বাস্তব সংখ্যা ও এর শ্রেণিবিন্যাস -  class -IX

[You must be registered and logged in to see this link.]


সংখ্যা (Number)

সংখ্যা হলো একটি বিমূর্ত ধারণা। সংখ্যা প্রকাশের প্রতীকগুলিকে বলা হয় অঙ্ক।
বাস্তব সংখ্যার শ্রেণিবিন্যাস (Classification of Real Number)

বাস্তব সংখ্যার শ্রেণিবিন্যাস করলে যে সকল সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায় সেগুলো নিচে আলোচনা করা হল:
স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Number)

সকল ধনাত্মক অখন্ড সংখ্যা হল স্বাভাবিক সংখ্যা। যেমন:

1, 2, 3, 4, . . . . . .
মৌলিক সংখ্যা (Prime Number)

1 অপেক্ষা বড় যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যার 1 এবং ঐ সংখ্যাটি ছাড়া আর কোনো গুণনীয়ক নেই সেকল সংখ্যাই মৌলিক সংখ্যা।  যেমন: 2, 3, 5, 7  ইত্যাদি। ক্ষুদ্রতম মৌলিক সংখ্যা হল 2 ।

1-100 পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর মধ্যে মোট ২৫ টি মৌলিক সংখ্যা রয়েছে। ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনির সাহায্যে এটি খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়।
2, 3, 5 কেন মৌলিক সংখ্যা?

2, 3, 5 মৌলিক সংখ্যা। কারন:
2=1\times{2}
3=1\times{3}
5=1\times{5}

2, 3, 5  সংখ্যাগুলোর প্রতিটিরই 1 এবং ঐ সংখ্যা ছাড়া আর কোনো গুণনীয়ক নেই। তাই এই সংখ্যাগুলো মৌলিক সংখ্যা।

0 ও  1 ছাড়া সকল সংখ্যাই হয় মৌলিক সংখ্যা নয়তো যৌগিক সংখ্যা।
যৌগিক সংখ্যা

যে সংখ্যার দুইয়ের অধিক গুণনীয়ক আছে তাকে যৌগিক সংখ্যা বলে। যেমন 4, 6, 8, 21 ইত্যাদি যৌগিক সংখ্যা।
4, 6, 8, 21 কেন যৌগিক সংখ্যা?

4=1\times{4}=2\times{2} [4 এর গুণনীয়ক তিনটি 1, 2,4]

6=1\times{6}=2\times{3} [6 এর গুণনীয়ক চারটি 1, 2, 3, 6]

8=1\times{8}=2\times{4} [8 এর গুণনীয়ক চারটি 1, 2, 4, 8]

21=1\times{21}=3\times{7} [21 এর গুণনীয়ক চারটি 1, 3, 7, 21]

উল্লেখিত সংখ্যাগুলোর প্রত্যেকটিরই দুইয়ের অধিক গুণনীয়ক আছে। তাই সংখ্যাগুলো যৌগিক সংখ্যা।
1 মৌলিক সংখ্যাও নয় আবার যৌগিক সংখ্যাও নয়

1 মৌলিক সংখ্যা নয়। কারন:

1=1\times{1}

সকল মৌলিক সংখ্যার দুইটি ভিন্ন গুণনীয়ক থাকে। কিন্তু 1 এর গুণনীয়ক কেবলমাত্র একটি। 1 এর একমাত্র গুণনীয়কটি হল 1 । তাই 1 মৌলিক সংখ্যা হতে পারে না।

1 যৌগিক সংখ্যাও নয়। কারন:

সকল যৌগিক সংখ্যার দুইয়ের অধিক গুণনীয়ক থাকে। কিন্তু 1 এর গুণনীয়ক কেবলমাত্র একটি। তাই 1  যৌগিক সংখ্যা নয়।
পূর্ণসংখ্যা (Integer)

শূন্যসহ সকল ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অখন্ড সংখ্যা হল পূর্ণসংখ্যা। যেমন:

. . . . . . . -4, -3, -2, -1, 0, 1, 2, 3, 4, 5, . . . . . . . . . .
ভগ্নাংশ সংখ্যা (Fractional Number)

\frac{p}{q} আকারের সংখ্যাকে ভগ্নাংশ বলে। যেখানে, p, q পরস্পর সহমৌলিক। যেমন:

\frac{3}{5}, \frac{-2}{7}, \frac{11}{9} ইত্যাদি।

ভগ্নাংশগুলোর আবার শ্রেণি বিভাগ আছে। কিছু আছে প্রকৃত ভগ্নাংশ আবার কিছু আছে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।
প্রকৃত ভগ্নাংশ (Proper Fraction)

যে সকল ভগ্নাংশে লব হর অপেক্ষা ছোট সেগুলো প্রকৃত ভগ্নাংশ। যেমন:

\frac{3}{5}, \frac{-2}{7} ইত্যাদি।
অপ্রকৃত ভগ্নাংশ (Improper Fraction)

যে সকল ভগ্নাংশে লব হর অপেক্ষা বড় সেগুলো অপ্রকৃত ভগ্নাংশ। যেমন:

\frac{5}{3}, \frac{11}{7} ইত্যাদি।
মূলদ সংখ্যা (Rational Number)

\frac{p}{q} আকারের সকল সংখ্যাকে মূলদ সংখ্যা বলে, যেখানে, p, q পূর্ণসংখ্যা এবং q\ne{0} । যেমন:

3=\frac{3}{1}

\frac{3}{2}=1.5

\frac{11}{9}=1.222 . . . . . . . . ইত্যাদি।

সকল পূর্ণসংখ্যা এবং সকল ভগ্নাংশ মূলদ সংখ্যা।
মূলদ সংখ্যাকে দুইটি পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসাবে প্রকাশ করা যায়।
অমূলদ সংখ্যা (Irrational Number)

যেসকল সংখ্যাকে \frac{p}{q} আকারে প্রকাশ করা যায় না, যেখানে, p, q পূর্ণসংখ্যা এবং q\ne{0} সেকল সংখ্যাকে অমূলদ সংখ্যা বলে। পূর্ণবর্গ নয় এরূপ যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যার বর্গমূল হল অমূলদ সংখ্যা। যেমন:

যেমন:

\sqrt{2}=1.41421356. . . . . . . ,

\sqrt{5}=2.236067. . . . . . .,

\sqrt{\frac{5}{2}}=1.58113 . . . . . . . . .  ইত্যাদি।
অমূলদ সংখ্যাকে দুইটি পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসাবে প্রকাশ করা যায় না।
দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যা

মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাকে দশমিকে প্রকাশ করা হলে তাকে দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়। যেমন:

5=5.0

\frac{7}{2}=3.5

\frac{5}{3}=1.6666. . . . . .

\sqrt{3}=1.732 . . . . . . ইত্যাদ।
সসীম দশমিক ভগ্নাংশ

কোনো সংখ্যার দশমিক বিন্দুর পর অঙ্ক সংখ্যা সসীম হলে তাকে সসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে। যেমন:

5.25

3.527

1.5237 ইত্যাদি।
অসীম দশমিক ভগ্নাংশ

কোনো সংখ্যার দশমিক বিন্দুর পর অঙ্ক সংখ্যা অসীম হলে তাকে অসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে। যেমন:

1.6666 . . . . . . .

1.732 . . . . . . . ইত্যাদি।
অসীম আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বা পৌনঃপুনিক দশমিক ভগ্নাংশ

কোনো অসীম দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পর অঙ্কগুলো পুনরাবৃত্তি হলে তাকে অসীম আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বলে।  যেমন:

1.6666 . . . . . . . . .

2.5323232 . . . . . . . .

2.5\dot{3}\dot{2} ইত্যাদি।

উল্লেখ্য যে, অসীম দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পর যে অংশটুকু পুনরাবৃত্তি ঘটে তাকে আবৃত্ত অংশ বলে। এই অংশটুকুর উপর পৌনঃপুনিক বিন্দু দিয়েও সংখ্যাটিকে প্রকাশ করা যায়। যেমন:

2.5323232 . . . . . . . . এর পরিবর্তে 2.5\dot{3}\dot{2},

7.245245245 . . . . . . . . এর পরিবর্তে 7.\dot{2}4\dot{5} লিখা যায়।
অসীম অনাবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ

কোনো অসীম দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পর অঙ্কগুলো পুনরাবৃত্তি না হলে তাকে অসীম অনাবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বলে। যেমন:

1.632405027 . . . . . . . .

1.737733777333 . . . . . . . . .

2.050055000555 . . . . . . . . ইত্যাদি।
ধনাত্মক সংখ্যা (Positive Number)

শূন্য অপেক্ষা বড় সকল বাস্তব সংখ্যাকে ধনাত্মক সংখ্যা বলে। যেমন:

1, 2, \frac{1}{2}, \frac{3}{2}, \sqrt{2}, 0.25, 0.\dot{5}\dot{7}, 4.12304605 . . . . , 1.3333 . . . . . ইত্যাদি।
ঋনাত্মক সংখ্যা (Negetive Number)

শূন্য অপেক্ষা ছোট সকল বাস্তব সংখ্যাকে ঋনাত্মক সংখ্যা বলে।  যেমন:

-1, -2, -\frac{1}{2}, -\frac{3}{2}, -\sqrt{2}, -0.25, -0.\dot{5}\dot{7}, -4.12304605 . . . . , -1.3333 . . . . . ইত্যাদি।
অঋনাত্মক সংখ্যা (Non-negetive Number)

শূন্যসহ সকল ধনাত্মক সংখ্যাকে অঋনাত্মক সংখ্যা বলে। যেমন:

0, 1, 2, \frac{1}{2}, \frac{3}{2}, \sqrt{2}, 0.25, 0.\dot{5}\dot{7}, 4.12304605 . . . . , 1.3333 . . . . . ইত্যাদি।

সকল মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাই বাস্তব সংখ্যা। যেমন:

0,\pm{1}, \pm{2}, \pm{3},

\pm\frac{1}{2}, \pm\frac{3}{2}, \pm\frac{4}{3},

\sqrt{2}, \sqrt{3}, \sqrt{6},

2.75, 0.425, 1.3333 . . . . . . . . . ,

1.737733777333 . . . . . . . . . ,

2.5\dot{3}\dot{2} ইত্যাদি।