১) পর্বতের পাদদেশে সমভূমিতে প্রবেশের মুখে নদীর মধ্যগতিতে পার্বত্য অঞ্চলের শিলাখন্ড, নুড়ি, বালি, কাদা প্রভৃতি নদীতে সঞ্চিত হয়ে পললশঙ্কু গঠিত হয়।


--- ১) মোহনার কাছে নদীর নিম্নগতিতে নদীবাহিত শিলাখন্ড, নুড়ি, বালি, কাদা প্রভৃতি পদার্থ নদীর মোহনা কিংবা সাগর বা হ্রদের অগভীর অংশে সঞ্চিত হয়ে ব-দ্বীপ গঠিত হয়।
২) পললশঙ্কু সাধারণত তিনকোণা হাতপাখা আকৃতির হয়। এদের নীচের অংশ চওড়া কিন্তু উপরের অংশ ক্রমশ সরু হয়ে শঙ্কুর আকৃতি ধারণ করে ।
--- ২) ব-দ্বীপ হল নদীর মোহনায় মাত্রাহীন বাংলা ব -অক্ষরের এর মত ত্রিকোণাকার এক রকম দ্বীপ [∆] ।
৩) পললশঙ্কুর আয়তন ব-দ্বীপের তুলনায় কম ।
--- ৩) ব-দ্বীপ পললশঙ্কুর তুলনায় আয়তনে অনেক বড়ো হয় ।



প্রশ্ন:- ৮. বায়ু কোন কোন প্রক্রিয়ায় ক্ষয়সাধন করে ?

বায়ু প্রধানত তিনভাবে ক্ষয়কার্য করে, যথা- (ক) অবঘর্ষ [Abrasion], (খ) ঘর্ষণ [Attrition] (গ) অপসারণ [Deflation] ।

(ক) অবঘর্ষ[Abrasion]: বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভাসমান বালি, ছোটো ছোটো পাথরখন্ড, শক্ত কোয়ার্টজ কণা প্রভৃতির সঙ্গে ঘর্ষণে শিলাস্তর ক্ষয় পায়, এই প্রক্রিয়াকে অবঘর্ষ[Abrasion] বলে । অবঘর্ষের ফলে শিলাস্তরে আঁচড়ের মত গভীর দাগ বা মৌচাকের মতো অসংখ্য ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয় । কঠিন শিলাস্তরের চেয়ে কোমল শিলাস্তরে অবঘর্ষের পরিমাণ বেশি হয় ।

(খ) ঘর্ষণ [Attrition]: মরূভূমিতে প্রবলবেগে বায়ুপ্রবাহের ফলে বড়ো বড়ো পাথরগুলো পরস্পরের সঙ্গে ঠোকাঠুকি লেগে অথবা ঘষা খেয়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়ে অবশেষে ছোটো ছোটো গোলাকৃতি বালিকণায় পরিণত হলে তাকে ঘর্ষণ [Attrition] প্রক্রিয়া বলে । বায়ুর ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় মরুভূমি অঞ্চলে বড়ো বড়ো পাথরের খন্ডকে ক্ষয় করে বালিতে পরিণত করে ।

(গ) অপসারণ [Deflation]: প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে মরুভূমির শিথিল বালুকারাশি এক স্থান থেকে অপর স্থানে স্থানান্তরিত হলে তাকে অপসারণ [Deflation] বলা হয়।



প্রশ্ন:- ৯. বায়ু কী কী প্রক্রিয়ায় বহন করে ?

ক্ষয়কাজের পর বায়ুর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হল বহন প্রক্রিয়া । বায়ু তিনটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বহন কাজ সম্পন্ন করে থাকে, যথা- ১) ভাসমান প্রক্রিয়া, ২) লম্ফদান প্রক্রিয়া এবং ৩) গড়ানো প্রক্রিয়া ।

১) ভাসমান প্রক্রিয়া: প্রবল বায়ুপ্রবাহে মরু অঞ্চলের বালি, ধূলিকণা প্রভৃতি অতি সূক্ষ্মকণা বায়ুতে ভাসমান অবস্থায় একস্থান থেকে অন্য স্থানে বাহিত হয় । একে ভাসমান প্রক্রিয়া বলে ।

২) লম্ফদান প্রক্রিয়া: অপেক্ষাকৃত বড়ো ও ভারী শিলাখন্ডগুলো বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভূমিতে ঠক্কর খেতে খেতে সন্মুখে এগিয়ে চলে । এই প্রক্রিয়াকে লম্ফদান প্রক্রিয়া বলে ।

৩) গড়ানো প্রক্রিয়া: বড়ো বড়ো বালুকণা ও প্রস্তরখন্ড ভারী হওয়ায় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না । এগুলি মাঝে মাঝে প্রবল বায়ুপ্রবাহের টানে ভূমির সাথে গড়িয়ে গড়িয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বাহিত হয় । একে গড়ানো প্রক্রিয়া বলে।

বায়ুবাহিত বালুকণার লম্ফদান প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বালি মরুভূমিতে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বাহিত হয়।

descriptionতৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter - Page 2 EmptyRe: তৃতীয় অধ্যায়-- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর কাজ 3rd chapter

more_horiz
privacy_tip Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum